বাংলারজমিন
‘বেঁচে থাকার আর্তনাদ ও বুকফাটা চিৎকারেও মন গলেনি পাষণ্ডদের’
দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, শুক্রবার
বেঁচে থাকার ও বুকফাটা চিৎকার করলেও কলেজছাত্রী হাফসা (২০)কে কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। মৃত্যুর সময় তার ফোনে রেকর্ডার চালু থাকায় আগুনে পুড়ে যাওয়ার সময় হাফসার বেঁচে থাকার আকুতি ও আর্তনাদের রেকর্ড শুনে হতবাক হয়ে পড়েছেন আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী। ভয়াবহ এই লোমহর্ষক ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে দশমিনা উপজেলার সাধারণ মানুষকে। এ ঘটনায় দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। হাফসার ফোনের রেকর্ড ও আগুন দেয়া বিভিন্ন সরঞ্জাম গতকাল আলামত হিসেবে জব্দ করেছে পুলিশ। দশমিনা থানা ও স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গত ২১শে জানুয়ারি উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের খলিশাখালী গ্রামের বাসিন্দা মো. শাহজাহান মৃধার ছোট মেয়ে ও আলীপুরা কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের মেধাবী ছাত্রী হাফসা বেগম দশমিনা ইউনিয়নের কাটাখালী এলাকায় তার ভাই রিয়াজ মৃধার শশুরবাড়ি বেড়াতে আসে। জ্বিনের আছর আছে অভিযোগে ভাবী আয়শা বেগম নিপা হাফসাকে স্থানীয় মনির হোসেন এর স্ত্রী জ্বিন তাড়ানো ফকির নুরজাহান বেগমের কাছে নিয়ে যায়। ফকির নুরজাহান হাফসাকে নিয়ে রাতে তার বাড়িতে আসতে বলেন। রাতে হাফসার ভাবী নিপা ও তার মা হাফসাকে নিয়ে ফকিরের বাড়িতে যায়। এ সময় ফকির নুরজাহান তাদের বাড়ির অদূরে একটি বিলে নিয়ে হাফসাকে মারধর করে গায়ে কেরসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।
পাঠকের মতামত
এই রিপোর্ট পড়ার পরে কি বলব, আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি.....
মানুষ এত জগন্ন্য, হিংসা পরায়ণ, নিকৃষ্ট যে এক জন নিরাপরাধ মানুষ কে হত্যা করছে- কেউবা সম্পদের লোভে, কেউবা ক্ষমতার লোভে, অর্থের লোভে, হিংসায় । খুব সহজ ভাবে এই ভারি অন্যায়, গরহিত কাজ কিছু মানুষ করে যাচ্ছে। কিন্তু এরা সবাই জানে একদিন সব কিছু ফেলে এই পৃথিবী থেকে চলে যেতে হবে। নিরাপরাধ মানুষ কে হত্যা করা মানুষের আইনে যেমন একটা বড় অপরাধ তেমনি স্রিতি কর্তা আল্লাহ তায়ালার আইনে বড় ও অমার্জনীয় অপরাধ। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুয়াআনে বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি স্বেচ্ছাক্রমে মুসলমানকে হত্যা করে, তার শাস্তি জাহান্নাম, তাতেই সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তাকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তার জন্যে ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন। (সুরাহ আন নেসসা আয়াত ৯৩) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্পষ্ট হাদিসে উল্লেখ করেছেনَ: (অনুবাদ: সবচেয়ে বড় পাপ হল: আল্লাহর সাথে অংশীদার করা, একজন নিরীহ আত্মাকে হত্যা করা, পিতামাতার অবাধ্য হওয়া এবং মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া/মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া।) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: " আল্লাহ প্রত্যেকটি পাপ ক্ষমা করে দেন, যে ব্যক্তি কোন মুসলিম কে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করে সে ব্যতীত ।" (সুন্নাহ 3898), আল-কাইয়ুম আল-আসায়াহ, আল-বুখারী আল-আসসাই, আল-কাইয়ুম আল-সাদিক, সুতরং যারা এ কাজ করছেন তাদের উচিত এই সব কাজ থেকে বিরত থাকা - না হলে এর চরম পরিনতির জন্য প্রস্তুত থাকুন।