বাংলারজমিন
মাদ্রাসা শিক্ষার্থী রিফাতের সরলতায় মুগ্ধ নেট দুনিয়া
এম.এ রাজ্জাক, তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) থেকে
(৩ মাস আগে) ৩ জুন ২০২৩, শনিবার, ২:৫৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১:৩৫ অপরাহ্ন

রিফাত। মাদ্রাসার শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী। শিক্ষকের কাছে বাংলাদেশের জাতীয় মাছের নাম ‘পাঙাশ’ ও ইংরেজি সাত দিনের নাম ভুল বলে রিফাত ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার এই শিশুটির সরলতায় মুগ্ধ হয়েছে নেট দুনিয়া। সরলতা ও আত্মবিশ্বাসে তাকে নিয়ে চলছে চারদিকে হৈচৈ। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা থাকলেও তার সরলতা ইতিমধ্যে সবার নজর কেড়েছে ।
রিফাতের বয়স ৫ বছর পূর্ণ না হলেও ক্লাসের অন্য শিক্ষার্থীদের থেকে আলাদা সে। সাবলীল উত্তর, দৃষ্টিভঙ্গি, কথোপকথনে যে কারো নজর কাড়ে। ভুল উত্তর হলেও শিক্ষকের সকল প্রশ্নের উত্তর দেয়া, বাচনভঙ্গি ইত্যাদি অন্য শিক্ষার্থীদের থেকে আলাদা করেছে খুদে শিক্ষার্থী রিফাতকে। সম্প্রতি রিফাতকে পাঠদানের সময় করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেখানে ইংরেজি সাত দিনের নাম, জাতীয় ফল, মাছ, ফুলের নাম জানতে চান তার শিক্ষক ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জামালগঞ্জ উপজেলার লম্বাবাঁক পশ্চিমপাড়া আব্দুস সোবহান তালুকদার ও লালমিয়া তালুকদার নূরানীয়া মাদ্রাসায় শিশু শ্রেণিতে পড়ে রিফাত। মাদ্রাসাটি চালু হয় ২০২১ সালে। শিক্ষার্থী প্রায় একশজন । শিশু ওয়ান, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হয় এখানে। বাংলা, ইংরেজি, আরবি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান পড়ানো হয়। এখন শিক্ষার্থী বৃদ্ধি পাওয়ায় ভেতরে ও বারান্দায় ক্লাস চলে। রিফাতকে একনজর দেখতে ও ছবি তুলতে এখন মাদ্রাসায় ভিড় করছেন আশ-পাশের মানুষেরা। শিক্ষার্থী রিফাতের বাড়ি জামালগঞ্জ উপজেলার বেহেলি ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে। তার বাবার নাম মো. মহিবুর রহমান। মহিবুর একটি মুদির দোকান কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। রিফাত নানার বাড়ি লম্বাবাঁক থেকে পড়াশোনা করে।
মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আতিকুর রহমান আতিক বলেন, আমি ৬ মাস ধরে এই মাদ্রাসায় পড়াচ্ছি। বাংলা, ইংরেজি ও গণিত পড়াচ্ছি। শুরু থেকেই দেখছি রিফাত পড়াশোনায় খুবই ভালো। সে পড়া ও লেখায় অন্যান্য শিক্ষার্থী থেকে ভালো। দোয়া করি সে বড় হয়ে বড় আলেম হোক।
রিফাতের নানা মো. আসমত আলী বলেন, রিফাত খুবই মেধাবী। কোনো কিছু শুনলে সাথে সাথে সে মুখস্থ করে ফেলে। লেখাপড়াতেও তার খুবই আগ্রহ। তার নানা হিসেবে এখানে গার্ডিয়ান আমি।
মাদ্রাসায় পড়ানোর উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, সে পড়াশোনা করে বড় আলেম উলামা হলে আমি মরলে দোয়া করবে। এই আশা নিয়েই নাতিকে মাদ্রাসায় ভর্তি করেছি। তিনি বলেন, মাদ্রাসার প্রতি সরকার একটু খেয়াল করলে আরও এগিয়ে যাবে। অনুদান পেলে শিক্ষার্থীরাও উৎসাহ পাবে।
মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ও পরিচালক ক্বারী আব্দুল কুদ্দুস বলেন, রিফাতের মাঝে কিছু গুণ রয়েছে। তার কথাবার্তা ও চালচলন খুবই ভালো। তার মেধা আছে। আশা করি এক সময় সে অনেক বড় আলেম- হাফেজ হবে। অন্যান্য শিক্ষার্থী থেকে রিফাত আলাদা। কোনো বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করলে পারুক আর না পারুক উত্তর দেয়ার চেষ্টা করে। তিনি আরো বলেন, এখানে তিনটি শ্রেণিতে শতাধিক শিক্ষার্থী গাদাগাদি করে পড়াশোনা করে। এখানে একটি বিল্ডিং নির্মাণ হলে এ এলাকার শিক্ষার্থীরা ভালো শিক্ষার সুযোগ পাবে।
পাঠকের মতামত
রিফাতের উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করছি
রিফাতের উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করছি।
I just watched the videos on Rifat on YouTube. One thing that struck me was both the teacher and the children were speaking in local dialect. I think the dialect that must be used in schools by the teachers and the students throughout Bangladesh must be Chaltibhasha of Bangla. Otherwise, the students will never learn to speak Bangla correctly and keep on speaking in local dialects when they grow up.
দুঃখিত। আমার পূর্ববর্তী মন্তব্যটি অন্য সংবাদের জন্য ছিল। ভুলবশত মন্তব্যটি এখানে প্রকাশিত হয়েছে।
রিফাতের উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করছি।
ঘটনা সন্দেহ জনক সঠিক নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া দরকার।
রিফাত আসলেই বুদ্ধিমান এবং সাহসী, তা না হলে মাঝেমধ্যে আত্মবিশ্বাসের সাথে নির্ভয়ে ভুল ভুল উত্তর দিতে পারতো না। শুভ কামনা রইল রিফাত ভাইয়ের।