বাংলারজমিন
রামগঞ্জে খালে বাঁধ হুমকিতে চাষাবাদ হতাশ কৃষক
রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
১ জুন ২০২৩, বৃহস্পতিবার
রামগঞ্জে প্রবাহমান সরকারি খালে বাঁধ দেয়ায় পানি চলাচল বন্ধ হয়ে হুমকিতে পড়েছে চাষাবাদ। নোয়াগাঁও ইউনিয়নের শৈরশেই-রাজারামপুর খালের ইউনিয়ন পরিষদ ও শৈরশৈই বাজার সংলগ্ন স্থানে কৃষি মাঠ থেকে ফসলি জমির টপসয়েল ও পুকুর খনন করে ট্রলি দিয়ে মাটি বহন করার জন্য এ বাঁধ দেয় শৈরশেই গ্রামের ইতালি প্রবাসী ও মাটি ব্যবসায়ী হারুন সাদেক। খালটির প্রস্থ কোথাও ৩০ ফুট কোথাও ৪০ ফুট। এক সময় এই খাল দিয়ে নৌকা চলাচল করতো। এখন বাঁধ দেয়ার কারণে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে শুকনো মৌসুমে পানির অভাব ও বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে শৈরশৈই, আশাপুরা ও রাজারামপুর কৃষি মাঠে ২শ’ একর জমিতে চাষাবাদে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন ৩ গ্রামের ৫ শতাধিক কৃষক। অনেক জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে আছে। তাই কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এলাকাবাসী বাঁধটি অপসারণ করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করেন।
এলাকার দুলাল মিয়া, আকবর হোসেন, মাসুদসহ ৮ থেকে ১০ কৃষক বলেন, ইতালি প্রবাসী হারুন সাদেক তার মাটি ব্যবসার ম্যানেজার আবুল খায়েরের মাধ্যমে এলাকার জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিক নেতা ও প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে ২০২২ সাল থেকে খালে এ বাঁধ দিয়ে মাটির ব্যবসা করে আসছে। এতে বৃষ্টি হলেই পানি সরতে না পেরে ক্ষেত পানিতে ডুবে ফসল নষ্ট হয়ে যায় ও শুকনো মৌসুমে পানির অভাবে চাষাবাদ করা যায় না। তাই বাঁধ কেটে খালটি দখলমুক্ত করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবেদন করা হয়েছে। হারুন সাদেকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি, তবে তার ম্যানেজার আবুল খায়ের বলেন, আমরা সবার সঙ্গে যোগাযোগ করে বাঁধ দিয়েছি। তিনি (হারুন) কয়েকদিনের মধ্যে দেশে আসলে কি করবে সেটা তিনি জানেন। নোয়াগাঁও ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কাজী মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন বলেন, খালটির প্রস্থ কোথাও ৩০ কোথাও ৪০ ফুট হবে। বাঁধ দেয়ার পর আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে বাঁধ কেটে দেয়ার জন্য বলেছি।
কিন্তু এখনো বাঁধ কাটছে কিনা আমার জানা নাই। না কেটে থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করবো। নোয়াগাঁও ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আবদুল মুকতাদির বলেন, খালে বাঁধ দিয়ে ফসলি জমি টপসয়েল ও পুকুর খনন করে মাটি নিতে দেখেছি। এতে চাষাবাদ সমস্যা হচ্ছে এটাও সত্য, কিন্তু কৃষকরা এ ব্যাপারে আমার কাছে অভিযোগ দেয়নি। নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল পাটোয়ারী বলেন, হারুন সাদেক খালে বাঁধ দিয়ে মাটি আনা-নেয়ার ফলে কৃষকদের চাষাবাদে ক্ষতি করছে, এটা আমাকে অনেকে জানিয়েছেন। আমি আগের নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করছি। তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেননি। রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ শারমিন ইসলাম বলেন, এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছি, সরজমিন তদন্ত করে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।