শেষের পাতা
ফারদিন হত্যার জট খুলবে কবে?
স্টাফ রিপোর্টার
২৮ নভেম্বর ২০২২, সোমবার
নিখোঁজের তিন দিন পর গত ৭ই নভেম্বর সন্ধ্যায় সিদ্ধিরগঞ্জের বনানী ঘাট সংলগ্ন লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলের পেছন থেকে বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র পরশের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ উদ্ধারের ২০ দিন পরেও এই হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অনেকটা রহস্যের বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে হত্যাকাণ্ডটি। লাশ উদ্ধারের পর বিভিন্ন ধরনের তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নানামুখী তদন্ত চালাচ্ছেন। তবুও তারা সঠিক কোনো ক্লু বের করতে পারছেন না। গোয়েন্দা সূত্রগুলো জানিয়েছে, ফারদিন হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ চলছে। কি কারণে এই হত্যাকাণ্ড এবং কারা এর সঙ্গে জড়িত সেটি বের করার জন্য রাতদিন বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। বেশকিছু তথ্য নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। এর মধ্যে ফারদিন ওই রাতে মাদক সেবন বা মাদক ক্রয়ের জন্য রূপগঞ্জের চনপাড়া বস্তিতে গিয়েছিল কিনা।
কিন্তু ফারদিনের এক্ষেত্রে এ রকম কিছুই হয়নি। লাশ উদ্ধারের সময় তার ৩৭ হাজার টাকায় কেনা মোবাইল ফোন, ব্লুটুথ এয়ারপড, হাতঘড়ি, মানিব্যাগ ও নগদ ৯৩০ টাকা পাওয়া যায়। তাকে কেউ নজরদারিতে রেখেছিল কিনা সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। তবে এ বিষয়ে কোনো ক্লু মেলেনি। সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা গেছে ফারদিন একাই লেগুনায় উঠেছে। লেগুনার চালকও এই তথ্য জানিয়ে বলেছে নামার সময়ও ফারদিন একাই ছিল। ফারদিন হত্যার তদন্ত নিয়ে ব্যাপক তথ্য প্রযুক্তির বিশ্লেষণ করেছেন এমন এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, নিহত ফারদিন গ্রামীণ ও রবির সিম ব্যবহার করতো। ইন্টারনেট ব্যবহার করতো গ্রামীণের। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জানা গেছে, ঘটনার রাতে ফারদিনের একটি সিমের নেটওয়ার্ক চনপাড়ার একটি টাওয়ার ও আরেকটি ব্রিজের পাশের একটি টাওয়ার কভার করেছে। তার সর্বশেষ লোকেশন সুলতানা কামাল ব্রিজে ছিল। কিন্তু সেখানে সিসি ক্যামেরা এবং প্রত্যক্ষদর্শী না থাকায় কিছুই জানা যায়নি। সূত্র জানায়, তদন্তের স্বার্থে ও হত্যাকাণ্ডের ক্লু বের করতে ফারদিনের মোবাইলের ৫৬৮টি মোবাইল নম্বর বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সন্দেহভাজন শতাধিক নম্বরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ময়নাদতদন্তে প্রাপ্ত আঘাতের চিহ্ন নিয়েও কাজ করছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। সেই আঘাতের ধরন ও কিসের আঘাত তা জানার জন্য ফরেনসিক চিকিৎসকের সাহায্য নেয়া হচ্ছে। সুলতানা কামাল ব্রিজে যদি তার শেষ লোকেশন হয় তাহলে লাশ সিদ্ধিরগঞ্জের বনানী ঘাট পর্যন্ত ভেসে যেতে পারে কিনা সেটিও তদন্তে জোর দিয়ে দেখা হচ্ছে। সেইসঙ্গে পরীক্ষার ফলাফল ও বিদেশ যাওয়ার টাকা জোগাড় না হওয়া নিয়ে কোনো ধরনের হতাশার কথা কাউকে ফারদিন বলেছেন কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. রাজীব আল মাসুদ বলেন, আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। ঘটনার রাতের অবস্থান বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আমরা বড় দুটি ব্রিজে হাঁটাহাঁটির তথ্য পেয়েছি। কারও সঙ্গে শত্রুতা ও ছিনতাইয়ের যোগসূত্রও পাইনি এখনো। তার বন্ধুদের মাধ্যমে ফারদিন হতাশাগ্রস্ত ছিল কিনা জানার চেষ্টা করেছি। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সবকিছু মাথায় রেখেই তদন্ত চলছে। অগ্রগতি হলে অবশ্যই জানানো হবে।
মন্তব্য করুন
শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন
শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]