ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শেষের পাতা

দুবাই’র স্বর্ণ সিলেটে গায়েব, তল্লাশি করে ‘কাঠগড়ায়’ এস আই

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
২৮ মার্চ ২০২৩, মঙ্গলবার
mzamin

মাহবুব আহমদ। বাড়ি ঢাকায়। দুবাইয়ে ব্যবসা করেন। সেই সুবাদে তার সম্পর্ক সিলেটের শিবেরবাজারের বড়ফৌদ গ্রামের প্রবাসী ইয়ামীন আহমদের সঙ্গে। মাহবুব গত ১৮ই মার্চ দেশে আসা ইয়ামীনের কাছে সাড়ে ৮ ভরি স্বর্ণ দিয়েছিলেন। ওই স্বর্ণ তার  বোনের বিয়েতে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেশে এসে স্বর্ণসহ ‘গায়েব’ হয়ে যান ইয়ামীন। তাকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না মাহবুব। একই সময় দেশে আসেন ইয়ামীনের চাচাতো ভাই কামরুজ্জামান। এদিকে- ইয়ামীনের খোঁজ না পেয়ে দেশে আসা কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে জালালাবাদ থানায় নালিশ করেন প্রবাসে থাকা মাহবুব।

বিজ্ঞাপন
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে গত ২৩শে মার্চ ভোররাতে সাদা পোশাকে গিয়ে কামরুজ্জামানের বসতঘরে তালাভেঙে তল্লাশি চালিয়েছেন শিবেরবাজার ফাঁড়ির এস আই সালাহ উদ্দিন। ‘অযাচিত’ তল্লাশির ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন কামরুজ্জামান। গতকাল সিলেটের পুলিশ কমিশনারের কাছে দেয়া অভিযোগে তিনি দাবি করেন- কোনো ধরনের মামলা না থাকলেও গভীর রাতে তল্লাশির নামে ঘরের মালামাল তছনছ এবং ওই প্রবাসীর মা বোনকে হুমকি এবং প্রবাসীকে গুম করার হুমকি দেয়া হয়েছে। দুবাই প্রবাসী কামরুজ্জামান জালালাবাদ থানার বড়ফৌদ গ্রামের মৃত আব্দুন নুরের ছেলে।

 লিখিত অভিযোগে প্রবাসী কামরুজ্জামান উল্লেখ করেন- ২০০৮ থেকে তিনি রেমিট্যান্স যোদ্ধা হিসেবে দুবাই বসবাস করে আসছেন। সেখানে ব্যবসা বাণিজ্য করছেন। বিভিন্ন সময়ে দেশে আসা- যাওয়া করে থাকেন তিনি। সর্বশেষ গত ১৮ই মার্চ দুবাই থেকে দেশে ফিরে পৈতৃক বাড়ি বড়ফৌদ গ্রামে বসবাস করছিলেন। গত বুধবার স্ত্রীকে নিয়ে সিলেটনগরীর বাগবাড়িতে চাচার বাড়িতে বেড়াতে যান ও রাতযাপন করেন। বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে তার গ্রামের বাড়ি বড়ফৌদে সাদা পোশাকে শিবেরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই সালাউদ্দিন একদল লোককে নিয়ে প্রবেশ করে। এ সময় তারা প্রবাসী কামরুজ্জামানের খোঁজ করে। তাকে না পেয়ে ঘরের আলমারির তালা ভেঙে ও লাগেজে তল্লাশি চালায়। এ সময় ঘরে থাকা দুবাইয়ের ব্যবসায়িক ডকুমেন্টস ও দলিলপত্র তছনছ করে ক্ষতিসাধন করে। যাওয়ার সময় কামরুজ্জামানের মা বোনকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে যায়। 

পরদিন জালালাবাদ থানায় যোগাযোগ করে ওই প্রবাসী জানতে পারেন তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা কিংবা কোনো অভিযোগ নেই। এ অবস্থায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ওই প্রবাসী। এ ব্যাপারে অভিযোগকারী কামরুজ্জামান বলেন- বেআইনি ভাবে পুলিশের কোনো ড্রেস ও আইডি না থাকা সত্ত্বেও পুলিশ পরিচয়ে আমার গৃহের আলমারির তালা ভেঙে মালামাল তছনছ আইন পরিপন্থি ও দস্যুতার শামিল। আমি দুবাইয়ে ব্যবসা করে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাই। কোনো মামলা ছাড়া গভীর রাতে বাড়িতে তল্লাশি ও গুম করার হুমকিতে নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছি। এদিকে- প্রবাসীর অভিযোগ পেয়ে গতকাল থেকে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। জালালাবাদ থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার গতকাল নিজে গিয়ে ঘটনার তদন্ত করেন। অভিযুক্ত এস আই সালাহ উদ্দিন গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন- দুবাই প্রবাসী মাহবুব আহমদ স্বর্ণ গায়েবের অভিযোগ করেছেন কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে। 

এই অভিযোগ থানায় আসার পর তার কাছে তদন্ত এবং আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দেয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে তিনি স্বর্ণ উদ্ধারের জন্য অভিযান চালিয়েছেন। তবে- ওই সময় স্বর্ণ পাওয়া যায়নি। হুমকি প্রদানের অভিযোগ সত্য নয় বলে জানান তিনি। দুবাইয়ে থাকা মাহবুব আহমদ জানিয়েছেন-তার বোনের বিয়ের জন্য তিনি ১০০ গ্রাম রেডি স্বর্ণ দিয়েছিলেন ইয়ামীনের কাছে। কিন্তু কামরুজ্জামানের প্ররোচনায় ইয়ামীন স্বর্ণ গায়ের করে ফেলেছে। তিনি জানান- আমি স্বর্ণ দেয়ার আগে তাকে বিমানের টিকিট কিনে দেই। আমার দেয়া টিকিট নিয়ে ইয়ামীন দেশে গেছে। একই সময় দেশে যান কামরুজ্জামান। তদন্তে থাকা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন- ঘটনাটি আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের কিনা- সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি কেউ জড়িত থাকে অবশ্যই তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status