শেষের পাতা
শাহবাগে হঠাৎ করে এই নাটক কেন
স্টাফ রিপোর্টার
১৩ মে ২০২৫, মঙ্গলবার
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, শাহবাগে হঠাৎ করে এই নাটক কেন? যে শাহবাগ আপনারা বন্ধ করেছেন, এখানে মিছিল-মিটিং করা যাবে না, সেখানে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সরকারের দল এনসিপি’র লোকেরা মিছিল-মিটিং করে কীভাবে?’ গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে ‘সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে’ এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সাইদ হাসান মিন্টু।
তিনি বলেন, আরও জানি কি কি ঘটাচ্ছে। নইলে শাহবাগের এই নাটক কেন হঠাৎ করে। যে শাহবাগ আপনারা বন্ধ করেছেন, যে শাহবাগের এই সমস্ত এলাকাতে মিছিল-মিটিং করা যাবে না, সেখানে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায়, সরকারের দল এনসিপি’র লোকেরা ওখানে মিছিল-মিটিং করে কীভাবে? আর কোন দাবিতে মিছিল-মিটিং করলো। কি দাবি? আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে হবে। তো আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে না করছে কে ভাই? কে না করছে? বিএনপি না করছে? খুব চেষ্টা করছে চালানোর জন্য বিএনপি নাকি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করতে চায়। আমাদের ঠেকায় পড়ে গেছে, বড় ঠেকায় পড়ে গেছে।
মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি, এই দেশে অনেক বিদেশির আগমন ঘটেছে, সন্দেহভাজন বিদেশিদের আগমন ঘটেছে। বিভিন্ন সময়ে তারা বিভিন্ন মিশন নিয়ে আসতেছে। আজকে ফেসবুকে আপনারা সার্চ দিলে পাবেন এক ভদ্রলোক বলছিলেন, এখন বলতে পারছি না। তবে আমার ধারণা এই সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে এই অপকর্মগুলো করছে। এই মুহূর্তে আমি এই সরকারকে অন্তত আমি আমার কথা বলছি, নিরপেক্ষ ভাবতে পারছি না। তারা কোন উদ্দেশ্যে কারও পারপাস সার্ভ করছে। এই সরকার কোনো অবস্থাতেই গণবান্ধব কিংবা দেশপ্রেমিক সরকার নয়। আমি পরিষ্কার ভাষায় এটা বলতে চাই- আমার দেশ, দেশের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে কেন?
তিনি বলেন, আমার প্রশ্নগুলোর জবাব দিয়ে এই সরকারকে প্রমাণ করতে হবে তারা দেশপ্রেমিক সরকার। আমার প্রশ্নগুলোর সঠিক জবাব পাওয়ার পরে আমাকে যে শাস্তি যেখান থেকে দেয়া হয় সেটা মাথা পেতে নেবো। আমি আমার কথা বললাম, আমি জানি- এটা যথাযথ ফোরাম নয়, হয়তো আরও বড় কোনো জায়গায় বলা উচিত ছিল। কিন্তু আমি আমার মনের ক্ষোভ ধরে রাখতে পারিনি, আমি আপনাদের সামনে প্রকাশ করলাম। আমার কথাটা একটু আপনারা মনে ধারণ করবেন এবং দেশবাসীর কাছে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করবেন। এখন কিন্তু আমরা খুব ভালো অবস্থানে নাই।
দেশে সার্কাস হচ্ছে মন্তব্য করে আব্বাস বলেন, আজকে আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে আছি রাজনৈতিক অবস্থানে, আমরা কয়েকদিন যাবৎ দেখতে পারছি, বাংলাদেশে একটা সার্কাস হচ্ছে, নাটক জাতীয় কিছু একটা হচ্ছে, আমার কাছে মনে হচ্ছে আরকি। আমি আবার কথাগুলো আটকিয়ে রাখতে পারি না, আমার একটা বাজে অভ্যাস। আমার কাছে সাধারণত নাটক-ফাটক মনে হচ্ছে। আগে আমরা দেখতাম যে, শেখ হাসিনা কিছু করার আগে কোথাও একটা অপকর্ম ঘটাতো, আমরা বুঝতাম সে কিছু একটা ঘটাবে। একদিকে আমাদের দৃষ্টি নিয়ে যেতো আর কাজ এদিক দিয়ে করতো।
তিনি বলেন, দেখেন হামিদ সাহেব চলে গেলেন কি সুন্দর। হামিদ সাহেব কোন দিক দিয়ে চলে গেলেন? ভিআইপি দিয়ে। পত্র-পত্রিকায় দেখলাম উনি নাকি গেঞ্জি পরে, লুঙ্গি পরে, মাস্ক লাগিয়ে গিয়েছেন, লুঙ্গি পরুক, গেঞ্জি পরুক, ভিআিইপিতে ঢুকলেন কীভাবে, যদি একান্ত পরিচিত না হয় কিংবা ভিআইপি লোক না হয়। সেই ভিআইপি সুবিধা নিয়ে এয়ারপোর্ট দিয়ে উনি পার হয়ে গেলেন, আর আমার সরকার বলে কিছু জানি না। ৬২২ জন আওয়ামী লীগের লোক পার হয়ে গেল, এই সরকার বলে আমরা কিছু জানি না। জানেন কি?
আব্বাস বলেন, প্রশাসনে বিভিন্ন এলাকায় পরিবর্তন শুরু হয়ে গেছে। বিএনপি কর্মকর্তাদের বাতিল করে সেখানে কমপক্ষে জামায়াতের লোকজনকে দিতে হবে, জামায়াত না হলে আওয়ামী লীগ দিতে হবে। আপনারা খেয়াল করে দেখবেন, থানা-পুলিশ-কোর্ট-কাচারি, সচিবালয়ের ভেতরে এই কর্মকাণ্ডগুলো শুরু হয়ে গেছে, বিএনপিকে রাখা যাবে না। এই যে বিএনপি নিধন আন্দোলন শুরু হয়েছে তারই একটি বিষয় হলো ৬২২ জন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগারদের পালিয়ে যেতে দেয়া, খুনির আসামি আবদুল হামিদ সাহেবকে পালিয়ে যেতে দেয়া, এটা হলো একটি বিষয়। এই সরকারের মধ্যে অবস্থানরত অনেক উপদেষ্টা যারা বাংলাদেশের নাগরিকই নন। তারা এই দেশ পরিচালনা করছেন। এসব থেকে নজর ফিরিয়ে নিতে সরকার নানা কিছু ইস্যু করছে।
আব্বাস বলেন, তিনটা এলাকার নাম বলছি, সেন্টমার্টিন, সাজেক, বাঘাইছড়ি, এই সমস্ত এলাকা আমাদের যাওয়াটা দুরূহ হয়ে গেছে। আবার শুনি, একটা জায়গায় নাকি করিডোর দেয়া হবে। কিসের করিডোর? মানবিক করিডোর। আরে ভাই, বিশ্বের কোনো ডিকশনারিতে মানবিক করিডোরের নামে কোনো শব্দ আছে কি, কোথায় থেকে এসব আবিষ্কার করেন? আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কোনো করিডোর কিংবা প্যাসেজ দেয়ার কোনো সুযোগ নাই জনগণের মতামত ছাড়া। জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার সিদ্ধান্ত নেবে তারা কি করবে?