শেষের পাতা
শ্রীলঙ্কা: ফিলিং স্টেশনে হাজার হাজার গাড়ির অপেক্ষা
মানবজমিন ডেস্ক
২২ মে ২০২২, রবিবারসরকার থেকে বলা হচ্ছে তেল, বিশেষ করে পেট্রোল নেই। তা কেনার মতো অর্থও নেই। ফিলিং স্টেশনগুলোতে পেট্রোল নেই। তবু কে শোনে কার কথা! শ্রীলঙ্কার পেট্রোল পাম্পগুলোর সামনে হাজার হাজার গাড়ির সারি। আছে বাসের সারি। প্রাইভেটকার। আছে মোটরসাইকেল। কারও হাতে তেল নেয়ার জন্য ক্যান। দ্রুত সেখানে পেট্রোল ফুরিয়ে যাচ্ছে। সরকার বলছে, এক জাহাজ পেট্রোল কেনার মতো বৈদেশিক মুদ্রা নেই তাদের হাতে। ফলে পেট্রোল পাম্পের সামনে লোকজনকে ভিড় না করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও একের পর এক গাড়ি বাড়ছে লাইনে। এমন দৃশ্য দেখা গেছে রাজধানী কলম্বোর বিভিন্ন পাম্পে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রী কাঞ্চনা বিজেসেকারা পার্লামেন্টে বলেছেন, পেট্রোল সংকটে দেশ। তার ভাষায়, জাহাজে আসা এক চালান পেট্রোলের দাম পরিশোধ করার মতো ডলার নেই আমাদের কাছে। ২৮শে মার্চ থেকে পেট্রোলবোঝাই একটি জাহাজ নোঙর করে আছে শ্রীলঙ্কার জলসীমায়। এ বছর জানুয়ারির শিপমেন্টের পাওনা পরিশোধ করতে আরও প্রয়োজন ৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার। আর তো বর্তমান চালান! তিনি পার্লামেন্টে বলেন, এ জন্যই আমরা লোকজনকে পেট্রোল পাম্পে লাইনে না দাঁড়াতে অনুরোধ করেছি। ইস্যু এখন ডিজেল নিয়ে নয়। কিন্তু পেট্রোলের লাইনে দয়া করে দাঁড়াবেন না। আমাদের হাতে খুবই সীমিত পরিমাণ পেট্রোল আছে। এই পেট্রোল আমরা অত্যাবশ্যকীয় সেবা খাতকে দেয়ার জন্য চেষ্টা করছি, যেমন এম্বুলেন্স। তিনি বলেন, দেশে এখন পর্যাপ্ত পরিমাণে ডিজেল আছে। মঙ্গলবার আমরা সুপার ডিজেল এবং অটো ডিজেল বিতরণ করেছি দেশের সব ফিলিং স্টেশনে। আগামী মাসে জ্বালানি আমদানির জন্য শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন হবে ৫৩ কোটি ডলার। মন্ত্রী বলেছেন, ভারতের ক্রেডিট লাইন সুবিধা পেলেও প্রতি মাসে শ্রীলঙ্কাকে আরও ৫০ কোটি ডলারের জ্বালানি কিনতে হবে। দুই বছর আগে এ খাতে সরকার যে অর্থ খরচ করেছে, তার তুলনায় এই পরিমাণ প্রায় তিনগুণ। এ মাসের শুরুতে শ্রীলঙ্কাকে বর্তমান ক্রেডিট লাইনের অধীনে আরও ২০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে ভারত। ঋণের ফাঁদে আটকে পড়া দেশটিকে ঋণ হিসাবে ৩০০ কোটি ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারত। কিন্তু জ্বালানি খাতের সমস্যা কিছুতেই মিটছে না। মানুষ তেল, বিশেষ করে পেট্রোলের আশায় ফিলিং স্টেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন।