ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বাংলারজমিন

‘খাবার চাই, নইলে মায়ের চাকরি ফেরত চাই’

জুড়ী (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
১ জুন ২০২৩, বৃহস্পতিবার
mzamin

গত মঙ্গলবার সকাল ১০টা। মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা পরিষদ ভবনে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আসা শুরু করেছেন। সবার দৃষ্টি তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এর কার্যালয়ের সামনে প্রতিবন্ধী স্বামী ও দুই শিশু সন্তান নিয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান নেয়া তকমিনা বেগমের দিকে। খবর পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীরাও হাজির হন সেখানে। সরজমিন দেখা যায়, মাদ্রাসার আয়ার চাকরিতে পুনর্বহাল ও বেতন-ভাতা ফিরে পাওয়ার দাবিতে ইউএনও কার্যালয়ের সামনে স্বামী-সন্তান নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন তকমিনা। স্বামী মহীউদ্দীন ও দুই শিশু সন্তান রাবেয়া আক্তার (৮) এবং জুনায়েদ আহমদ (৫)কে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। তাদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে ‘খাবার চাই, নইলে মায়ের চাকরি ফেরত চাই’ ‘আমার মা চাকরি হারালেন কেন?’ এসব লেখা। 

সেখানে প্রায় একঘণ্টা অবস্থান নেন তারা। তকমিনা বলেন, ‘নয়াগ্রাম শিমুলতলা দাখিল মাদ্রাসার আয়া পদে কয়েকমাস পূর্বে আমাকে নিয়োগ দেয়া হয়।  মাদ্রাসার কিছু জমি নিয়ে স্থানীয় এক ব্যক্তির সঙ্গে কর্তৃপক্ষের বিরোধ চলছিল।  গত ১৫ই এপ্রিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মনিরুল ইসলাম বেতন সংক্রান্ত কাজ আছে বলে আমাকে মৌলভীবাজার নিয়ে যান।

বিজ্ঞাপন
সেখানে নিয়ে আমার চাকরি চলে যাওয়ার ভয় দেখিয়ে কয়েকটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে জমি নিয়ে বিরোধ চলা জুমন আহমদের বিরুদ্ধে মামলা করান।’ তকমিনা বলেন, ‘পরে আমি বিষয়টি বুঝতে পেরে এর প্রতিবাদ করি ও আদালতে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করি। 

এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে মাদ্রাসা কমিটি বরখাস্ত করে আমার বেতন বন্ধ করে দেয়। বেতন-ভাতা বন্ধ হওয়ায় আমার শারীরিক প্রতিবন্ধী স্বামী ও ছেলে-মেয়েদেরকে নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছি।’ তকমিনার অভিযোগের বিষয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনিরুল ইসলাম বলেন, তকমিনা আমাদেরকে না জানিয়ে নিজে গিয়ে আদালতে মামলা করেছিলেন। মামলায় মাদ্রাসার নাম আসায় প্রতিষ্ঠানের বদনাম হয়েছে। অন্যদিকে, তিনি আমার এবং মাদ্রাসার সুপারের সঙ্গেও অশালীন আচরণ করেছেন। এর প্রেক্ষিতে আমরা তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা বুধবার দুপুরে মুঠোফোনে মানবজমিনকে বলেন, আদালতের নির্দেশনার পর আমরা সরজমিন পরিদর্শন করেছি ও আমাদের কার্যালয়ে শুনানি করেছি। বাদী, বিবাদী ও স্থানীয়দের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আদালতে আমরা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছি। মামলায়  বিবাদীদের প্রতি আরোপিত অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় এবং তকমিনা বেগমকে প্রলোভন দেখিয়ে মামলা করানোয় মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি ও সাক্ষীদের শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে।

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

সিন্ডিকেট চক্রের ঈদ বাণিজ্য/ ট্রেনের ১০৫৩ টাকার এসি চেয়ার ২৫০০

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status