ঢাকা, ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

রাষ্ট্রপক্ষকে হাইকোর্ট

জেসমিনকে র‍্যাব আটক করতে পারে কিনা?

স্টাফ রিপোর্টার
২৯ মার্চ ২০২৩, বুধবার
mzamin

কারও অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব কাউকে  আটক, গ্রেপ্তার কিংবা তুলে নিতে পারে কিনা। র‌্যাব একটি বিশেষ বাহিনী। জেসমিনকে আটক, গ্রেপ্তার কিংবা তুলে নেয়ার আইনগত এখতিয়ার র‌্যাবের আছে কিনা, রাষ্ট্রপক্ষের কাছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া, আটকের পর সুলতানা জেসমিনকে সম্মানজনক জায়গায় (থানা অথবা কার্যালয়ে) নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল কিনা এবং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সময়ের ব্যবহার আইনানুগ হয়েছে কিনা, হাইকোর্ট সে প্রশ্নও রাখেন। গতকাল বিচারপতি   
ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে এমন প্রশ্ন রাখেন। আদালত বলেন, কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। ন্যায়বিচার যেন পায়। আমরা সেটাই করবো। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে মৃত্যুর কারণ, কী কারণে তার মৃত্যু হলো। আইনগতভাবে কাউকে র‌্যাব তুলে নিতে পারে কিনা।

বিজ্ঞাপন
এরপর আদালত আগামী ৫ই এপ্রিল দুপুর ২টায় পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করেন। 

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। অপরদিকে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। দুপুরে শুনানি শুরু হলে রিটকারী আইনজীবী আদালতকে বলেন, র‌্যাব একটি বিশেষ বাহিনী। এই বাহিনী একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে করা হয়।  ডাকাতি রোধ, মাদ্রকদ্রব্য রোধ ও খুন খারাবি  বন্ধে কর্মকা- পরিচালনা মূলত তাদের প্রধান কাজ। আইন অনুযায়ী কারও অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব কাউকে আটক করতে পারে না। তাছাড়া আটককৃত ব্যক্তিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করার বিধান রয়েছে। কিন্তু র‌্যাব তা করেনি। র‌্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যু কোনোভাবেই মানা যায় না। রিটকারী আইনজীবী র‌্যাব হেফাজতে ওই নারীর মৃত্যুর ঘটনায় হাইকোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্তের নির্দেশনা চান। জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতকে বলেন, আমার লার্নেড ফ্রেন্ড সঠিকভাবে সাবমিশন দেননি।  আমার ফ্রেন্ড ভুল ইনফরমেশন তুলে ধরেছেন। র‌্যাব হেফাজতে ওই নারীর মৃত্যু হয়নি। পরে আদালত র‌্যাবের তুলে নেয়া বিষয়ে প্রশ্ন করেন। জবাবে  অ্যাটর্নি জেনারেল তার (সুলতানা জেসমিন) বিরুদ্ধে একটি মামলা ও অভিযোগ ছিল বলে আদালতকে জানান। সুলতানা জেসমিনের উচ্চ রক্তচাপ ছিল। তার মৃত্যু হয়েছে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে। তিনি বলেন, গত ২২শে মার্চ নওগাঁ সদরের নওজোয়ান মাঠের সামনে থেকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা অনুসারে সুলতানা জেসমিনকে আটক করা হয়। পরে জনসাধারণের সামনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে র‌্যাব। তিনি স্বীকারও করেন অনেক কিছু। তার আগে আটক ওই নারীর মোবাইল ফোন থেকে অভিযোগ সংক্রান্ত তথ্য ও নথি উদ্ধার করা হয়। ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় র‌্যাব ওই নারীকে আটকে রাখেনি দাবি করে আমিন উদ্দিন বলেন, পুলিশে সোপর্দ করতে থানায় নিয়ে যাওয়ার পথে আটক নারী অসুস্থ হয়ে পড়লে দুপুর সোয়া ১টায় প্রথমে তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন তার উচ্চ  রক্তচাপ দেখা দেয়।  এরপর ওইদিন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তিতে রক্তক্ষরণজনিত সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে এটি সম্পূর্ণভাবে ভুল যে, ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ওই নারীকে রাখা হয়েছে।
শুনানির একপর্যায়ে আদালত বলেন, কোনো অনুমানের ভিত্তিতে আমরা ঘটনাটি বিবেচনা করবো না। আটকের পর তাকে পুলিশে সোপর্দ করার কথা। সেটি কিন্তু প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে জিজ্ঞাসাবাদ পর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়েছেন। তার মাথায় আঘাতের কথা বলা হচ্ছে। দেশবাসীর প্রশ্ন, তাকে নির্যাতন করা হয়েছিল কিনা। বিষয়টি পরিষ্কার করতে হবে।  সেজন্য ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আমরা দেখতে চাই। র‌্যাবকে কি কি এখতিয়ার, ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় র‌্যাব কাউকে আটক করতে পারে কিনা, জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে কিনা। সেজন্য র‌্যাবের এখতিয়ার জানাটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আদালত অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে দু’টি প্রশ্ন করে জানতে চান র‌্যাব কি তাকে তুলে নিয়ে যেতে পারে?  একজন নাগরিক যত জঘন্য অপরাধ করুক না কেন? তার মৌলিক অধিকার আছে। মেইন প্রশ্ন হচ্ছে আইন। এখানে পুলিশ কাউকে আটক করতে পারে কিন্তু র‌্যাব কি পারে? দেশবাসীর প্রশ্ন র‌্যাব তাকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করেছে কিনা? কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং ন্যায়বিচার যেন পায়। আমাদেরও প্রশ্ন হচ্ছে মৃত্যুর কারণ। কী কারণে তার মৃত্যু হলো। তুলে নিতে পারে কিনা। এরপর আদালত পরবরর্তী শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেন।

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status