বিশ্বজমিন
ইউরোপ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু জ্বর
মানবজমিন ডেস্ক
১৩ জুন ২০২৪, বৃহস্পতিবার
এবার ইউরোপ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু জ্বর। ফ্রান্স, স্পেন এবং গ্রিস সহ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কমপক্ষে ১৩টি দেশে দেখা দিয়েছে এই জ্বরের জীবাণুবাহী টাইগার মশা। ধারণা করা হচ্ছে এর কারণে ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ছে এই জ্বর। ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল (ইসিডিসি) বলেছে, এই টাইগার মশা ছড়িয়ে পড়ার মতো উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করছে জলবায়ুর পরিবর্তন। জুলাইয়ের শেষের দিকে প্যারিসে হতে যাচ্ছে অলিম্পিক গেমস। সে জন্য কর্তৃপক্ষ এখনই পরিস্থিতি মনিটরিং করছে এবং কীটপতঙ্গকে ফাঁদে ফেলছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
ইসিডিসি সতর্ক করেছে যে, অলিম্পিক গেমস উপলক্ষে আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারী বৃদ্ধি পাবে ইউরোপে। এতে এই ডেঙ্গু সংক্রমণ আরও বৃদ্ধি পাওয়ার ঝুঁকি আছে। এ জন্য তারা জনগণকে পরামর্শ দিয়েছে বাগান বা ব্যালকনিতে কিছুতে জমে থাকা পানি ফেলে দিতে। কারণ, এমন জমাট পানিতে মশার বংশ বৃদ্ধি হয়। দরজা এবং জানালায় মশারোধী ব্যবস্থা ব্যবহারেরও পরামর্শ দেয়া হয়েছে। দুই দশক ধরে ইউরোপ জুড়ে মশা একটি ক্রমবর্ধমান হুমকি হয়ে উঠেছে। এশিয়ান টাইগার মশা, যার বৈজ্ঞানিক নাম অ্যায়ডেস আলবোপিকটাস- একে বিশ্বে মশার সবচেয়ে আগ্রাসী প্রজাতি হিসেবে ভাবা হয়। এই মশা ইউরোপের দক্ষিণ থেকে এখন উত্তরদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। ইসিডিসি বলেছে, এরই মধ্যে অস্ট্রিয়া, বুলগেরিয়া, ক্রোয়েশিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, হাঙ্গেরি, ইতালি, মালটা, পর্তুগাল, রোমানিয়া, স্লোভেনিয়া ও স্পেনে দেখা দিয়েছে এই মশা। বেলজিয়াম, সাইপ্রাস, চেচনিয়া, নেদারল্যান্ডস এবং স্লোভাকিয়ায়ও এই মশার উপস্থিতির কথা শোনা গেছে।
ডেঙ্গু জ্বর, চিকনগুনিয়া এবং জিকা ভাইরাসের মতো রোগের বিস্তার ঘটায় টাইগার মশা। সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত এসবের উপস্থিতি ছিল আফ্রিকা, এশিয়া ও আমেরিকার কিছু অংশে। আরেক রকম মশা এডিস এজিপটি- সৃষ্টি করে ইয়েলো ফিভার বা হলুদ জ্বর ও অন্যান্য রোগ। সাইপ্রাসে এই মশার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ইউরোপের অন্য অংশে এর বিস্তার নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। কারণ এই মশার মানুষকে কামড়ানোর প্রবণতা আছে এবং রোগ ছড়িয়ে দেয়ার সক্ষমতা আছে। ফ্লু’র মতো লক্ষণ দিয়ে শুরু হয় ডেঙ্গু। তারপর তা গুরুতর হয়ে পড়ে। কখনো কখনো প্রাণঘাতীও হয়। এর ব্যাপক বিস্তার বৃদ্ধি পেয়েছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে। গত বছর ফ্রান্সে বহু মানুষ, ইতালিতে চারজন এবং স্পেনে দু’জন এই রোগে সংক্রমিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ইউরোপের বেশির ভাগ সংক্রমণের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের লোকজনের চলাচল এবং ব্যবসার সম্পর্ক আছে। গত বছর প্রায় ৫০০০ এমন ঘটনা দেখা গেছে। ২০২৩ সালে স্থানীয় পর্যায়ে সংক্রমিত হয়েছেন ১৩০ জন। তার আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ৭১। আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন ইউরোপে অধিক পরিমাণে দেখা যাচ্ছে ওয়েস্ট নিল ভাইরাস। এটা মশা দ্বারা পরিবাহিত হয়।