বিশ্বজমিন
দ্বিতীয়বার অন্যরকম এক মৃত্যুদণ্ড স্মিথের
মানবজমিন ডেস্ক
(২ মাস আগে) ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার, ১:৫৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১৫ অপরাহ্ন

মৃত্যুদণ্ডের মঞ্চ থেকে বেঁচে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রে একটি খুনের আসামী কেনেথ স্মিথ। গত বছর তাকে প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কথা ছিল। সে মতো সব আয়োজন সম্পন্ন হয়। কিন্তু সেই রাতের সেই সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ার পর তার মৃত্যুদণ্ড বাতিল করা হয়। এর কারণ, জেল কর্তৃপক্ষ তার যে ধমনীতে ওই ইঞ্জেকশন পুশ করবে, তা তারা খুঁজে পাচ্ছিল না। তারপর এক বছরের মতো নতুন জীবন পেয়েছেন কেনেথ স্মিথ। এবার নতুন পদ্ধতিতে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। প্রথমবার তার ওপর প্রয়োগ করা হবে এ পদ্ধতি। তবে এ পদ্ধতি নিয়ে আছে বিতর্ক। এ খবর দিয়েছে পশ্চিমা একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ।
এতে বলা হয়, ১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামায় একজন ধর্মীয় নেতার স্ত্রীকে হত্যার জন্য দু’ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত।
উল্লেখ্য, মানবজাতি যে শ্বাসপ্রশ্বাস নেয় তার মধ্যে শতকরা ৭৮ ভাগই নাইট্রোজেন। অক্সিজেনের সঙ্গে এটা শরীরে প্রবেশ করার কারণে মানুষ নিরাপদ থাকে। কিন্তু শুধু নাইট্রোজেন প্রাণঘাতী।
যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা সহ এখন মোট তিনটি রাজ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে নাইট্রোজেন হাইপোক্সিয়া অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশনের মজুদে সংকট দেখা দেয়ার কারণে আলাবামা ২০১৮ সালে এই পদ্ধতি অনুমোদন করে। রাজ্যের কর্মকর্তাদের দাবি, এই পদ্ধতি অধিকতর দ্রুত এবং বেদনাহীন। কিন্তু বিরোধীরা এর সমালোচনা করেছে। তারা একে মানুষের ওপর প্রয়োগের পরীক্ষা এবং নিষ্ঠুরতা হিসেবে উল্লেখ করেছে। তবে গত বছর নভেম্বরে প্রথম যখন মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের উদ্যোগ নেয়া হয়, তখন কেনেথ স্মিত বলেছিলেন, তিনি নাইট্রোজেন হাইপোক্সিয়া ব্যবহারের পক্ষে। কিন্তু ওই সময় একজন জল্লাদের সঙ্গে তার কথোপকথনের পর তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
দ্য টাইমসকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, আমার কাছে তিনি জানতে চাইলেন ব্যথা কমেছে কিনা। তার এ কথায় আমি কান্নায় ভেঙে পড়লাম। তারপরই তিনি উদ্ভট কথোপকথন শুরু করলেন। যদি তুমি এটা বেছে নাও, এই প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশন বেদনাহীন। কিন্তু ওই গ্যাস (নাইট্রোজেন) শ্বাস বন্ধ করে আনে। আসলে কেউই জানে না, কি ঘটবে।
২০২২ সালের ১৭ই নভেম্বর ছিল কেনেথ স্মিথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দিন। যুক্তরাষ্ট্রের ১১তম সার্কিট কোর্ট রায় দিয়েছিল তার মৃত্যুদণ্ড নাইট্রোজেন হাইপোক্সিয়া ব্যবহার করে কার্যকরে অনুমোদন দেয়া উচিত। তিনি প্রথম দিকে এই ইচ্ছাই প্রকাশ করেন। তবে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অল্প আগে মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করা হয়। ততক্ষণে স্মিথ তার জীবনের শেষ খাবার খেয়ে ফেলেছেন। স্থানীয় সময় রাত ৮টায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের রুমে প্রবেশ করানো হয়েছে।
তাকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিশেষ টেবিলে শুইয়ে দিয়ে ফিতা দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়েছে। তখনও কেনেথ স্মিথ জানতেন না তার মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করা হয়েছে। রাত ১০টা ২০ মিনিটের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট এই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে। এর ফলে স্মিথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া এগিয়ে চলতে থাকে। মধ্যরাতের মধ্যে তা সম্পন্ন করার কথা। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হলো। তার দুই হাতে দু’জন ব্যক্তি আইভি লাইন স্থাপন করলেন। কিন্তু তাদের একজন বলতে শুরু করলেন স্মিথের শরীরে সূচ জ্যাম হয়ে যাচ্ছে। বার বার চেষ্টা করলেন। কিন্তু উপযুক্ত ধমনী বা শিরা খুঁজে পেলেন না। এক পর্যায়ে তাদের একজন স্মিথকে বললেন হাত মুঠ করতে, যাতে তার রক্তবাহী শিরা সহজে দেখা যায়।
স্মিথ অভিযোগ করেন, এরপর তাকে ক্রুশবিদ্ধ অবস্থার ঠিক উল্টো করে রাখা হয়। অর্থাৎ তার পা উপরের দিকে, মাথা নিচের দিকে। এভাবে কয়েক মিনিট রাখার পর তারা মনে করেছিল রক্ত মাথা ও শরীরের উপরের অংশে চলে আসবে। তাতে তার কাঁধের ধমনী খুঁজে পেতে সহজ হবে। কেনেথ স্মিথ আরও অভিযোগ করেন, জল্লাদরা আবার আমার রুমে প্রবেশ করলেন। কিছু একটা আমার বুকের ওপর ছুড়ে মারলেন। ওই সূচটি নিয়ে তিনি একবার রুমের বাইরে গেলেন, আবার এলেন। এমনটা করতে থাকলেন। আমি এ সময় এতটা ব্যথা পেয়েছি, যা আমার সারা জীবনেও পাইনি।
তিনি বলেন, তার ধারণা ওই সূচটি তার বুকে প্রায় ১০ বার বিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু ততক্ষণে সময় শেষ হয়ে যায়। ফলে কর্মকর্তারা মৃত্যুদণ্ড কার্যকর বাতিল করেন। বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে কার্যকর করতে না পারার জন্য এমনটা করা হয়।
মন্তব্য করুন
বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন
বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ দূতাবাসের সতর্কবার্তা/ মার্কিন শ্রমবিষয়ক মেমোরেন্ডামের টার্গেট হতে পারে বাংলাদেশ
ভয়েস অব আমেরিকার রিপোর্ট/ বাংলাদেশে ‘অন্যায্য’ নির্বাচনের প্রস্তুতি
মহাসচিবের মুখপাত্রের ব্রিফিং/ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে না জাতিসংঘ
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের রিপোর্ট/ বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে চলছে সহিংস দমন–পীড়ন

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]