শেষের পাতা
রেমিট্যান্স আহরণে রেকর্ড, ফের শীর্ষে সৌদি আরব
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১৩ মে ২০২৫, মঙ্গলবারচলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। সবশেষ ৭ই মে পর্যন্ত দেশে ২৫.২৭ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এর আগে দেশে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় এসেছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৪.৭৭ বিলিয়ন ডলার। এদিকে রেমিট্যান্স আহরণে আবারো শীর্ষে উঠে এসেছে সৌদি আরব। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক এ তথ্য জানিয়েছে।
রেমিট্যান্সের আয়ে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রয়েছে সৌদি আরব প্রবাসীদের। যদিও ২০২২ সালের জুলাই থেকে গত মার্চ পর্যন্ত রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষ দেশ হিসেবে কখনো সংযুক্ত আরব আমিরাত, কখনো যুক্তরাষ্ট্র, কখনো যুক্তরাজ্য উঠে এসেছিল। গত এপ্রিল মাসে আবার শীর্ষ দেশ হিসেবে সৌদি আরবের নাম উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, জুলাই ২০২৩ থেকে ৭ই মে ২০২৪ পর্যন্ত দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯.৭২ বিলিয়ন ডলার। আর চলতি অর্থবছরে ৭ই মে ২০২৫ পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছে ২৫.২৭ বিলিয়ন ডলার। এ মাসের প্রথম সাত দিনে এসেছে ৭৩ কোটি ৫ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২২.৩ শতাংশ বেশি। সে সময়ে এসেছিল ৬০ কোটি ১ লাখ ডলার। আর মে মাসের প্রথম ১১ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৯২ কোটি ২ লাখ ডলার, যা গত বছরের চেয়ে ১৩ শতাংশ বেশি। সে সময় এসেছিল ৮১ কোটি ৪ লাখ ডলার।
মাসের হিসাবে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে মার্চে। এ মাসে দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল রেকর্ড ৩২৯ কোটি ৫৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার। ঈদের পর এপ্রিলে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ২৭৫ কোটি ১৯ লাখ ৪০ হাজার ডলার। মাসের হিসাবে যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সের রেকর্ড। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সৌদি আরব থেকে। এরপর শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় রয়েছে- সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য (ইউকে), মালয়েশিয়া, কুয়েত, ইতালি, ওমান, সিঙ্গাপুর ও কাতার।
বিদায়ী এপ্রিলে সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৯ কোটি ১৪ লাখ ২০ হাজার ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৭ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। তবে গত জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ- এই তিন মাসে প্রবাসী আয় পাঠানোয় শীর্ষে ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এপ্রিলে দেশটি থেকে ৩৩ কোটি সাত লাখ ৪০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়ে নেমে গেছে তিনে। এ ছাড়া আলোচিত সময়ে যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, কুয়েত, ইতালি, ওমান, সিঙ্গাপুর ও কাতার থেকে যথাক্রমে রেমিট্যান্স এসেছে ২৯ কোটি ৪১ লাখ ডলার, ২১ কোটি ৯ লাখ ডলার, ১৬ কোটি ২৭ লাখ ৩০ হাজার, ১৫ কোটি পাঁচ লাখ ৯০ হাজার ডলার, ১৪ কোটি ৮৩ লাখ ৪০ হাজার ডলার, ১১ কোটি ৮৫ লাখ ৮০ হাজার ডলার ও ১০ কোটি ৪২ লাখ ৫০ হাজার ডলার।
এ ছাড়া বাহরাইন থেকে এসেছে ছয় কোটি ৪৫ লাখ ৩০ হাজার ডলার, ফ্রান্স থেকে তিন কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ডলার, সাউথ আফ্রিকা থেকে দুই কোটি ৮৮ লাখ ৬০ হাজার ডলার, সাউথ কোরিয়া থেকে দুই কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ডলার, কানাডা থেকে দুই কোটি ৩৭ লাখ ডলার, জার্মানি থেকে এক কোটি ৬৯ লাখ ২০ হাজার ডলার, অস্ট্রেলিয়া থেকে এক কোটি ৬৩ লাখ ৪০ হাজার ডলার, গ্রিস থেকে এক কোটি ৪৭ লাখ ১০ হাজার ডলার, জর্ডান থেকে এক কোটি ৪৪ লাখ ৭০ হাজার ডলার, মালদ্বীপ থেকে এক কোটি ২৫ লাখ ১০ হাজার ডলার।
স্পেন থেকে এক কোটি ২৫ লাখ ডলার, মরিশাস থেকে এক কোটি ১৩ লাখ ৭০ হাজার ডলার, ব্রুনাই দারুসসালাম থেকে ৮৫ লাখ ৭০ হাজার ডলার, জাপান থেকে ৮৫ লাখ ২০ হাজার ডলার, পর্তুগাল থেকে ৭৩ লাখ ৮০ হাজার ডলার, ইরাক থেকে ৭৩ লাখ ডলার, লেবানন ৬৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা, পোল্যান্ড ৫৯ লাখ ২০ হাজার ডলার, সুইডেন থেকে ৫৫ লাখ ডলার এবং ফিনল্যান্ড থেকে ৩৮ লাখ ১০ হাজার ডলার এসেছে। অন্যান্য দেশ মিলে প্রবাসী আয় এসেছে চার কোটি ২১ লাখ ৮০ হাজার ডলার।