অনলাইন
সমাবেশে পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ
দেশে চরম ফ্যাসিবাদী শাসন চলছে
স্টাফ রিপোর্টার
(২ বছর আগে) ৯ ডিসেম্বর ২০২২, শুক্রবার, ৫:০২ অপরাহ্ন

দেশে গণতন্ত্র হারিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন পেশাজীবী নেতারা। যে কোন মূল্যে আমরা গণতন্ত্রকে মুক্ত করব। একইসঙ্গে দেশের মানুষকে মুক্ত করে একটি গণতান্ত্রিক সমাজ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করব। এই জন্য যত ত্যাগই স্বীকার করতে হয় বুদ্ধুজীবী পেশাজীবীরা করবে। পেশাজীবী নেতারা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাসসহ সকল রাজবন্দীর মুক্ত এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান।
আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে তারা এসব কথা বলেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা, হত্যা ও বিএনপি মহাসচিবসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।
সমাবেশ বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকার গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি পর্যন্ত আজ নেই। সভা, সমাবেশ করার অধিকার এমন কি বাক স্বাধীনতাও আজ কেড়ে নেয়ে হয়েছে। জনগনের বিরুদ্ধে পুলিশ ও হেলমেট বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে দেশে গুন্ডাতন্ত্র কায়েম করা হয়েছে। দেশের মানুষ আজ অসহায়। মানুষের এসব অধিকার ফিরিয়ে দিতে বিএনপি যে আন্দোলন শুরু করছে, তা আর বিএনপির একার আন্দোলন নেই। এটি জনগণের আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। আর সেই আন্দোলনে পুলিশ বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে। পুলিশ আজ জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এটা সহ্য করার মতো নয়।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের কেন্দ্রিয় নেতা ও এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (অ্যাব) সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে ও বিএসপিপির সদস্য সচিব সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরীর সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, প্রফেসর ড. তাসমেরী এস এ ইসলাম, দ্য নিউনেশ এডিটর মোস্তফা কামাল মজুমদার, অধ্যাপক ডা. আজুজিল হক, অধ্যাপক ডা. আব্দুল কুদ্দুস, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, কৃষিবিদ রাশিদুল হাসান হারুন, কৃষিবিদ ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান, প্রফেসর ড. গোলাম হাফিজ কেনেডি, অধ্যাপক ড. শামসুল আলম সেলিম, অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জল ও রফিকুল ইসলাম, প্রফেসর ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, প্রফেসর নুরুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ, প্রফেসর ড. আকতার হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার ফখরুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার সাখাওয়াত হোসেন, বিপ্লব উজ্জান, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, একেএম মহসিন, শাহিন হাসনাত, রাশিদুল হক, শাহজান আলম সাজু, এম সাঈদ খান প্রমুখ।
সমাবেশে প্রফেসর ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, সভা-সমাবেশ করার অধিকার আমাদের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার এই অধিকার হরণ করে স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট কায়দায় ক্ষমতায় থাকতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। গণতান্ত্রিক অধিকার রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে।'
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, দেশ আজ গভীর সঙ্কটে নিপতিত। দেশে চরম ফ্যাসিবাদী শাসন চলছে। আর এ কারণেই আজ মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাসহ জাতীয় নেতাদের গ্রেপ্তার করেছে। দেশের সবচেয়ে জননন্দিত নেতা বেগম খালেদা জিয়াকেও তারা গৃহবন্দী করে রেখেছে। জনগণের এ আকাক্সক্ষাকে ধারণ করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ সরকারের পদত্যাগ দাবি করছে।
ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার বলেন, দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই, একনায়কতন্ত্র চলছে। দলীয়করণের মাধ্যমে বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে। দেশে গণতন্ত্র নেই বলে আজ বিএনপিকে গণসমাবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
প্রফেসর ড. তাসমেরি এসএ ইসলাম বলেন, দেশ এখন গণতন্ত্রহীন, মানুষ অধিকার হারা। হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে একাত্তর ও নব্বইয়ের মতো পেশাজীবী ও বুদ্ধিজীবীদের লড়াই নামার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের মানুষ আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
এদিকে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সমাবেশ শেষে প্রেস ক্লাব থেকে বের হওয়ার সময় জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-জেটেব সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার ফখরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ।