ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নির্বাচিত কলাম

বেহুদা প্যাঁচাল

আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তান শ্রীলঙ্কার পর বৃটেন, কোন পথে বাংলাদেশের রাজনীতি

শামীমুল হক
১৩ জুলাই ২০২২, বুধবার
mzamin

রাজনীতির ক্ষেত্রে দেশ যেন দিন দিন পিছিয়ে যাচ্ছে। শিষ্টাচার, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সৌজন্যতা সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে যাচ্ছে রাজনীতি থেকে। দলের নেতার সঙ্গে আরেক দলের নেতানেত্রীর এখন আর আগের মতো হৃদ্যতা নেই। অথচ এক সময় দেশের রাজনীতিতে শিষ্টাচার উদাহরণ ছিল। নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের পরও বিএনপি আর আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে মধুর সম্পর্ক ছিল। কারও কারও সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল।


বিশ্ব রাজনীতি এখন টালমাটাল। মুহূর্তেই পাল্টে যাচ্ছে দৃশ্যপট। নিকট অতীতে পাকিস্তান আর শ্রীলঙ্কা এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ। গণতন্ত্রের সূতিকাগার বৃটিশ রাজনীতিতেও লেগেছে এর ঢেউ। অবশ্য এ অঞ্চলে শুরুটা হয়েছিল আফগানিস্তানে।

বিজ্ঞাপন
গত বছরের আগস্টে আফগানিস্তান দখলে নেয় তালেবানরা। সে সময় আফগানরা বিমানের ভেতরে জায়গা না পেয়ে বিমানের চাকা ধরে আফগানিস্তান ছাড়ছিল। এমনটি করতে গিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় কারও কারও। আফগানিস্তান দখলে নিতে তালেবানদের দুই দশক সহিংস লড়াই করতে হয়েছে। ২০০১ সালে ক্ষমতা হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়া তালেবান বিনা রক্তপাতে কাবুলের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। মার্কিন ও ন্যাটো সৈন্য প্রত্যাহারের শেষদিকে আফগানরা মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে আফগানিস্তান দখলে নেয়। ১৯৯০-এর দশকের শুরুতে উত্তর পাকিস্তানে তালেবান আন্দোলনের জন্ম হয়। এই আন্দোলন মূলত পশতুন অর্থাৎ পশতুভাষীদের প্রাধান্য। ধারণা করা হয়, এরা মাদ্রাসাগুলোয় সংগঠিত হতে থাকে। ১৯৯৬ সালে কাবুল ও কান্দাহার দখল করে তালেবানরা। এরপর প্রেসিডেন্ট বুরহানউদ্দিন রব্বানির সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে নিজেদের সরকার প্রতিষ্ঠা করে।

 আফগানিস্তানকে নিজেদের কব্জায় আনার পর সে দেশে কঠোর ইসলামী শাসন জারি করে তালেবানরা। মেয়েদের বোরকা পরা, মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে তারা। টেলিভিশনে সংগীত, সিনেমা নিষিদ্ধ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। এরপর ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর আন্তর্জাতিকভাবে তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ বিশ্ব থেকে সন্ত্রাসবাদ উচ্ছেদের অঙ্গীকার করেন। ওই সময় আফগানিস্তানের শাসক গোষ্ঠী তালেবানকে আল কায়েদার প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেয়ার আহ্বান জানান বুশ। তালেবানরা এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে। তারপর ২০০১ সালের ১৮ই সেপ্টেম্বর কংগ্রেস মার্কিন বাহিনীকে দেশটিতে পাঠানোর পরিকল্পনার অনুমোদন দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের শুরু করা অপারেশন নন ডিউরিং ফ্রিডম এ যোগ দেয় মিত্র যুক্তরাজ্যসহ ন্যাটো দেশগুলো। গত নির্বাচনে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। 

