বাংলারজমিন
দাউদকান্দিতে বিএনপিতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা আওয়ামী সুবিধাবাদীদের
স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা থেকে
১১ মে ২০২৫, রবিবার
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মামলা ও নানাভাবে হয়রানির কাজে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত আওয়ামী আমলের সুবিধাভোগী ও দলটির নেতাদের সঙ্গে নিবিড় ঘনিষ্ঠতা থাকা বেশ ক’জন ধূর্ত ব্যক্তি বিএনপি’র ‘নব্যনেতা’ হওয়ার চেষ্টা শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে দাউদকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের ক্ষমতাধর (বর্তমানে পলাতক) ব্যক্তি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপিপুত্র মোহাম্মদ আলী সুমনের আস্থাভাজন ও ঘনিষ্ঠ সুন্দলপুর ইউনিয়নের দশপাড়া গ্রামের খন্দকার আবুল খায়েরের একটি ভিডিও ক্লিপ ও স্থিরচিত্র ফেসবুকে ঘুরছে। ফ্যাসিস্টদের দোসর হিসেবে পরিচিত ওই ইউনিয়নের আবুল খায়েরসহ আরও কয়েকজন বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে স্থানীয় বিএনপি’র রাজনীতিতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছেন। এ নিয়ে দাউদকান্দি বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে দাউদকান্দি উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আল আজাদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এটি অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয়, দাউদকান্দিতে বিএনপি’র নেতাকর্মীরা ১৬ বছর ঘরে ঠিকমতো ঘুমাতে পারেনি অথচ ফ্যাসিস্টদের দোসররা যারা এখানকার আওয়ামী লীগ নেতাদের চাটুকারিতা করেছে তারাই এখন বিএনপি’র পতাকাতলে আশ্রয় খোঁজে। সুন্দলপুর ইউনিয়নের দশপাড়ার খন্দকার আবুল খায়ের সহ আরও অনেকে রয়েছে যারা আওয়ামী আমলে ড. মোশাররফ সাহেবের বিরোধিতা করেছে, বিএনপি নেতাকর্মীদের হেনস্তা করেছে, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছে। তারা এখন হাসিনার পতনের পর বিএনপিতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। ওইসব সুবিধাবাদী চাটুকারই বিএনপি’র নেতাকর্মীদের ১৬টি বছর হামলা, মামলা ও হয়রানিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মদত যুগিয়েছে, আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আল্লাহ্ আমাকে প্রাণে বাঁচিয়েছেন। এসব আওয়ামী দোসরারা যাতে বিএনপিতে প্রবেশ করতে না পারে এজন্য দলের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। কারণ এরা দলে ঢুকলে স্থানীয় রাজনীতিতে সংকট সৃষ্টি করবে।’
দাউদকান্দি উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক জানান, ‘দশপাড়ার আওয়ামী দোসর খন্দকার আবুল খায়েরের গডফাদাররা যখন পলাতক, তখন সে এবং আরও কয়েকজন আওয়ামী দোসর বোল পাল্টিয়ে বিএনপিতে ঢোকার চেষ্টা করছে। এটি প্রতিহত করতে আমি ফেসবুকে দাউদকান্দি আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা সাবেক এমপি সুবিদ আলী ভূঁইয়ার ছেলে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সুমনের সঙ্গে ভিডিও ও ছবি পোস্ট করি। এরপর এটি অনেকেই শেয়ার করেও ভাইরাল হয়। এই আবুল খায়েরের মদতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আমার নামে তিনটি মামলা দিয়েছে। আমাকে এলাকায় আসতে দিতো না। এই আবুল খায়ের বাড়ির আঙ্গিনায় আওয়ামী লীগের অফিস করেছে। আওয়ামী লীগ নেতাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেছে, ড. মোশাররফ স্যারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, জয়বাংলা স্লোগান দিয়েছে। ঢাকায় সরকারি চাকরি করে অথচ এলাকায় এসে বিএনপি’র লোকদের শাসাতো, আওয়ামী লীগের মিছিল-মিটিংয়ে অংশ নিতো। এখন আওয়ামী বোল পাল্টিয়ে বিএনপি নেতাদের আশপাশে ঘুরে, বাড়ির সামনে জিয়া পরিষদের অফিস করার সুুযোগ খোঁজে। আমি বিএনপি’র একজন নগন্য কর্মী হিসেবে দলের হাইকমান্ডের কাছে অনুরোধ করছি, ১৬ বছর আওয়ামী লীগের হয়ে যারা আমাদের ওপর নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়েছে সেই খন্দকার আবুল খায়েরদের মতো সুবিধাবাদীরা যাতে বিএনপিতে প্রবেশ করতে না পারে।’