খেলা
ডিআরএস: ব্যাটিংয়ে সফল বাংলাদেশ বোলিংয়ে কোথায়?
স্পোর্টস ডেস্ক
২২ নভেম্বর ২০২৩, বুধবার
ব্যাটিংয়ে রান নেই, বোলিংয়ে উইকেট নেই, দলের জয় নেই। এবারের বিশ্বকাপে দুটি জয় মিলেছে বাংলাদেশের তবে সেটা ব্যর্থতা ঢাকতে পারে না কোনোভাবেই। একটা জায়গায় কিন্তু সত্যিই বাংলাদেশ ‘সবচেয়ে ভালো’ করেছে। এবারের বিশ্বকাপে ডিআরএস বা রিভিউ (ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম) নিয়ে সবচেয়ে সফল দল বাংলাদেশ। এবারের আসরে ব্যাটিংয়ে রিভিউ নিয়ে মাত্র একটি দল পঞ্চাশ ভাগের বেশি সফলতা পেয়েছে। সেই দলটি বাংলাদেশ। টাইগার ব্যাটারদের নেওয়া ৬০ ভাগ ডিআরএস সফল প্রমাণিত হয়েছে। আম্পায়াদের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে পাঁচবারের তিনবারই জিতেছেন তারা। এই তালিকায় দ্বিতীয় সফল দল নিউজিল্যান্ড। ছয়বারের মধ্যে তিনবারই সিদ্ধান্ত বদলাতে পেরেছে তারা ।
আটটি রিভিউ নিয়ে সমান তিনবার সফল হয়েছে শ্রীলঙ্কাও। যদিও ৩৭.৫ শতাংশ সফলতায় তারা রয়েছে তৃতীয় স্থানে। স্বাগতিক ও রানার্সআপ ভারত তিনবারের বেশি রিভিউ নেয়নি সফল একবার। তাদের সফলতার হার ৩৩.৩ শতাংশ। গতবারের শিরোপাজয়ী ইংলিশরা রিভিউয়ে ২৫ ভাগ সময়ে সফল হয়েছে। আটবার রিভিউ নিয়ে মাত্র দুইবার জিতেছে তারা। সমান সফলতা আফগানিস্তানেরও, চারবার রিভিউ নিয়ে তার সফল মাত্র একটিতে। বিশ্বজয়ী অস্ট্রেলিয়া ১০ রিভিউ নিয়ে মাত্র দুইবার আম্পায়ারকে ভুল প্রমাণ করেছে। তারা আর পাকিস্তান সমান ২০ শতাংশ সাফল্য পেয়েছে। পাঁচটি ডিআরএসে কেবল একবার জিতেছে পাকিস্তানিরা। সবচেয়ে বেশি ১২টি রিভিউ নিয়ে দুইবারের জিতেছেন নেদারল্যান্ডসের ব্যাটাররা। দুর্দান্ত দক্ষিণ আফ্রিকা তিনবারের বেশি রিভিউ নিয়ে একবারও জিততে পারেনি। বোলিংয়ের রিভিউয়ের সাফল্যে বাংলাদেশ অবশ্য নিচের সারিতেই। ছয়বার আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে মাত্র একবার সিদ্ধান্ত পক্ষে আনতে পেরেছে টাইগাররা। ১৬.৬৭ শতাংশ সফলতা নিয়ে একই কাতারে আছে নিউজিল্যান্ড। ১২ রিভিউ নিয়ে মাত্র দুইবার সফল হয়েছে কিউইরা। তবে ইংল্যান্ড, পাকিস্তান ও নেদারল্যান্ডস বোলিংয়ের সময় রিভিউ নেওয়াতে এর চেয়েও বেশি খারতাপ করেন। তিন দেশেরই অধিনায়ক সমান নয়টি করে রিভিউ নেন আর সেখানে প্রত্যেকেই স্রেফ একবার করে সফল হন।
আর বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া ১১ বারের মধ্যে দুইবার আম্পায়ারের সিদ্ধান বদলাতে পেরেছেন। এই তালিকায় সবচেয়ে সফল রানার্স আপ ভারত। ১২টি রিভিউ নিয়ে পাঁচবারই সফল দলটি। রোহিত শর্মার দলের সাফল্যের হার ৪১.৬৭ শতাংশ। দুই নম্বরে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা জিতেছে ৩৫ ভাগ রিভিউ। সবচেয়ে বেশি ২০ বার রিভিউ নিয়ে ৭ বার সফল হয় তারা। ১৪ বার রিভিউ নিয়ে ৪ বার সফল হয়েছে আফগানিস্তান। এতে দলটির সাফল্যের হার ২৮.৫৭ শতাংশ। শ্রীলঙ্কা ১২টি ডিআরএস নিয়ে নট-আউটকে আউটে পরিণত করেছে তিনবার। ২৫ শতাংশ সফলতা পেয়েছে তারা। এতো গেলো শুধু ব্যাটিং-বোলিংয়ে রিভিউয়ের কথা। সব মিলিয়ে হিসেব করলেও দল হিসেবে বাংলাদেশ এবারের রিভিউ নেওয়াতে দারুণ সফল। সব দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সফল রিভিউ নেওয়ার তালিকায় দ্বিতীয় বাংলাদেশ অন্যান্যবারের তুলনায় এবারের আসরে আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক কম হয়েছে। এর প্রমাণ পাওয়া যায়, দলগুলো রিভিউ নিয়ে ৫০ শতাংশও সফল হতে পারেনি। সবচেয়ে সফল দল ভারতের সফলতার হার ৪০ শতাংশ। ১৫বার রিভিউ নিয়ে ছয়টিতে জিতেছে রোহিত শর্মার দল। সবচেয়ে বড় দুর্ভাগা দলও তারাই, অন্তত ৫ বার তারা আম্পায়ারস কলের কবলে পড়েছে। আর কোনো দলের বিপক্ষে এত বেশি আম্পায়ার্স কল যায়নি।
দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশের রিভিউ নেওয়াতে সফলতার হার ৩৬.৩৬ শতাংশ। ১১ বার আম্পারের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে ৪ বার জিতেছে সাকিব আল হাসানের দল। যদিও এবারের বিশ্বকাপে টাইগাররা সবচেয়ে কম রিভিউ নিয়েছে। এবারের আসরে সবচেয়ে বেশি ২৩টি রিভিউ নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। যেখানে ৭ বার জেতা প্রোটিয়াদের সাফল্য ৩০.৪৩ শতাংশ। এই তালিকায় ৩ নম্বরে তারা। ৩ বার আম্পায়ারস কল গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কা উভয় দলের বিপক্ষে। ২০ বার রিভিউ নিয়ে ৬টিতে জেতা লঙ্কানদরা এই তালিকার চতুর্থ স্থানে রয়েছে। এই তালিকায় যৌথভাবে পাঁচ নম্বরে রয়েছে নিউজিল্যান্ড ও আফগানিস্তান। দুই দলই ১৮টি রিভিউ নিয়ে পাঁচটিতে সফল হয়েছে, তাদের সফলতার হার ২৭.৭৮ শতাংশ। তবে চারবার আম্পায়রস কল আফগানদের বিপক্ষে গেলেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেটা কখনোই হয়নি। ছয় নম্বরে রয়েছে চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। একুশটি রিভিউ নিয়ে মাত্র চারবারই সফল হওয়া অজিদের সাফল্যের হার ১৯.০৫ শতাংশ। দুঃস্বপ্নের বিশ্বকাপ কাটানো ইংল্যান্ড ১৭.৬৫ শতাংশ সফলতা নিয়ে অজিদের ঠিক পিছনে। ১৭টি রিভিউয়ের স্রেফ তিনটিতে সিদ্ধান্ত এসেছে ইংলিশদের পক্ষে। সবার শেষে থেকে বিশ্বকাপ শেষ করা নেদারল্যান্ড এক্ষেত্রেও সবার নীচে। তবে এক্ষেত্রে তারা পাকিস্তানকে সঙ্গী হিসেবে পাচ্ছে। ডাচদের মতো ১৪.২৯ ভাগ সফলতার হারের বেশি যেতে পারেনি পাকিস্তান। ১৪টি রিভিউ নিয়ে দুইবার সফল হয়েচছে পাকিস্তানিরা। আর নেদারল্যান্ডসকে ২১ রিভিউ নিয়ে জিতেছে।