শেষের পাতা
বিদেশে থাকেন ২৯ সচিবের সন্তানেরা বেশি যুক্তরাষ্ট্রে
স্টাফ রিপোর্টার
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শুক্রবারপ্রশাসনের ২৯ সচিবের সন্তানরা বিদেশে থাকেন। তাদের কেউ পড়াশোনা করেন আবার কেউ পড়াশোনা শেষ করে স্থায়ী হয়েছেন। একটি সংস্থার অনুসন্ধানে এই তথ্য উঠে এসেছে। সচিবদের ৪৩ জন সন্তান বিভিন্ন দেশে আছেন। এর মধ্যে ১৮ জন সচিবের ২৫ সন্তান অবস্থান করছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। বাকি ১৮ জন আছেন কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, পোল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও ভারতে। প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাসহ সচিব পদমর্যাদার ৮৬ জনের সন্তানদের কে কোথায় আছেন এবং কী করছেন, তা নিয়ে অনুসন্ধান চালায় ওই সংস্থাটি। অনুসন্ধানের পর ৮৬ সচিবের মধ্যে ২৯ জনের সন্তানদের বিদেশে থাকার তথ্য প্রতিবেদন আকারে তৈরি করা হয়। সরকারি সূত্র জানায়, বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি ঘোষণার পর এই তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের স্ত্রী-সন্তানের বিষয়েও এমন তথ্য এসেছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়- ১৮ জন সচিবের ২৫ সন্তান যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। এর মধ্যে পরিকল্পনা সচিব সত্যজিৎ কর্মকারের দুই মেয়ে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ’র দুই মেয়ে, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান (সচিব) মো. ফয়জুল ইসলামের দুই ছেলে, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) মোসাম্মৎ নাসিমা বেগমের এক ছেলে, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মশিউর রহমানের এক ছেলে, তথ্য ও সমপ্রচার সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের এক মেয়ে ও এক ছেলে, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. কামাল হোসেনের এক মেয়ে, বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিনের এক মেয়ে, সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেনের এক ছেলে, সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সচিব হাসানুজ্জামান কল্লোলের এক ছেলে ও এক মেয়ে, সংস্কৃতি সচিব মো. খলিল আহম্মেদের এক ছেলে, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের এক ছেলে ও এক মেয়ে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. মাহমুদুল হোসাইন খানের এক ছেলে, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের এক ছেলে এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিনের এক মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। এ ছাড়া মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব ড. নাহিদ রশীদের এক মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন। পররাষ্ট্র সচিবের এক মেয়ে কানাডায় এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিবের এক ছেলে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিবের এক মেয়ে ভারতে আছেন।
কানাডায় বসবাস করছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খানের দুই ছেলে, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমানের এক মেয়ে। যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন নৌপরিবহন সচিব মো. মোস্তফা কামালের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) আবদুল বাকীর এক ছেলে স্ত্রীসহ নিউজিল্যান্ডে এবং পরিকল্পনা কমিশনের আরেক সদস্য (সচিব) এ কে এম ফজলুল হকের এক ছেলে ফিনল্যান্ডে পড়াশোনা করছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এনএসডিএ) নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) নাসরীন আফরোজের এক ছেলে এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিনের এক ছেলে অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করছেন। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন রেলপথ সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীরের এক ছেলে, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সচিব ড. ফারহিনা আহমেদের এক ছেলে ও এক মেয়ে এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ সচিব মো. মইনুল কবিরের এক মেয়ে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খানের এক ছেলে কানাডায় ও আরেক ছেলে পোল্যান্ডে আছেন।
উল্লেখ্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী জনপ্রশাসনে এখন ৮৭ জন সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা আছেন। তারা মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন দপ্তরে দায়িত্ব পালন করছেন।
পাঠকের মতামত
এটা খুব সুন্দর রিপোর্ট। এটা জানতে পেরে দেশের মানুষ খুশি হয়েছে।
আমরা রাজনীতিবিদ ও ব্যাসায়ীদের অনুরূপ তথ্য জানতে চাই।
শুধু সচিব কেন, মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতা সেটা সরকারী দল হোক আর বিরোধী দল হোক তাদের সন্তানরা বিদেশে কিংবা দেশে ইংরেজী প্রাইভেট স্কুল কলেজ এ পড়াশোনা করে বিশ্বমানের মানবসম্পদ হবে আর তারা আমার আপনার সন্তানদের নিয়ে রাজনীতি করবেন। কখনও কি দেখেছেন বড় বড় নেতাদের আমলাদের সন্তানরা দেশীয় স্কুল ইউনিভার্সিটিতে বাংলা মিডিয়াম এ পড়াশোনা করে, ছাত্রলীগ ছাত্রদল কিংবা শিবির করে। তাই দ্রুত অবনতশীল শিক্ষামানে তাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। স্বাধীনতা উত্তর প্রতিটি সরকার শিক্ষানীতি বারবার পরিবর্তন করে আমার আপনার সন্তানদের গিনিপিক বানিয়েছেন। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরনে আমজনতাকে এক হওয়া ছাড়া উপায় নাই।
এসব নয়ন দের নয়ন খুলে হাতে ধরিয়ে দিলে তারা তাদের নয়ন পরিষ্কার করে নিতে পারত। তখন বুঝত, কোনটা ব্যক্তিগত তথ্য আর কোনটা পাবলিক!
এটি একটি খবর হলো? এখন সচিবেরা অনেক বেতন ভাতা পান। ছেলে মেয়ে বিদেশে পাঠাতেই পারেন। অনেক সচিবের ছেলে মেয়েরা বেশ মেধাবী। তারা বৃত্তি নিয়ে বিদেশে পড়ছে। সচিবেরা টাকা পাচার করে বিদেশে ঘরবাড়ি বানালেন কিনা সে খবর দেন।
এই সমস্ত সচিবদের নিয়ে ভাবতে হবে । ভিসা নীতির আওতায় এদের আনতে হবে । দেশ থেকে জনগনের টাকা পাচার করে এরা বিদেশে ছেলে মেয়দের লেখাপড়া করাচ্ছে আর বড়ীঘর কিনছে । Noyon কে বলছি এটা মোটেও বেক্তিগত তথ্য নয়। এই তথ্য জনগনের জানার অধিকার রয়েছে। আমাদের tax এর পয়সা দিয়ে এদের বেতন হয় । সেটা ভুলে গেলে চলবে না।
তাদের ছেলে-মেয়েরাই তো বিদেশে লিখাপড়া করবে। কৃষকের ছেলে-মেয়েরা পারবে না,কারণ তারা গৃহযুদ্ধ করে ক্লান্ত হয়ে গেছে।
These school going kids should prepare their luggage to return back to their country due to visa restrictions that will hit soon. They should ask their parents why they betrayed with their country.
বেক্তিগত তথ্য গণ মাধমে কেন ? কিসের আলামত ?