শেষের পাতা
মৌলভীবাজারে সংকটে বানভাসিরা
স্টাফ রিপোর্টার, মৌলভীবাজার থেকে
২৩ জুন ২০২২, বৃহস্পতিবারমৌলভীবাজারে ডুবছে নতুন নতুন এলাকা। হাকালুকি ও কাউয়াদিঘি হাওর এলাকায় পানি বাড়লেও কিছুটা কমেছে মনু ও ধলাই নদীর। তবে কুশিয়ারাসহ অন্যান্য নদীর পানি বাড়ছে। এমতাবস্থায় অর্ধাহারে অনাহারে বানভাসিরা। বন্যায় নিঃস্ব হওয়া মানুষগুলোর এখন কেবল ত্রাণই ভরসা। চরম উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় এ জেলার দুর্ভোগগ্রস্ত ৪ লক্ষাধিক মানুষ। এলাকায় নতুন আগন্তুক কাউকে দেখলে ত্রাণের জন্য ছুটে আসছেন। পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা না থাকায় বন্যাদুর্গত বিভিন্ন এলাকায় তোপের মুখে পড়ছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বড়লেখা, কুলাউড়া, জুড়ী, মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগরের অধিকাংশ মানুষ। বানের পানিতে তলিয়ে গেছে সহায় সম্বল। সবকিছু হারিয়ে এখন নিঃস্ব হাওর পাড়ের বাসিন্দারা। গেল ক’দিন থেকে থামছে না উজানের পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টি। বানের পানি কমারও কোনো লক্ষণ নেই। হাকালুকির হাওর তীরবর্তী জেলার কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার প্রায় ২৫টি ইউনিয়নের তিন শতাধিক গ্রাম এখন বন্যাকবলিত। এ ছাড়া মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগরের ৩০টিরও অধিক গ্রাম। এসব এলাকায় বন্যা যত দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে ততই বাড়ছে দুর্ভোগগ্রস্ত মানুষের অসহায়ত্ব। ঘরবাড়িহারা মানুষগুলো ইতিমধ্যেই ঠাঁই নিয়েছেন অন্যত্র।
নিজের আত্মীয়স্বজন কিংবা আশ্রয়কেন্দ্রে। সেখানেও তারা পানিবন্দি। নানা সমস্যা ও সংকটে ওই আশ্রিত স্থানেও চরম বিড়ম্বনা। ঘরে চাল নেই। নেই নুন, মরিচ ও তেলও। রান্নার উপকরণ আর অনুষঙ্গ সবই অপর্যাপ্ত। তাই অনাহারে অর্ধাহারে কাটছে তাদের রাত-দিন। বানের পানিতে সবই তলিয়ে যাওয়ায় নেই আয়-রোজগার। ঘরের উপার্জনক্ষম লোকজনও কাটাচ্ছেন কর্মহীন সময়। এমন দুর্দিনে কপর্দকশূন্য এ মানুষগুলো চরম অসহায়। তাই এখন ত্রাণই তাদের একমাত্র ভরসা। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা। ত্রাণের জন্য প্রতীক্ষা। ত্রাণ পেলে আহার। না পেলে অভুক্ত থাকছেন তারা। দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কবলে পড়তে যাচ্ছেন হাকালুকি হাওর তীরের মানুষ। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত ১০১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এ পর্যন্ত ২১০ টন চাল, ১৭ শ’ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ১৮ লাখ ২০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।