ঢাকা, ২ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৫ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

খেলা

অপরিকল্পিত ঘরোয়া ক্রিকেটের ‘ভয়ঙ্কর পরিণাম’

স্পোর্টস রিপোর্টার
৪ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার
mzamin

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩২৮, ও ১৯২ রানে দুই টেস্টে হেরেছে বাংলাদেশ। সিরিজের শেষ ম্যাচে ইনিংস ব্যবধানে জয়ের সুযোগ ছিল সফরকারীদের। কিন্তু টাইগারদের ফলোঅনে পাঠানোর সুযোগ তারা নেয়নি। যদি সে সুযোগ নিতো তাহলে ইনিংস ব্যবধানেই হয়তো হারতো শান্তর দল! কারণ শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংসে করেছিল ৫৩১ রান।  আর টাইগাররা দু্‌ই ইনিংস মিলিয়ে করেছে ৪৯৬ রান। টেস্টে ৫ ইনিংস পর ৩শ’র বেশি রান করলো বাংলাদেশ। টেস্ট ক্রিকেটে পায়ের তলায় মাটিই যেন খুঁজে পাওয়া মুশকিল। শেষ ১২ ম্যাচের ৭টিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। সাফল্য বলতে তিনটিতে জয় ও একটি ড্র। অন্যদিকে ২০০০ সালে টেস্ট অভিষেকের পর থেকে ১৪২ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের ১৯টি জয় এবং ১৮টি ড্র। বাকি ১০৫টি হার। বলার অপেক্ষা রাখে না ২৫ বছরে যে উন্নতি করার কথা ছিল সাদা পোশাকে তার ধারে কাছেও যেতে পারেনি টাইগাররা। যতবার দল টেস্ট হারে ততো বারই আলোচনায় উঠে আসে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট। হ্যাঁ, দুটি চার দিনের আসর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) আয়োজন করলেও সেগুলো অপরিকল্পিত। যার ভয়ঙ্কর পরিনাম   বোধহয় বাংলাদেশের একের পর এক টেস্ট হার। জাতীয় দলের সেরা টেস্ট ব্যাটার ও সাবেক অধিনায়ক মুমিনুল হক সৌরভতো বলেই ফেলেছেন- ‘আমার কাছে মনে হয় যে আসলে সত্যি কথা শুনতেও খারাপ লাগবে আমাদের ডমেস্টিক ক্রিকেট আর ইন্টারন্যাশন্যাল টেস্ট ম্যাচ খেলা অনেক ডিফারেন্ট।’

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট হারের পর আরো একবার আলোচনায়  দেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট। কিন্তু ফলাফলটা আলোচনা-আর সমালোচনাতেই যেন আটকে থাকে। দেশের প্রথম শ্রেনির ক্রিকেট ধিরে ধিরে মান হারিয়েছে।  বেশির ভাগ সময়ই দেশের তারাকা ক্রিকেটাররা ৪ দিনের এই আসরে খেলতে চানানা। বিশেষ করে সাবিক আল হাসানকে তো প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দেখাই যায় না। যারা খেলে তাদেরও কোনও উন্নতি নেই। কারণ, যে উইকেট সেখানে খেলে ব্যাটাররা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চ্যালেঞ্জটা নিতে পারেন না। নেই কোনও স্পষ্ট পরিকল্পনা বা লক্ষ্য। চার দিনের জাতীয় ক্রিকেট লীগ (এনসিএল) বহু আগেই পিকনিক লীগ নাম ধারণ করেছে। এরপর প্রতিযোগিতা বাড়াতে ফ্রাঞ্চ্যাইজিদের নিয়ে তৈরি করা হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগ (বিসিএল)। কিন্তু ধীরে ধীরে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের নাম সরিয়ে নিয়েছে। বিসিএলে প্রাইম ব্যাংক, ওয়ালটন গ্রুপ ও ইসলামী ব্যাংক তিনটি দলের মালিকানা ছিল এই ফ্র্যাঞ্চাইজিদের হাতে। আরেকটি নিয়ন্ত্রণ করতো বিসিবি। করপোরেট প্রতিষ্ঠান গুলো এখানে কোন ভাবেই লাভবান হবে না জেনেও দেশের ক্রিকেটে অবদান রাখতে এগিয়ে এসেছিল। কিন্তু নুন্যতম সুযোগ সুবিধা তারা বিসিবি’র কাছ থেকে পায়নি। যেমন প্রাইম ব্যাংক দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে কখনোই সাকিব আল হাসানকে খেলানো যায়নি। নানা উসিলাতে তারকা ক্রিকেটাররা বিসিএল থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখতেন। বিসিবিও এতে রেখেছে নিরব ভূমিকা। ফলাফল ধীরে ধীরে সবগুলো করপোরেট প্রতিষ্ঠানই সরে দাঁড়িয়েছে সিসিএল থেকে। 

অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের আগেও ছিল পরিকল্পনার অভাব। টানা এক মাস সাদা বলে বিপিএল খেলা নিয়ে ব্যস্ত ছিল দলের ক্রিকেটাররা। সেখান থেকে লঙ্কার বিপক্ষে শুরু হয় টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে সিরিজ। এরপরই টেস্টের চ্যালেঞ্জ! সাদা বল থেকে দ্রুত লাল বলে নিজেদের আত্মস্থ করতে ক্রিকেটারদেরও সময় লেগেছে বেশ। তার ওপর দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটারই ছিল টেস্টে অনভিজ্ঞ। যাদের ওপর ভরসা ছিল ব্যাটিংয়ে সেই অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটস দাসরা ছিলেন ফর্মের বাইরে। দলের তরুণ মাহমুদুল হাসান জয়, জাকির হাসান, শাহাদাত হোসেন দিপুরা সাদা বলে বিপিএলে খেলেছেন, টেস্টের জন্য প্রন্তুত ছিলেন না। যার ফলাফল ব্যর্থ তারা। আর  ঘরোয়া ক্রিকেটে যে উইকেটে তারা প্রস্তুতি নেয় সেটির মান নিয়ে তো প্রশ্নের শেষ নেই।

দলের ভয়াবহ ব্যাটিং ব্যর্থতার বড় কারণটাও এটি। যে কারণে অধিনায়ক শান্ত মনে করেন ঘরোয়া ক্রিকেটের উইকেটেও বদল আনতে হবে। তিনি বলেন, ‘প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে উইকেটটা যদি আরেকটু বেটার হয়, যেরকম কন্ডিশনে আমরা খেলব চ্যালেঞ্জগুলা যদি ফেইস করতে পারি তাহলে ভালো। আমার কাছে স্টিল মনে হয় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আমরা যেরকম চ্যালেঞ্জ আমরা এখানে ফেইস করি সেরকম কোয়ালিটি ম্যাচ সেখানে আমরা খেলতে পারি না আমার কাছে মনে হয়। আমাদের প্লেয়ারদের যদি আরও ম্যাচ করে খেলতে পারি যে আন্তর্জাতিকের সাথে তাহলে অবশ্যই ভালো হবে। যত বেশি ম্যাচ খেলব কিছু না কিছু তো উন্নতির জায়গা থাকেই।’

 

খেলা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

খেলা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status