ঘোষণা অনুযায়ী প্রত্যাহার শুরু হয়। সর্বশেষ ২০২১ সালের ৩০শে আগস্ট  মার্কিন সৈন্য বাহিনী আফগান ত্যাগ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। এ সুযোগে তালেবানরা দখল করে নেয় আফগানিস্তান।  পাশের দেশ পাকিস্তান চলতি বছরের এপ্রিলে উত্তাল হয়ে উঠে। বলা নেই, কওয়া নেই হঠাৎই যেন বাজ পড়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মাথায়। বিরোধী দলের অনাস্থা ভোটে হেরে বিদায় নেন প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে। এর আগে অবশ্য নানা নাটকীয় ঘটনা ঘটে। ৩রা এপ্রিল পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব আনে। তবে সংবিধানের ৫ নম্বর অনুচ্ছেদের উল্লেখ করে ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি জানিয়ে দেন, বিরোধীদের আনা প্রস্তাব আসলে বিদেশি চক্রান্ত। ডেপুটি স্পিকারের এই পদক্ষেপের পরপর ইমরান খানের পরামর্শে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে দেন। ডেপুটি স্পিকারের দেয়া ওই আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন বিরোধীরা। টানা চার দিন চরম নাটকীয়তার পর ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব বাতিল ও পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্তকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা দেয় সুপ্রিম কোর্ট। 

এরপরই ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের অধিবেশন শুরু হয়। কিছুক্ষণ পর স্পিকার আসাদ কায়সার অধিবেশন মুলতবির সিদ্ধান্ত নেন। বেলা ২টা ৩০ মিনিটে অধিবেশন পুনরায় শুরু হয়। পরে জানানো হয়, ইফতারের বিরতির পর রাত ৮টার দিকে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হবে। তবে মধ্যরাতেও সেই অধিবেশন শুরু হয়নি। ইমরান খানের অনুগত হিসেবে পরিচিত স্পিকার আসাদ কায়সার ও ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি অনাস্থা প্রস্তাবের ভোট থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখতে রাতেই পদত্যাগ করেন। পদত্যাগের আগে অধিবেশনের সভাপতিত্বের দায়িত্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ এর এমপি আয়াজ সাদিকের কাছে ন্যস্ত করেন আসাদ কায়সার। রাত ১২টা ২ মিনিটে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর অধিবেশন শুরু হয়। হেরে যান ইমরান খান। বিদায়ের পর ইমরান নানা কর্মসূচি নিয়ে এখনো মাঠে রয়েছেন।  ওদিকে আগুন জ্বলে ওঠে শ্রীলঙ্কায়। দেশজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা।  বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ রাজাপাকসে আত্মগোপনে চলে যান। পরে পদত্যাগ করেন। 

নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেন প্রেসিডেন্ট। কিছুদিন চলে এভাবে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি প্রেসিডেন্টের। বিক্ষোভের মুখে প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া রাজাপাকসেও পদত্যাগ করেন। পদত্যাগপত্রে তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১৩ই জুলাই। তিনি সোমবারই এতে স্বাক্ষর করেছেন। স্বাক্ষর করা পদত্যাগপত্র সরকারের সিনিয়র এক কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনিই তা তুলে দেবেন স্পিকারের হাতে। আজ বুধবার গোটাবাইয়ার প্রেসিডেন্সির ইতি ঘোষণা করবেন স্পিকার মাহিন্দ ইয়াপা আবেওয়ার্ডেনে।  এর আগে ৯ই জুলাই জনরোষ যখন তার বাসভবনের বাইরে ফেটে পড়ছিল, তখন তিনি সেখান থেকে পালান।  ঋণে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার এখন বেহাল অবস্থা। এ জন্য অপরিকল্পিত উন্নয়নকে দোষারোপ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে শ্রীলঙ্কাকে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়েছে। শ্রীলঙ্কার শাষকদের এমন পরিস্থিতির মধ্যেই বৃটেনে নিজ দলের মন্ত্রীদের গণপদত্যাগ ও এমপিদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে পদত্যাগ করেছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ৭ই জুলাই সরকার প্রধানের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। 

