বাংলারজমিন
মুক্তিপণ দিতে ব্যর্থ হলেই অপহরণ করা শিশুকে বিক্রি করে দিতো সুমাইয়া
স্টাফ রিপোর্টার
২১ মে ২০২৪, মঙ্গলবারসুমাইয়া আক্তার (৪৫)। দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে শিশু অপহরণ করাই তার পেশা। বিভিন্ন কৌশলে শিশুদের অপহরণের পর এক এলাকা থেকে নিয়ে চলে যায় আরেক এলাকায়। এরপর অভিভাবকের অবস্থা বুঝে চায় মুক্তিপণ। তার দাবিকৃত মুক্তিপণের টাকা দিতে কেউ অস্বীকার করলে বা ব্যর্থ হলেই অপহরণ করা শিশুকে অন্যের কাছে বিক্রি করে দেয় সুমাইয়া। গত শনিবারও পাউরুটি খাওয়ানোর কথা বলে রাজধানীর উত্তর বাড্ডা থেকে মোসাম্মৎ মরিয়ম নামে একটি দুই বছরের কন্যাশিশুকে অপহরণ করে সুমাইয়া। এরপর তাকে নিয়ে যায় চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ এলাকায়। সেখানে গিয়ে শিশুটির বাবা কমলাপুর রেলস্টেশনে দিনমজুর মো. মনুর কাছে দশ হাজার টাকা মুক্তিপণ চায় সুমাইয়া। ৬ ঘণ্টার মধ্যে টাকা না দিলে শিশুটিকে নদীতে ফেলে হত্যা করার হুমকিও দেয় সে। তাকে গ্রেপ্তারের পর এমনই সব চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) রাজন কুমার সাহা।
তিনি বলেছেন, শনিবার সকাল ১১টার দিকে শিশু মরিয়মকে অপহরণ করে শিশু বিক্রি চক্রের মূলহোতা সুমাইয়া। পরবর্তীতে শিশুটিকে চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানা এলাকায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে মুক্তিপণের জন্য টাকা দাবি করলে বাড্ডা থানায় লিখিত অভিযোগ করে শিশুটির পরিবার। তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে সুমাইয়ার অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে বাড্ডা থানা পুলিশ চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থেকে সুমাইয়াকে গ্রেপ্তার করে এবং মরিয়মকে উদ্ধার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমাইয়া দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে শিশুদের অপহরণ করে বিক্রি করে বলে স্বীকার করেছে। বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসিন গাজী বলেছেন, মরিয়মের বাবা মো. মনু কমলাপুর রেলস্টেশনে দিনমজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি তার স্ত্রী ও ২ বছর বয়সী শিশুকন্যাসহ উত্তর বাড্ডায় থাকেন। সুমাইয়া আক্তার তাদের প্রতিবেশী হওয়ায় উভয়ের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। সুমাইয়ার দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা ছিল মনু মিঞার দুই বছর বয়সী শিশু কন্যা মরিয়মকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করবে। সেই পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক মনুর শিশুকন্যা মরিয়মকে অপহরণ করে পালিয়ে যায় সুমাইয়া। খবর পেয়ে শিশুটিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে আমরা তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছি। এ ঘটনায় অপহরণকারী নারী সুমাইয়াকে চাঁদপুর থেকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
পাঠকের মতামত
I agree with অনিক মাহ মুদ।
এগুলিরে ক্রসফায়ারে দিয়ে দেয়াই ভালো। এগুলি ছাড়া পেয়ে আবার একই কাজ করে।