বিশ্বজমিন
স্ত্রী হিসেবে কনে ‘কিনে’ ১০ বছরের জেল
মানবজমিন ডেস্ক
(১ বছর আগে) ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, রবিবার, ১২:১২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৬ পূর্বাহ্ন

স্ত্রী হিসেবে এক কনেকে ‘কেনার’ দায়ে ভারতের একটি আদালত ৫৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে ১০ বছরের জেল দিয়েছে। একই মামলায় ওই বালিকাকে পাচারের সঙ্গে জড়িত অন্য সাতজনকেও জেল দিয়েছে আদালত। এর মধ্যে রয়েছে বালিকাটির গ্রাম দাদ্রির একজন প্রতিবেশী। প্রতিজনকে চার বছর করে কঠোর শ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া।
এতে বলা হয়, ২০২১ সালের ২৬শে ডিসেম্বর বাড়ির বাইরে থেকে ১৮ বছর বয়সী ওই বালিকাকে অপহরণ করে হরিয়ানার বাসিন্দা যশবীর সিংয়ের কাছে বিয়ের ‘পাত্রী’ হিসেবে বিক্রি করে দেয়া হয় ৭০ হাজার রুপিতে। স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর চবনপাল ভাটি বলেন, বালিকাটির মা একটি অপহরণ মামলা করার পর পুলিশ এ বিষয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করে। দুই সপ্তাহ পরে তাকে সোনিপাতের মাহারা গ্রামে যশবীর সিংয়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। মামলাটি যায় প্রটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস বিষয়ক কোর্টে (পোকসো কোর্ট)। কারণ, ওই বালিকার মা দাবি করেছিলেন অপহরণের সময় তার কনের বয়স ছিল ১২ বছর। বিচার চলাকালে পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে বালিকাটির বয়স ১৮ বছর নির্ধারণ করা হয়। ফলে পোকসো আইনের আওতার বাইরে নেয়া হয় এই মামলা।
চবনপাল ভাটি বলেন, এই পাচার চক্রের মূল এজেন্ট হলো প্রতিবেশী গুড়িয়া ওরফে নাজরিন। গুড়িয়াকে ওই বালিকা বলেছে, সে সুনীল নামে একজন পুরুষকে ভালবাসে। অভিযুক্তদের মধ্যে এই সুনীলও আছে। কিন্তু সুনীলের সঙ্গে এই সম্পর্কের বিরুদ্ধে ওই বালিকার মা। এক্ষেত্রে তাকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেয় গুড়িয়া। প্রতিশ্রুতি দেয় সুনীলের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ করিয়ে দেবে। এই প্রতিশ্রুতিতে ২০২১ সালের ২৬শে ডিসেম্বর ওই বালিকাটিকে গুড়িয়া নিয়ে যায় গাজিয়াবাদে। সেখানে অন্য দুই অভিযুক্ত পুজা ও কিরণ তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়। এরপর এই তিন নারী ওই বালিকাটিকে হরিয়ানা নিয়ে যায়। সেখানে যশবীরের কাছে বিক্রি করে দেয়।
বিচারকালে আদালতের কাছে ওই বালিকা বলেছে, তাকে অপহরণের দিনে গুড়িয়া তার কাছে গিয়েছিল এক বোতল পানি নিয়ে। তার দাবি, ওই পানিতে চেতনানাশক মিশানো ছিল। এর কয়েক ঢোক পান করার পর তিনি নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। তিনি বলেন, গুড়িয়া তাকে নিয়ে যায় বিজয়নগরে। পরের দিন গুড়িয়া, পুজা, কিরণ তাকে হরিয়ানায় একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। এই বাড়িটির মালিক ভুপেন্দ্র নামে একজন। সেখানে আরও কিছু মানুষ যোগ দেয়।
ওই যুবতীর ভাষায়- আমার বিরোধিতা সত্ত্বেও জোর করে যশবীর আমাকে বিয়ে করে। তারপর যশবীর আমাকে সোনিপাতে তার বাড়ি নিয়ে যায়। একটি রুমের মধ্যে তালাবদ্ধ করে রাখে। এর দু’সপ্তাহ পরে মাকে ফোন করার একটা সুযোগ পেয়ে যাই। তার ধারাবাহিকতায় আমাকে উদ্ধার করা হয়।
তার অভিযোগ, অভিযুক্তরা তাকে যৌন অবমাননা করেছে। তবে মেডিকেল পরীক্ষায় তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যশবীরের আইনজীবি কিষাণ লাল পারাশার আদালতে দাবি তোলেন যে, মেয়েটি নাবালিকা নয়। তাই পোসকো আইন এক্ষেত্রে প্রত্যাহার করা উচিত।