তবে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাগ্রহণ না করা পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের দায়িত্বে থাকছেন জনসনই। এই পদত্যাগের ফলে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠছে, তেমনি তার দল কনজারভেটিভ পার্টিও বড় সংকটে পড়েছে। এর আগে এত বড় বিপদের মুখে কখনো পড়েননি জনসন। সমপ্রতি যৌন অসদাচরণের অভিযোগে অভিযুক্ত এমপি ক্রিস পিঞ্চারকে সরকারে নিয়োগ দেয়া নিয়ে সমস্যার শুরু। এর পরই দলের দুই মন্ত্রী তাদের পদ থেকে সরে দাঁড়ান। যদিও পিঞ্চারের বিরুদ্ধে যৌন অসদাচরণের অভিযোগ ওঠার পর গত সপ্তাহে কনজারভেটিভ পার্টি থেকে তার এমপি পদ বাতিল করা হয়। প্রধানমন্ত্রী জনসনও স্বীকার করেন যে, এমন একজন ব্যক্তি যে সরকারি চাকরির জন্য যোগ্য নন সেটা বুঝতে না পেরে তিনি ভুল করেছেন। ক্ষমতায় বসার পর থেকেই বিতর্ক পেছনে লেগে আছে জনসনের। শেষ পর্যন্ত বিতর্কের মধ্যেই তাকে পদত্যাগ করতে হয়েছে।  এবার আসা যাক বাংলাদেশ প্রসঙ্গে। রাজনীতির ক্ষেত্রে দেশ যেন দিন দিন পিছিয়ে যাচ্ছে। শিষ্টাচার, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সৌজন্যতা সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে যাচ্ছে রাজনীতি থেকে। দলের নেতার সঙ্গে আরেক দলের নেতানেত্রীর এখন আর আগের মতো হৃদ্যতা নেই। 

অথচ এক সময় দেশের রাজনীতিতে শিষ্টাচার উদাহরণ ছিল। নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের পরও বিএনপি আর আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে মধুর সম্পর্ক ছিল। কারও কারও সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে সরকার গঠন করে বিএনপি। এর কিছু দিন পর তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিয়ে হয়। সেই অনুষ্ঠানে দাওয়াতি প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ বিএনপি’র অনেক নেতা। রাতে বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে হাজির হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তাকে দেখেই সেদিন শেখ হাসিনা বলেছিলেন, আপনি এসেছেন। আমি খুব খুশি হয়েছি। অন্যদিকে খালেদা পুত্র তারেক রহমানের বিয়েতেও যান শেখ হাসিনা। এর কিছুদিন পর থেকেই দূরত্ব বাড়তে থাকে নেতায় নেতায়। দলে আর দলে। এরই ধারাবাহিকতায় দেখা যায় সেনাকুঞ্জের দরবারে দুই নেত্রী পাশাপাশি বসলেও দুই জন ছিলেন দুই দিকে তাকিয়ে। এ ছবিই বলে দিয়েছিল তাদের সম্পর্ক কোথায় গিয়ে ঠেকেছে। এ মুহূর্তে দুই দলের নেতারা যেন একে অন্যের শত্রু। 

অথচ স্বাধীনতা পরবর্তীকালে তাকালে আমরা কি দেখতে পাই?  ১৯৭৩ সালের ঘটনা। ভাসানী ন্যাপ-এর সভাপতি মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী তখন বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে। কট্টর সমালোচক। সরকারের বিরুদ্ধে তখন তিনি রাজপথে অনশন করেন। সেই অনশনও ভাঙান বঙ্গবন্ধু নিজেই। ভাসানীর মুখে শরবত তুলে দিয়ে সেদিনের অনশন ভাঙানোর কথা সবাই জানেন। আরেক ঘটনা। ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক তখন কাজী জাফর আহমদ। সামনে ঈদ। কাজী জাফর বহু খোঁজাখুঁজি করে মওলানা ভাসানীর জন্য তার পছন্দের পোশাক কিনেন। সঙ্গে ভাসানী পত্নীর জন্যও। ঈদের আগের দিন ভাসানীর বাড়িতে সেই পোশাক নিয়ে যান কাজী জাফর নিজে। পোশাক দেখে খুশি হন ভাসানী। আর মুখে বলেন, তোমার দেয়া পোশাক ঈদের দিন বিকালে পরবো। কথা শোনে কাজী জাফর তো থ’ মেরে যান। এত খোঁজাখুঁজি করে আনা পোশাক মওলানা ভাসানী পরবেন বিকালে তা তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না। জাফরের ইচ্ছা এই পোশাক পরে মওলানা ভাসানী ঈদের জামাতে যাবেন। একপর্যায়ে ভাসানীর কাছে বিকালে এই পোশাক পরার কারণ জানতে চান। ভাসানী তাকে জানান, ঈদের জামাতে যাবো মজিবরের পোশাক পরে। রাতেই মজিবরের পোশাক পেয়ে যাবো। তাজ্জব বনে যান কাজী জাফর। 

