বিশ্বজমিন
দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীকে আরব রাষ্ট্রদূতদের চিঠি
মানবজমিন ডেস্ক
(১ বছর আগে) ২ অক্টোবর ২০২২, রবিবার, ৪:৪৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১০:০৭ পূর্বাহ্ন

গাডির্য়ানে প্রকাশিত এক রিপোর্টের প্রেক্ষিতে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের কাছে চিঠি লিখেছেন লন্ডনে নিযুক্ত আরব অঞ্চলের রাষ্ট্রদূতরা। রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ট্রাস ইসরাইলে বৃটিশ দূতাবাসকে সরিয়ে জেরুজালেমে নিয়ে যেতে চাইছেন। তার এ পরিকল্পনাকে বাতিল করার জন্য আরব দুনিয়ার রাষ্ট্রদূতরা ওই চিঠিতে আহ্বান জানিয়েছেন। তারা এ উদ্যোগকে বেআইনি এবং অবৈধ কর্মকাণ্ড বলে উল্লেখ করেছেন। অনলাইন গার্ডিয়ান এ খবর দিয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসকে হুঁশিয়ার করেছেন ওইসব রাষ্ট্রদূত। তারা বলেছেন, এ বছরে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে বৃটেন এবং গালফ কোঅপারেশন কাউন্সিলের (জিসিসি) মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি। যদি লিজ ট্রাসের সরকার দূতাবাসকে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয়, তাহলে সেই প্রচেষ্টা, সমঝোতা বিপন্ন হতে পারে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, অনেক আরব দেশ বৃটিশ সরকারের এ উদ্যোগের বিরোধিতা করবে। আব্রাহাম অ্যাকর্ডের অধীনে মাত্র দু’বছর আগে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন।
লন্ডনে নিযুক্ত ফিলিস্তিন সরকারের দূত হুসাম জোমলট বলেছেন, দূতাবাস স্থানান্তরের যেকোনো প্রচেষ্টা হবে আন্তর্জাতিক আইন ও বৃটেনের ঐতিহাসিক দায়িত্বের ভয়াবহ লঙ্ঘন। এতে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানকে ক্ষুন্ন করা হবে। জেরুজালেমে এমনিতেই অস্থির পরিস্থিতি বিরাজমান, তার ওপর এই উদ্যোগ আরও উত্তপ্ত করবে পরিস্থিতিকে। একই অবস্থা হবে বাকি সব দখলীকৃত অঞ্চলে, বৃটেনে বসবাসকারী ওই অঞ্চলের সম্প্রদায়ের মধ্যে এবং বিশ^জুড়ে উত্তেজনা ছড়াবে। যা হবে বিপর্যয়কর।
সেপ্টেম্বরে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী ইয়াইর লাপিদকে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি তেল আবিব থেকে বৃটিশ দূতাবাসকে সরিয়ে জেরুজালেমে নেয়ার কথা বিবেচনা করছেন। সেখানে কোথায় দূতাবাস স্থাপন করা হবে তা নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। এর আগে বৃটেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন লিজ ট্রাস। এ পদে থেকেই আগস্টে তিনি কনজার্ভেটিভ পার্টির নেতৃত্বের লড়াই করেন। তখনই প্রত্যয় ঘোষণা করেন যে, দূতাবাস সরিয়ে নেয়ার বিষয় রিভিউ করা হচ্ছে। দূতকে কোথায় রাখা হবে তার গুরুত্ব এবং স্পর্শকাতরতা সম্পর্কে তিনি অবহিত।
এর আগে ২০১৮ সালের মে মাসে তেল আবিব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে নেন তখনকার প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এর এক বছর আগে তিনি দূতাবাস সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেন। ওই সময় ভিডিও ভাষণে ট্রাম্প বলেছিলেন, ইসরাইল হলো অন্য যেকোনো রাষ্ট্রের মতো একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। তাদের নিজেদের একটি রাজধানী নির্ধারণ করার অধিকার আছে। অনেক বছর ধরে তা স্পষ্টভাবে স্বীকার করতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। একেবারে সাদামাটা বাস্তবতা হলো ইসরাইলের রাজধানী জেরুজালেম। আমরা এটাকে স্বীকৃতি দিচ্ছি এবং আমাদের দূতাবাস ঐতিহাসিক এবং জেরুজালেমের পবিত্র মাটিতে উন্মুক্ত করার ঘোষণা দিচ্ছি।
ওদিকে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার পূর্বে লিজ ট্রাসকে আরব দূতরা ওই চিঠি পাঠিয়েছেন। নিউ ইয়র্কে লিজ ট্রাস দূতাবাস বিষয়ে রিভিউয়ের কথা নিশ্চিত করেছেন। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে বৃটেনের মিত্ররা মনে করছে, বৃটেনের এমন পদক্ষেপ অযৌক্তিক। তারা মনে করছে, লিজ ট্রাস এই উদ্যোগ নিয়েছেন শুধু ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার জন্যই নয়, একই সঙ্গে একটি ‘ডিজরাপটিভ ফোর্স’ হিসেবে আবির্ভাব হওয়ার জন্য।
গার্ডিয়ান আরও লিখেছে, আশা করা হচ্ছিল যে, বৃটিশ দূতাবাস স্থানান্তরের প্রস্তাব সম্পর্কে লন্ডনে অবস্থানকারী শুধু ফিলিস্তিনপন্থি দেশগুলোর দূতরাই আপত্তি উত্থাপন করবেন। কিন্তু লিজ ট্রাসকে পাঠানো চিঠিতে আরব দেশগুলোর সবার প্রতিনিধিই স্বাক্ষর করেছেন। এমনকি ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে আব্রাহাম অ্যাকর্ডের মাধ্যমে যেসব আরব দেশ ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে, তাদের দূতরাও এতে স্বাক্ষর করেছেন। এর মধ্যে আছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের রাষ্ট্রদূত।
মন্তব্য করুন
বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন
বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ দূতাবাসের সতর্কবার্তা/ মার্কিন শ্রমবিষয়ক মেমোরেন্ডামের টার্গেট হতে পারে বাংলাদেশ
ভয়েস অব আমেরিকার রিপোর্ট/ বাংলাদেশে ‘অন্যায্য’ নির্বাচনের প্রস্তুতি
মহাসচিবের মুখপাত্রের ব্রিফিং/ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে না জাতিসংঘ
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের রিপোর্ট/ বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে চলছে সহিংস দমন–পীড়ন

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]