প্রবাস
পোল্যান্ডে বাংলাদেশি কমিউনিটির বসন্ত বরণ ১৪৩০ এবং পিঠা উৎসব
অনলাইন ডেস্ক
(৮ মাস আগে) ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, সোমবার, ৭:৪৯ অপরাহ্ন
বাংলাদেশি কমিউনিটি পোল্যান্ডের উদ্যোগে পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে (Polna 7A, 00-625 Warszawa) অনুষ্ঠিত হয়েছে বসন্ত বরণ ১৪৩০ এবং পিঠা উৎসব। ঋতুরাজ বসন্তকে স্বাগত জানাতে এবং হাজার বছরের বাঙালি ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে হরেক রকমের পিঠার পসরা সাজাতে, এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। হরেক রকমের পিঠার স্বাদ নিতে এবং উৎসব উপভোগ করতে পোল্যান্ডের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন সংস্কৃতিপ্রেমীরা। এই পিঠা উৎসবের মধ্যদিয়ে বসন্তের তিনদিন আগেই শুরু হয়ে যায় ফাল্গুনের আমেজ। অনুষ্ঠানটি পরিণত হয় পোল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশের মিলন মেলায়।
কবির ভাষায়- ‘ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক আজ বসন্ত’। গাছে গাছে পলাশ, শিমুল, হিজল, তমাল, কৃষ্ণচূড়াসহ রংবেরঙের ফুল ফুটে জানান দিচ্ছে ঋতুরাজ বসন্তের আগমনী বার্তা। ঋতুরাজকে স্বাগত জানাতে প্রকৃতির আজ এবর্ণিল সাজ। বসন্তের এই আগমনে প্রকৃতির সঙ্গে তরুণ হৃদয়েও লেগেছে দোলা। সব কুসংস্কারকে পেছনে ফেলে বিভেদ ভুলে নতুন কিছুর প্রত্যয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা নিয়ে বসন্তের উপস্থিতি। ফাগুনের মাতাল হাওয়া দোলা দিয়েছে বাংলার নিস্বর্গ প্রকৃতিতে। বাংলার প্রকৃতির সেই দোলা এসে লেগেছে এই দূর পরবাসে পোল্যান্ডের বাঙালিদের হৃদয়ে। বাসন্তি রঙে সেজে, নেচে, গেয়ে পোল্যান্ডেরা বাঙালি বরণ করেছে ঋতুরাজ বসন্তকে।
বসন্ত উৎসব কেবল উৎসবে মেতে ওঠাই নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলার গৌরবময় ঐতিহ্য, বাঙালিসত্তা। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফারহানা জাহান। উনি আমন্ত্রিত অতিথিদের শুভেচ্ছা জানান এবং এই উয্যাপনের প্রতিপাদ্য তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন ফারহান হাসিন আর কাশফিয়া সারণী দম্পতি। অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ এবং পোল্যান্ডের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন ইয়াসমিন জালাল, ফৌজিয়া ইসলাম মোহনা, শিউলি সরকার, রিম, আরমান নাইম, ইয়াহিয়া ফাহিম, সামি আতিফ শাওন এবং পার্থ বড়ুয়া। বসন্তের আবৃতি করেন আনিকা জেরিন চৌধুরী। নৃত্য পরিবেশন করেন তানিয়া আফরিন, আদ্রিয়ানা মজুমদার, ইশরাত ই আনোয়ার বৃষ্টি, অনুরাধা রয়, শুভজিৎ ধর চৌধুরী, মনীষা রাবাত এবং মমতা পুন্ডির।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে ভাবীদের নিয়ে আসা পিঠা অনুষ্ঠানের সৌন্দর্য হাজার গুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। হরেক রকমের মুখরোচক পিঠা দিয়ে মেতে উঠে পিঠা উৎসব। ভাপা, পাটিসাপটা, দুধপুলি, মালাইপুলি, চিতই, ডিম পিঠা, চিকেন পিঠা,মালপোয়া, ফুল পিঠা, পাকানপিঠা ও বিবিখানা, চটপটি, রসমালাই, জিলাপী, রসগোল্লা সহ ঘরে বানানো হরেক রকমের পিঠা প্রদর্শন করা হয় উৎসবে। মুখরোচক এসব পিঠার ঘ্রাণে পোল্যান্ডের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাসন্তী সাজে নিজেদের সাজিয়ে ছুটে আসেন নারী পুরুষ ও শিশু কিশোরেরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দূতাবাস কর্মকর্তা জনাব কাজী মুনতাসীর মুর্শেদ। অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন তানিয়া আফরিন, ইয়াসমিন জালাল, গাজী লিমন, ফৌজিয়া ইসলাম, ফারহানা জাহান, গোলাম বায়েজিদ রবিন, মোঃ ফরহাদ উদ্দিন, রিম, তাপস বড়ূয়া, পার্থ বড়ুয়া, আরমান নাইম, কামরুল হুদা, শচীন পাল, সজীব দাস, নয়ন
আহমেদ এবং সজল আহমেদ সহ আরো অনেকেই। তরুণ প্রজন্মের আয়োজকদের পরামর্শে ছিলেন মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান, মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, আমিনুল ইসলাম চকদার সাকু, ইমরান হাসান, আফজাল হোসেন, কামরুল হাসান এবং লুৎফুর রহমান।
অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান এলিয়ান এফেয়ার্স, আলাক কাবাব, আল খলিফা কাবাব,বাংলা ডাইন, চিলি কাবাব, দারুল ফুড, দারুল কাবাব, ডায়মন্ড কাবাব, নেহার কাবাব, পিস্নে ব্যাকারী, রহমান ফুড, শপ এশিয়া, সাদ ডোনার, শেখ কাবাব, সিক্রেট স্পাইস রেস্তোরাঁ এবং শাহী বাজার ও হালাল মাংস। আয়োজকেরা আশা পোষণ করেন যে এমনিভাবে বাংলাদেশিরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এইধরণের মিলনমেলায় অংশগ্রহণ করবেন।পোল্যান্ডের বুকে গড়ে উঠবে বাংলাদেশিদের একটি সুন্দর কমিউনিটি।