বলেন, বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে আপনি রাজপথে আন্দোলন করছেন। তার সরকারের সমালোচনা করছেন। আর তার দেয়া পোশাক পরে আপনি ঈদের জামাতে যাবেন? মওলানা ভাসানী তখন কাজী জাফরকে বলেন, শোন জাফর, শুধু কালকের ঈদই নয়, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে মজিবরের দেয়া পোশাক পরে আমি ঈদের নামাজ পড়ি। পাকিস্তান আমলে মজিবর জেলে থাকলেও তার স্ত্রী ঈদের পারিবারিক বাজারের সঙ্গে আমার পোশাক কিনতে ভুলতো না। যথারীতি ঈদের আগের রাতে সেই পোশাক আমার কাছে পাঠিয়ে দিতো সে। ১৯৯২ সালে ঢাকা ক্রীড়া সংস্থার মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে দেশের রাজনৈতিক নেতাদের শিষ্টাচার প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কাজী জাফর নিজে এসব কথা তার বক্তব্যে তুলে ধরেন।  অপরদিকে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি আ স ম আব্দুর রব নিজে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বলেছেন, ১৯৭৪ সালের দিকে আমরা বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। আন্দোলনে পুলিশি হামলায় আহত হয়ে পিজি হাসপাতালে ভর্তি হই আমি। হঠাৎ রাতে দেখি বঙ্গবন্ধু এসে হাজির। 

আমাকে দেখে বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘কি হইছে তোর। আমি বিষয়টি দেখতেছি।’ এমন কথাও প্রচলিত আছে, ফজলুল কাদের চৌধুরী ছিলেন মুসলিম লীগের নেতা। স্বাধীনতার পর তিনি কারান্তরীণ হন। বঙ্গবন্ধু তাকে জেলে চিঠি লিখতেন। টেলিফোন করে কথা বলতেন। খোঁজখবর রাখতেন। অন্যদিকে জেলে থাকা অবস্থায় মুসলিম লীগ নেতা সবুর খানের পরিবারের খোঁজখবর নিয়মিত রাখতেন বঙ্গবন্ধু। সেই সংস্কৃতি এখন আর নেই। এখন কে কার সম্পর্কে কতো কটূক্তি করতে পারেন তার প্রতিযোগিতা চলছে। নবম সংসদের দিকে তাকালে লজ্জায় মুখ লুকাতে ইচ্ছে করে। মহান জাতীয় সংসদে সংসদ সদস্যদের মুখের ভাষা শুনে জাতি লজ্জিত হয়েছে। কিন্তু এমপিরা করেছেন উল্লাস। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। এক এগারো থেকে শিক্ষা নিয়ে গঠিত সংসদেই ঘটেছে এসব ঘটনা। কিন্তু এক এগারোর পর বৃহত্তম দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র জাতীয় কাউন্সিলে উভয় দলের প্রতিনিধি উপস্থিত হয়েছিলেন। যা জাতির মনে আশার সঞ্চার করেছিল। আমাদের রাজনৈতিক নেতারা তা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। যার খেসারত দিতে হচ্ছে দেশবাসীকে। তারপরও ঈদ, নববর্ষে এক দল আরেক দলকে দাওয়াত দিতো। এখন সেটাও শোনা যায় না। সার্বিক দিক বিবেচনায় দেখা যায় কোথায় যেন এক বাধা। 

নির্বাচিত কলাম থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

নির্বাচিত কলাম সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status