বাংলারজমিন
সরাইলে পিডিবি’র প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
২৮ নভেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবারব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পিডিবি’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আতিকুল্লাহর অনিয়ম দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন দপ্তরের কর্মচারীরা। প্রতিকার আর বদলি দাবি করে ২৫ স্থায়ী ও ১৫ অস্থায়ীসহ মোট ৪০ জন কর্মচারী নির্বাহী প্রকৌশলীর (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। প্রথমে একটু সিরিয়াস হলেও পরবর্তীতে রহস্যজনক কারণে থেমে যান নির্বাহী প্রকৌশলী। এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এই অভিযোগের বিষয়ে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন না তিনি। এতে ক্রমেই ক্ষুব্ধ হচ্ছেন দপ্তরে কর্মরত কর্মচারীরা।
আতিকুল্লাহর আচার-আচরণ ও খারাপ ব্যবহারের বিষয়ে একাধিকবার মৌখিক অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। লিখিত অভিযোগ ও একাধিক কর্মচারী সূত্র জানায়, যোগদানের পর থেকেই গ্রাহকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার যেন তার নিয়মে পরিণত হয়েছে। পরবর্তীতে নানা অনিয়ম দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েন তিনি। মিটার পরিবর্তন গ্রাহকদের অধিকার। আর এ কাজে তাদের সহায়তা করা অফিসের সকলের দায়িত্ব। তিনি ৫০০ টাকা ঘুষ না দিলে পোস্টপেইড মিটার পরিবর্তনের কাজ করেন না। গ্রাহকরা তার থেকে মিটার না নিলে তিনি মিটার প্রত্যাখ্যান করেন। টাকার বিনিময়ে মিটার পরিবর্তন তার আরেকটি ব্যবসা। বর্তমানে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ডিজিটাল মিটার পরিবর্তন বন্ধ থাকলেও আতিকুল্লাহ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মিটার পরিবর্তন করছেন। অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নের কাজে তিনি নানা কারিশমা দেখান। সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর তিনি গ্রাহকদের সঙ্গে চুক্তি করেন। ঘুষ পেলে জরিমানা কমিয়ে দেন। নাহলে মনগড়া বিল করেন। এদিকে দুপুরের খাবার খেতে বাসায় গেলে আতিকুল্লাহ অফিসে আসেন বিকাল ৪টায়। বিলম্বের বিষয়ে কেউ কিছু বললে তিনি বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের চাকরি করেন না। তাই জবাবদিহিতা করতে তিনি রাজি না। আপনারা পারলে নির্বাহী প্রকৌশলীকে বলেন।’ দুর্নীতির মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ক্রমেই ক্ষুদ্ধ হচ্ছেন দপ্তরের ২৫ স্থায়ী কর্মচারী ও ১৫ অস্থায়ী কর্মচারী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মচারী বলেন, আতিকুল্লাহ ঘুষ ছাড়া কিছুই বোঝেন না। আমরা উনার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ। স্থানীয় গ্রাহকদের জিম্মি করে তিনি বাণিজ্য করছেন। অভিযোগ পেয়ে প্রথমে খুবই গরম হয়েছিলেন এক্সেন স্যার। কয়েক দিন পরই অজানা কারণে তিনি নীরব হয়ে গেছেন। এক মাস পেরিয়ে যাচ্ছে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। এ বিষয়ে জানতে উপ-সহকারী প্রকৌশলী আতিকুল্লাহর মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রউফ লিখিত অভিযোগের কথা স্বীকার করে বলেন, তাদের স্বার্থে যখন ব্যাঘাত ঘটে তখনই এমনটি করে। তাদের সব কাজে সায় দিলে ভালো। সায় না দিলেই ভালো না। তাদের সকল পরামর্শই তো আর ভালো না। অভিযোগ পেয়ে আমি সতর্ক করেছি। আমাকে তো সবকিছু যাচাই করে করা লাগে।