বাংলারজমিন
ভিক্ষাবৃত্তি করায় ক্ষিপ্ত হয়ে বাবাকে হত্যা, বোনের মামলা
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
২৪ জুন ২০২৫, মঙ্গলবারকিশোরগঞ্জের ভৈরবে মানুষের কাছে হাত পেতে টাকা চাইতো বলে ছেলের হাতে হাফিজ উদ্দিন মিয়া (৭৫) নামে এক বাবা খুন হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সোমবার রাত সাড়ে ৩টায় পৌর শহরের ভৈরবপুর উত্তরপাড়া সায়দুল্লাহ মিয়া হাউজিং সোসাইটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত হাফিজ নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার দৌড়ী হাইরমারা গ্রামের মৃত বজরু মিয়ার ছেলে। ঘাতক ছেলে মো. আল আমিন (২৫) অটোচালক। এ ঘটনায় ভাইয়ের বিরুদ্ধে বোন আসমা বেগম হত্যার অভিযোগে ভৈরব থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভৈরব থানা পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত আবু তালেব। থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত হাফিজের এক ছেলে ও এক মেয়ে। এক বছর আগে পরিবার নিয়ে পৌর শহরের ভৈরবপুর উত্তরপাড়া সায়দুল্লাহ মিয়া হাউজিং সোসাইটি এলাকার একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। তবে মেয়ে কিছুদিন বাবার বাড়ি ও শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। গতকাল রাতে প্রতিবেশীরা হাফিজের চিৎকার শুনতে পেয়ে ডাকাডাকি করলেও ঘর থেকে কোনো সাড়া-শব্দ পাওয়া না যায় না। পরে বাড়ির মালিক পুলিশকে খবর দিলে দরজা ভেঙে তাকে মৃত অবস্থায় পায়। পরে পুলিশ ভোরে ছেলেকে গ্রেপ্তার করে ও মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে আল আমিনের খালা সাহিদা বেগম বলেন, দুই সন্তানকে রেখে আমার বোন মারা যায়। পরে হাফিজ আরেকটি বিয়ে করেন। ওই পরিবারেও তার আরও দুই সন্তান রয়েছে। তারা আলাদা থাকে। আল আমিনও বিয়ে করেছিল পারিবারিক কলহে তার বউ বাবার বাড়িতে চলে গেছে। তবে কি কারণে বাবাকে হত্যা করেছে আমরা জানি না। এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে নিহতের মেয়ে বলেন, আমি বাবাকে হারিয়েছি। আমার ভাই বাবাকে কেন হত্যা করেছে জানি না। এ বিষয়ে বাড়ির মালিকের মেয়ে তিথি বেগম বলেন, ১ বছর আগে বাবাসহ আল আমিন ঘর ভাড়া নেয়। পরিবারের সব কাজই সে করতো। বোন মাঝে-মধ্যে শ্বশুরবাড়ি থেকে আসতো। তার বাবা রাস্তায় হাঁটলেই মানুষের কাছে টাকা চাইতো। এটা ছেলের পছন্দ হতো না। ঘটনার দিন এক প্রতিবেশী আমাদের খবর দেয়। পরে আমরা ঘরের দরজায় ধাক্কা দিলে তারা খোলেনি। ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুলিশকে খবর দিলে দরজা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে ভৈরব থানার এসআই শক্তি মৃধা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারি হাফিজ সবার কাছে হাত পেতে টাকা চাইতো। এ বিষয় নিয়ে প্রায় সময় বাবা-ছেলের বাকবিতণ্ডা হতো। ঘটনার দিন টাকা চাওয়ার বিষয়ে ক্ষিপ্ত হয়েই বাবাকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে ছেলে। এ ঘটনায় ছেলেকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।