শেষের পাতা
নিউমার্কেট বসুন্ধরায় বেড়েছে কেনাকাটা
মরিয়ম চম্পা
৭ এপ্রিল ২০২৪, রবিবারঈদের বাকি মাত্র কয়েকদিন। এরইমধ্যে বেচাকেনা বেড়েছে রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিংমল ও নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন বিপণন বিতানগুলোতে। শনিবার সরজমিন এই চিত্র দেখা যায়। বসুন্ধরা সিটিতে রিচম্যান, আর্টিসান, দর্জিবাড়ি, ইনফিনিটি, ইয়োলো, জেন্টল পার্ক, আড়ং, টুয়েলভ ক্লথিং, আমব্রেলাসহ নামিদামি ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতেও ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। সপরিবারে বসুন্ধরায় এসেছেন সিনথিয়া মেহজাবিন। তিনি বলেন, ছেলে-স্বামী এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য পাঞ্জাবি ও শার্ট-প্যান্ট ক্রয় করতে এসেছেন। ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে কেনাকাটা করে অভ্যস্ত। এখানে দরদামের কোনো ঝামেলা নেই। আবার কিছু কিছু দোকানে পাঞ্জাবি ও ছেলেদের পোশাকের ওপর মিলছে বিশেষ ছাড়। মিরপুর থেকে আসা শিক্ষার্থী রায়হান বলেন, বন্ধুদের সঙ্গে এসেছি। আর্টিসানে নাগালের মধ্যে মোটামুটি দামে ভালো পোশাক পাওয়া যায়। এ ছাড়া কিছু নন-ব্যান্ডের দোকানে ব্যাংকের কার্ডের ওপর ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ছাড় চলছে। তাই নিজের জন্য দুটো শার্ট ও একটি পাঞ্জাবি ক্রয় করেছি। বসুন্ধরায় মেয়েদের পোশাকের অতিরিক্ত দাম নেয়ার অভিযোগ করেছেন এক ক্রেতা। এই নারীক্রেতা বলেন, পরিবারের সদস্যদের জন্য মনেরেখ শাড়িজসহ কয়েকটি দোকানে ঘুরে ঘুরে শাড়ি ও পোশাক ক্রয় করেছি। তবে বিগত বছরের তুলনায় এবার শাড়ির মূল্য কয়েকগুণ বেড়েছে বলে দাবি তার। ব্র্যান্ডের দোকানগুলোর প্রতিটি কাউন্টারে বিল দেয়ার জন্য ক্রেতাদের বড় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেলেও সাধারণ দোকানে ক্রেতার উপস্থিতি কম ছিল। এদিকে নিউমার্কেটে ঘুরে দেখা গেছে একই চিত্র। যাত্রাবাড়ী থেকে আসা শামীমা বলেন, নিউমার্কেট আমাদের মধ্যবিত্তের বাজার। এখানে দরদাম করে জামা-কাপড় কেনা যায়। কিন্তু এবার ঈদের শপিং করতে এসে ভিন্ন চিত্র দেখছি। ৭ বছরের মেয়ের জন্য করাচি ও আফগান ড্রেস ক্রয় করতে গিয়ে দোকানির সঙ্গে রীতিমতো ঝগড়া বেধে গেছে। শিশুদের এসব পোশাক ২৫শ থেকে ৩ হাজার টাকা করে বিক্রি করছে।
মোহাম্মদপুর থেকে এসেছেন হুসনেয়ারা সাথী। সাথী বলেন, শাশুড়ি-মা, ছোট ননদ সকলের জন্য কেনাকাটা করতে এসেছি। একই শাড়ির মূল্য ঈদের আগে ছিল ২ হাজার থেকে ২২শ টাকা। এখন সেই শাড়ি ৩৫শ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে। সাথীর সঙ্গে আসা শিক্ষার্থী লায়লা জানায়, এবার আফগানি পোশাক খুব বেশি চলছে। কিন্তু ছোটদের পোশাকের তুলনায় বড়দের পোশাকের মূল্য কয়েকগুণ বেশি নিচ্ছে। গাউসিয়ায় শিশুদের পোশাকের দোকানি আব্দুল আলিম বলেন, ২০ রমজানের পর থেকেই মূলত বিক্রি বেড়েছে। শিশুদের বাহারি নামে পোশাক চলছে এবার। বড়দের তুলনায় শিশুদের পোশাকের মূল্য কিছুটা বেশি। এদিকে গাউসিয়ায় মেয়েদের থ্রি-পিসের দোকানগুলোতে ভিড় দেখা গেলেও বিক্রি কম বলে জানান দোকানিরা। আপন আঙ্গিনার বিক্রেতা শাহজাদা বলেন, এ বছর ঈদ উপলক্ষে মেয়েদের সিল্ক, ভারতীয় কটন, পাকিস্তানি পোশাক বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে সেটা সংখ্যায় খুবই কম। পোশাকের দাম সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের দোকানে ১৫শ টাকা থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত থ্রি-পিস বিক্রি হচ্ছে। দাম কিছুটা বেশি হওয়ায় ক্রেতারা ঘুরে দেখে যাচ্ছেন। ক্রয় করছে কম। তিনি বলেন, ক্রেতাদের বড় অংশেরই জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে গেছে। এ কারণে হয়তো ঈদে তারা পোশাক, জুতাসহ অন্যান্য সামগ্রী কেনায় খরচ কমিয়ে দিয়েছেন। এদিকে নিউমার্কেটের ভেতরে ও বাইরের ফুটপাতের দোকান এবং দ্বিতীয় তলায় শিশু ও ছেলেদের পোশাকের দোকানগুলোতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।