ঢাকা, ১ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৪ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

প্রবাস

কারী লাইফ অ্যাওয়ার্ডস ও গালা ডিনার

যুক্তরাজ্যের সেরা শেফ ও রেস্টুরেটার্সদের সম্মাননা

অনলাইন ডেস্ক

(১ বছর আগে) ১৭ অক্টোবর ২০২৩, মঙ্গলবার, ১:৪১ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ২:০৬ অপরাহ্ন

mzamin

বরাবরের মতো চোখ ধাঁধানো নান্দনিক আয়োজনে যুক্তরাজ্যের বাছাই করা সেরা শেফ ও রেস্টুরেটার্সদের হাতে অ্যাওয়ার্ডস তুলে দিয়েছে কারী লাইফ মিডিয়া গ্রুপ।  রোববার (১৫ অক্টোবর) সেন্ট্রাল লন্ডনের অভিজাত লন্ডন ম্যারিয়োট হোটেলের সুপরিসর ‘ওয়েস্টমিন্সটার বল রুম’এ অনুষ্ঠিত হয় কারী লাইফ অ্যাওয়ার্ডস ও গালা ডিনার-২০২৩।

এতে পাঁচটি বিভাগে মোট ৪৪টি অ্যাওয়ার্ডস প্রদান করা হয়। এরমধ্যে রয়েছে, কারী লাইফ এডিটর চয়েস রেস্টুরেন্টস অ্যাওয়ার্ডস, কারী লাইফ বেষ্ট রেষ্টুরেন্ট অ্যাওয়ার্ডস, কারী লাইফ বেষ্ট শেফ অব দ্য ইয়ার, বেষ্ট টেকওয়ে অব দ্য ইয়ার এবং কারী লাইফ রেকমেন্ডেড রেস্টুরেন্ট-২০২৩।

 

এটি ছিলো ‘কারী লাইফ অ্যাওয়ার্ডস ও গালা ডিনার’ এর ১৪তম আয়োজন। কারী ইন্ডাস্ট্রির অর্জন, সম্ভাবনা ও সংকট  নিয়ে নিয়মিত প্রকাশনা ও বিভিন্ন দেশে ‘বৃটিশ কারী ফেস্টিভ্যাল’ আয়োজনের মাধ্যমে কারী লাইফ ইতিমধ্যে বৃটিশ কারী ইন্ডাস্ট্রির বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য মূখপত্র হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাজ্যের কালিনারি ক্যালেন্ডারের বার্ষিক অন্যতম সেরা আয়োজন হিসেবে স্থান করে নিয়েছে ‘কারী লাইফ অ্যাওয়ার্ডস’।

যুক্তরাজ্যে কারী ইন্ডাস্ট্রির প্রেসটিজিয়াজ এই অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানে এবারও রেস্টুরেটার্স ও খাদ্যরসিকদের উপস্থিতি ছিলো দেখার মতো। পাঁচ শতাধিক অতিথির এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন বৃটিশ রাজনীতিক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গণের স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গ। যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসেন কারী ইন্ডাষ্ট্রির শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ, রেস্টুরেন্ট মালিক ও শেফরা।বিকাল সাড়ে ৪টা থেকেই শুরু হয় অতিথিদের আগমন। সন্ধ্যা ৬টা হতেই অতিথিদের জমজমাট উপস্থিতিতে ভরে উঠে অনুষ্ঠানস্থল। রকমারী ও সুস্বাধু ক্যানোপির সাথে চলে অতিথিদের ছবি তোলা ও আড্ডা। ৭টায় শুরু হয় মূল আয়োজন।

যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে বছরে প্রায় চার বিলিয়ন পাউন্ডের অবদান রাখে কারী ইন্ডাস্ট্রি। বিশাল এই রেস্টুরেন্ট সেক্টরের সেরাদের সম্মাননা জানানোর অনুষ্ঠানে অতিথিদের মধ্যে ছিলেন কনফেডারেশন অব বৃটিশ ইন্ডাস্ট্রিজ (সিবিআই) এর সাবেক প্রেসিডেন্ট, হাউজ অব লর্ডসের সদস্য লর্ড করণ বিলিমোরিয়া। লন্ডন বিষয়ক উপ-মন্ত্রী এবং টেক ও ডিজিটাল ইকোনোমি বিষয়ক পার্লামেন্টারি আণ্ডার সেক্রেটারি পল স্কালি এমপি। ওয়ার্থিং ওয়েস্টের এমপি ফাদার অব দ্য হাউস অব কমন্স স্যার পিটার বোটোমলি, সেন্ট অস্টেল অ্যান্ড নিউ কি আসনের এমপি, জুনিয়র লর্ড কমিশনার স্টীভ ডাবল এবং শ্যাডো ইনভেস্টমেন্ট ও স্মল বিজনেস মন্ত্রী, বেথনাল গ্রীন অ্যান্ড বো আসনের এমপি রুশনারা আলী।  স্যার বটমলি ও ষ্টিভ ডাবল এমপি তাদের এলাকার দুটি অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী ব্যবসাকে সমর্থন জানানোর জন্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। অনুষ্ঠানটি চমৎকারভাবে উপস্থাপন করেন মুলধারার টিভি আইটিভির নিউজরিডার লুকরেসিয়া মিলারিনি।

 

মঞ্চের আয়োজনের শুরুতে অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন কারী লাইফ ম্যাগাজিনের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ নাহাস পাশা।  কারী লাইফ অ্যাওয়ার্ডসের ১৪তম আয়োজনটি একটি বিশেষ কারণে গুরুত্বপূর্ণ। চলতি বছর কারী লাইফ ম্যাগাজিন প্রকাশনার ২০ বছর পূর্ণ হয়েছে। তিনি বলেন, তিনি এবং তার ভাই সৈয়দ বেলাল আহমদ ১৯৭০ এর দশকে যুক্তরাজ্যে আসার পর কারীর প্রতি বৃটিশদের আগ্রহের মাত্রা দেখে অবাক হয়েছিলেন। ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে কারীর এই নতুন আবাস খুঁজে পাওয়ার বিষয়টিকে তারা উদযাপন ও সামনে এগিয়ে নেয়ার আকাঙ্খা থেকে দুই ভাই মিলে ২০ বছর আগে কারী লাইফ ম্যাগাজিন শুরু করেন। এরপর ২০০৯ সালে শুরু করেন ‘কারী লাইফ অ্যাওয়ার্ডস’।

তিনি বলেন, এখন ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলংকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ বৃটিশ কারীর কদর করেন। কারণ বৃটিশ কারী একটি স্বতন্ত্র স্বাদ ও  বৈশিষ্ট্য অর্জন করেছে এবং এর বৈচিত্র অব্যাহতভাবে বিকশিত হচ্ছে। 

রেস্টুরেন্ট সেক্টরের নানা চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে সৈয়দ নাহাস পাশা বলেন, রেস্টুরেন্ট সেক্টরের ন্যায্য দাবির পক্ষে কারী লাইফ টিম অব্যাহতভাবে ক্যাম্পেইন চালিয়ে যাবে।     

কোবরা বিয়ারের স্বত্তাধিকারী করণ বিলিমোরিয়া বলেন, করোনার ধকল কাটিয়ে উঠার আগেই শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ফলে শুরু হয় মূল্যস্ফীতির চাপ। এর উপর আছে কর্মীসংকট। কিন্তু এত চ্যালেঞ্জ স্বত্বেও এগিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাজ্যের কারী সেক্টর। তিনি বলেন, রেস্টুরেন্ট পরিচালনা কেবল একটি ব্যবসা নয়, এটি নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের বাহন। আবার অনেকর কাছে এটি পারিবারিক ঐতিহ্য। তিনি রেন্টুরেন্টগুলোর বিজনেস রেইট কমানোর জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান। লর্ড বিলি মোরিয়া বলেন, বৃটেনের অর্থনীতি ষষ্ঠ অবস্থানে হতো না ইমিগ্র্যান্টদের অবদান ছাড়া। তিনি ইমিগ্রেশনের সংখ্যা বেড়ে গেছে বলে নেতিবাচক প্রচারণা বন্ধের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান। রেষ্টুরেন্ট ও হসপিটালিটি সেক্টরসহ দেশের বিভিন্ন সেক্টরে কর্মী সংকটের দিকে নজর দেয়ারও আহবান জানান তিনি।  

বৃটিশ কারী ইন্ড্রাস্ট্রির মুখপত্র হিসেবে ‘কারী লাইফ ম্যাগাজিনের বিশেষ ভূমিকার প্রশংসা করে করণ বিলিমোরিয়া বলেন, তাদের কল্যাণে এখন ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলংকাসহ বিভিন্ন দেশে ‘বৃটিশ কারী ফ্যাস্টিভ্যাল’ হচ্ছে। বৃটিশ কারীর বৈচিত্র্যের কথা তারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরছেন। বিষয়টিকে অত্যন্ত চমৎকার বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

গত বছরের শেষদিকে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘বৃটিশকারী ফ্যাস্টিভ্যাল’ উপলক্ষে কারী লাইফ টিমের সঙ্গে বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করেন বিলিমোরিয়া। তিনি বলেন, নানা চ্যালেঞ্জ স্বত্বেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। 

লন্ডনবিষয়ক উপ-মন্ত্রী এবং টেক ও ডিজিটাল ইকোনোমি বিষয়ক পার্লামেন্টারি আণ্ডার সেক্রেটারি পল স্কালি এমপি বলেন, হসপিটালিটি বিষয়ক সমস্যা সমাধানের জন্য কোভিডকালীন সময়ে হসপিটালিটি কাউন্সিল চালু করা হয়। এখন সরকার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও এর প্রতিনিধিদের নিয়ে একসঙ্গে সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করা হয়। এটাই সমস্যা সমাধানে সমানে এগিয়ে যাওয়ার পথ এবং আমাদের মিলেমিশে কাজ করতে হবে। তিনি ইন্ডাস্ট্রির উদ্বেগের বিষয় যাতে সরকার শুনে সেটা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন। 

অনুষ্ঠানের প্রধান স্পন্সর ‘জাস্ট ইট’এর প্রতিনিধি মাট হপার বলেন, মূল্যস্ফীতিসহ জীবিকা নির্বাহের এই কঠিন সময়ে রেস্টুরেন্টগুলো বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তাই ‘জাস্ট ইট’ রেস্টুরেন্ট সেক্টরের বিজনেস রেইট অন্তত কয়েক বছরের জন্য ফ্রিজ রাখতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে অব্যাহতভাবে ক্যাম্পেইন করছে।      

কারী লাইফ ম্যাগাজিনের এবারের আয়োজনও ছিলো নতুনত্বে ভরা। নজরকাড়া সাংস্কৃতিক আয়োজনের পাশাপাশি ছিলো সুস্বাদু নানা পদের খাবার। অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীদের মঞ্চে নেয়া হয় বিশেষ মর্যাদায়।  পুরো অনুষ্ঠানটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

এবারের আয়োজনে হেডলাইন স্পন্সর ছিলো কাস্টোমারের কাছে রেস্টুরেন্টের খাবার পৌঁছে দেয়ার সেবা প্রদানকারী বড় প্রতিষ্ঠান ‘জাস্ট ইট। আরো সহযোগিতায় ছিলো ইউনিসফট, ওয়ার্ক পারমিট ক্লাউড, কোবরা বিয়ার ও ট্রেভেল লিংক। 

 

প্রবাস থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

প্রবাস সর্বাধিক পঠিত

১০

ঐকমত্য কমিশনে মতামত জমা শেষে সালাহ উদ্দিন আহমেদ/ সংবিধানে ৭১’র সঙ্গে ২৪’কে একই কাতারে আনা সমুচিত নয়

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status