খেলা
হকি নির্বাচনে খসড়া ভোটার তালিকায় আপত্তিতে ‘বিপত্তি’
স্পোর্টস রিপোর্টার
৫ জুন ২০২৩, সোমবার
১৯শে জুন হকি ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন সামনে রেখে গতকাল ছিল ভোটার তালিকায় আপত্তি গ্রহণের দিন। খসড়া ভোটার তালিকায় আপত্তি দিতে এসে বাধার মুখে পড়েন ফেডারেশ হকি ফেডারেশনের নির্বাচনে কাউন্সিলরশিপ নিয়ে কিছু দিন ধরেই নানা অভিযোগ শোনা যাচ্ছিল। হকি ইউনাইটেডের প্রতিনিধি হিসেবে পাঠানো হয় সাজেদ আদেলের নাম এবং কম্বাইন্ড স্পোর্টিংয়ের কাউন্সিলর হিসেবে পাঠানো হয় জহিরুল ইসলাম মিতুলের নাম। কিন্তু খসড়া ভোটার তালিকায় হকি ইউনাইটেডের কাউন্সিলর হিসেবে নাম আসে আনোয়ার পারভেজের এবং কম্বাইন্ড স্পোর্টিংয়ের কাউন্সিলর হিসেবে আসে আবদুর রশিদের নাম। এ ব্যাপারে আপত্তি জানাতেই গতকাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনে নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে আসেন সাজেদ এএ আদেল ও জহিরুল ইসলাম মিতুল।
আপত্তি জানাতে এসেই বাধার মুখে পড়ার অভিযোগ সাজেদ আদেলের। তিনি বলেন, ‘খসড়া ভোটার তালিকায় আপত্তি জানাতে এসেছিলাম। কিন্তু বাধার জন্য নির্বাচন কমিশনে আমরা আপত্তিপত্র জমা দিতে পারিনি।’ সাজেদ আদেল বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বলেন, ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে সাধারণ সম্পাদক সাঈদ সাহেবের অনুসারীরা আমাকে আপত্তি জানাতে বাধা দিয়েছে।’ এই অভিযোগ প্রত্যাখান করে মমিনুল হক সাঈদ বলেন, ‘আমার ওপর আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে ভিত্তিহীন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সিসিটিভি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রিত। কে কি করেছে সেটা ফুটেজ দেখলেই স্পষ্ট হবে।’ সাজেদ আদেলের মতো বিপত্তিতে পড়েছেন জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠকরা। দশের অধিক বঞ্চিত জেলা ক্রীড়া সংস্থার চিঠি নিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাচন কমিশনে গিয়েছিলেন রাজশাহীর রতন। সেই চিঠি রিসিভ না করে ফটোকপি করে আনতে বলেছে নির্বাচন কমিশন। ফটোকপি করে নির্বাচন কমিশনে পৌঁছাতে রতনের ২টা পাঁচ বেজে যায়।’ পাঁচ মিনিট দেরি হওয়াতে নির্বাচন কমিশন রতনের কাছে থাকা চিঠি গ্রহণ করেননি।
এই ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পাশাপাশি সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদের সম্পৃক্ততার বিষয়ও ভেসে আসছে। এই অভিযোগ নিয়ে সাঈদ বলেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করেছি মাত্র ২-৩ মিনিটের বিষয় তাদের চিঠি গ্রহণ করা হোক। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সেটা করেনি।’ সাজেদ আদেল ও জেলা-বিভাগীয় সংগঠকরা চিঠি নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে জমা দিতে না পেরে ই-মেইলে দিয়েছেন। হকি ফেডারেশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (অর্থ) সাইদুর এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘কেউ বাধার সম্মুখীন হলে সেটা প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আমাকে অবহিত করতে পারত। কেউ কিছু বলেনি। তাছাড়া আমাদের কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী ই- মেইলে আপত্তি গ্রহণের বিষয়ে কিছু উল্লেখ নেই।’
হকি ফেডারেশনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চার বছরের মধ্যে দুই বার জাতীয় হকিতে অংশগ্রহণ করলে কাউন্সিলরশিপ মিলবে। হকি ফেডারেশন চার বছরের মধ্যে মাত্র একবার জাতীয় হকি আয়োজন করেছে। তাই হকি ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটি গত নির্বাচনে যে ৪১ জেলা-বিভাগ কাউন্সিলর ছিল তাদের কাছেই কাউন্সিলরশিপের চিঠি দিয়েছে। এর বাইরে থাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারা বলেন, ‘আমরা খেলার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। ফেডারেশন খেলা আয়োজন করতে পারেনি। এ ব্যর্থতা ফেডারেশনের। এজন্য আমরা কাউন্সিলরশীপ বঞ্চিত হব কেন ?’ নানা বাধার মধ্যেও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাচন কমিশনের কাছে চারটি আপত্তি জমা পড়েছে। এর মধ্যে অন্যতম মুক্ত বিহঙ্গ, আম্পায়ার্স এসোসিয়েশন। আম্পায়ার্স বোর্ড ও এসোসিয়েশনের এই দ্বন্দ্ব গত দুই নির্বাচনেও ছিল। হাইকোর্টের রায় আম্পায়ার্স বোর্ডের পক্ষেই গিয়েছিল। আগামীকাল এই আপত্তির ওপর শুনানি করবে নির্বাচন কমিশন।