বিশ্বজমিন
‘ইমরান খানের বাসভবন সন্ত্রাসীদের বাঙ্কার ও বোমা তৈরির কারখানা’
মানবজমিন ডেস্ক
২১ মার্চ ২০২৩, মঙ্গলবারইমরান খান কোনো রাজনীতিবিদ নন, তিনি একজন সন্ত্রাসী। এভাবেই সাবেক পাক প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণের নিশানা করলেন দেশটির তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব। তিনি আরও বলেন, ইমরান খানের জামান পার্ক বাসভবন সন্ত্রাসীদের একটি বাঙ্কার এবং পেট্রোল বোমা তৈরির ল্যাবরেটরি। রোববার লাহোরে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে এসব কথা বলেন মরিয়ম। এ খবর দিয়েছে জিও টিভি। খবরে জানানো হয়, ইমরান খান পাকিস্তানে আবারো গৃহযুদ্ধ শুরুর পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন মরিয়ম আওরঙ্গজেব। সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলেন, যদি রাষ্ট্র, বিচার বিভাগ এবং পুলিশের নিয়মকে এভাবে চ্যালেঞ্জ করা হয় তাহলে দেশে একটি গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। পুলিশের কাজ হচ্ছে, আদালতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। অপরদিকে আদালত হচ্ছে- ন্যায়বিচারের অভিভাবক।
আদালত যদি এখন পুলিশের বিষয়ে আপস করে তাহলে এই দেশে গৃহযুদ্ধ হবে। প্রতিটি রাস্তায় আলাদা আলাদা আইন তৈরি হবে।
এই সময় তিনি তিনি রাজনৈতিক সকল প্রতিপক্ষকে মৃত্যুর মুখে ফেলেছিলেন। এমনকি তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বোন ও মেয়েদেরও রেহাই দেননি। কাউকে কাউকে হাসপাতালের বিছানা থেকেও গ্রেপ্তার করেছিলেন। পিএমএল-এন নেতা আরও দাবি করেন, ইমরান খান তার দুঃশাসনের সময় পাকিস্তানের জাতীয় অর্থনীতি ধ্বংস করেন। তিনি জনগণকে বেকার করে দিয়েছিলেন। তাদের খাদ্য নিরাপত্তা ধ্বংস করেছিলেন। পিটিআই শাসনের সময়, ময়দা, চিনি, রান্নার তেল, বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের শুল্কের মতো ভোজ্য জিনিসের দাম আকাশচুম্বী হয়। এটি সাধারণ মানুষকে ভয়াবহভাবে আঘাত করেছিল। মন্ত্রী অভিযোগ করেন, ইমরান খান ক্ষমতা হারিয়ে পাগল হয়ে গেছেন, এখন রাজনৈতিক সন্ত্রাসী থেকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে হামলাকারী সন্ত্রাসী হয়েছেন। গত বছর পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) সরকার ক্ষমতায় আসার পর ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব ছিল। কিন্তু আমি চাইনি ইমরান খান আরেকটি ‘ভিকটিম কার্ড’ খেলার সুযোগ পাক। মরিয়ম বলেন, ইমরান খানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও তোশাখানা উপহার চুরিসহ যেসব মামলা দায়ের করা হয়েছিল তার ওপরে বর্তমান সরকারের কোনো হাতই ছিল না। ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো জবাব ছিল না।
তিনি অগ্নিসংযোগ ও পুলিশের ওপর হামলার মাধ্যমে দেশকে জ্বালিয়ে দিয়েছেন। ইমরান খান দাবি করে আসছেন, তার জীবন বিপদে পড়েছে, তিনি অসুস্থ, তিনি একজন বয়স্ক ব্যক্তি এবং এসব কারণে আদালতে হাজির হতে পারছেন না। তার আরও অভিযোগ, গ্রেপ্তারের পর সরকার তাকে হত্যা করবে, আদালতে উপস্থিত না হওয়ার কারণ দেখিয়ে। তবে মরিয়ম বলেন, পুলিশ শুধুমাত্র আদালতের নির্দেশ মেনে চলছিল, যেখানে পিটিআই গুণ্ডারা পুলিশের ওপর হামলা করে এবং ভ্যান পুড়িয়ে দেয়। শনিবার এটি প্রমাণিত হয়েছে যে, ইমরান খানের জীবনের হুমকির দাবিটি ভুয়া। মন্ত্রী বলেন, ইমরান খান একজন মিথ্যাবাদী, একজন সন্ত্রাসী এবং কাপুরুষ। জনগণ গতকাল সবকিছু দেখেছে। এই কাপুরুষ বিদেশি এজেন্ট আদালতে হাজির হতে চায়নি। ইমরান গুণ্ডামি ও সন্ত্রাস দিয়ে আদালতকে ভয় দেখাচ্ছে।
মরিয়ম আওরঙ্গজেব ইমরানের প্রতি ক্ষোভ দেখিয়ে বলেন, পুলিশ শুধুমাত্র আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের চেষ্টা করছিল। কিন্তু ইমরান খানের সহিংস অনুসারীরা তাদের ওপর ভয়াবহ আক্রমণ চালায়। ইসলামাবাদের ঘটনার আগে জামান পার্কে কী ঘটেছিল তা জনগণ দেখেছে। সমাজকে রক্ষা করা পুলিশের দায়িত্ব ছিল কিন্তু একজন সন্ত্রাসী পাল্টা হামলা চালিয়েছে। মরিয়ম প্রশ্ন তোলেন যে, এভাবে বারবার রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আক্রমণ করার পরেও পিটিআইকে একটি রাজনৈতিক দল বলা যেতে পারে কিনা। তিনি বলেন, আগে আদালত এক মিনিট বিলম্ব হলেও জামিন বাতিল করে দিত। আর এখন আদালতে লাঠি, পাথর, পেট্রোল বোমা এবং গুলতি নিয়ে আক্রমণ হচ্ছে, তবু কারও কোনো সমস্যা হচ্ছে না। বিচার ব্যবস্থা এবং আইনের এই রহস্যময় নীরবতা এই দেশের জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। ইমরান খানের জামান পার্কের বাসভবনে তল্লাশি করার সময় পুলিশ পেট্রোল বোমা, কালাশনিকভ রাইফেল, অস্ত্র এবং গুলতি উদ্ধার করেছে। সেখানে শত শত সন্ত্রাসীদের খুঁজে পেয়েছে। তার বাসভবন সন্ত্রাসীদের বাঙ্কারে পরিণত হয়েছে।