ধর্মপাশায় হাওরাঞ্চলে প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থা নাজুক

দেশব্যাপী শিক্ষাব্যবস্থা আধুনিকায়ন হলেও সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার হাওরাঞ্চলে প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। হাওরাঞ্চলের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত অধিকাংশ শিক্ষক তাদের ছেলেমেয়েদের ভালোমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করার সুবাদে সুবিধাজনক এলাকা নেত্রকোনা জেলাশহর ও মোহনগঞ্জ পৌরশহরে অবস্থান করছেন। কিছুসংখ্যক শিক্ষক ধর্মপাশা উপজেলা সদরেও বসবাস করছেন। নিজ নিজ কর্মস্থল থেকে দূরে অবস্থান করায় সময়মতো বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকতে পারছেন না তারা। নেত্রকোনা থেকে আনুমানিক ৩০ কিলোমিটার দূরত্বে ট্রেনযোগে মোহনগঞ্জে আসেন। এরপর ৪ কিলোমিটার দূরত্বে ধর্মপাশা উপজেলা শহর। ধর্মপাশা হতে ৫ কিলোমিটার দূরত্বে কান্দাপাড়া থেকে নৌকাযোগে হাওরাঞ্চলের নিজ নিজ কর্মস্থল বিদ্যালয়ে পৌঁছাতে অনেকের দুই ঘণ্টা আবার অনেকের তিন থেকে চার ঘণ্টা সময়ের প্রয়োজন হয়। এমন অবস্থায় সময়মতো বিদ্যালয়ে পৌঁছানো সম্ভব হয় না। এ ছাড়া ঝড় বাদলের দিনে হাওরে নৌকাযোগে কোথাও আসা-যাওয়া মোটেও সম্ভব হয় না। 

দীর্ঘ পথ বিভিন্ন যানবাহনে যাতায়াত করে ক্লান্তি না কাটতেই দূরে অবস্থানকারী শিক্ষকগণ নির্দিষ্ট সময়ের দু’ঘণ্টা পূর্বে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন বলে জানা যায়। শুষ্ক মৌসুমে হাওরাঞ্চলে রাস্তা না থাকায় যাতায়াত করতে হয় মেঠো পথ ধরে। মেঠো পথে একমাত্র মোটরসাইকেল ছাড়া যাতায়াত করা সম্ভব হয় না। তখন নির্দিষ্ট সময়ে কর্মস্থলে পৌঁছানো মোটেও সম্ভব হয় না।   এ বিষয়ে ধর্মপাশা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মানবেন্দ্র দাস বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক শিক্ষক কর্মস্থলে থাকতে হবে, অন্য জেলায় থাকার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, কিছু শিক্ষক কর্মস্থলে না থেকে পাশের জেলায় অবস্থান করছেন তা সঠিক। তবে নির্দিষ্ট সময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকেন তারা। স্কুলে অনুপস্থিত থাকে এমন অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শীতেষ চন্দ্র সরকার বলেন, সরকারি আইন অনুযায়ী কোনো সরকারি চাকরিজীবী কর্মস্থলের বাহিরে বা অন্য জেলায় ছুটি না নিয়ে থাকার সুযোগ নেই। তিনি নিজে বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শন করেছেন। শিক্ষকদের মধ্যে অনেকেই কর্মস্থলে না থেকে পাশের জেলা নেত্রকোনা জেলা শহর ও মোহনগঞ্জ পৌরশহরে অবস্থান করছেন বলে তিনি স্বীকার করেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।