বাংলারজমিন
কালাইয়ে আলুর দাম কিছুটা বেড়েছে, কৃষক-ব্যবসায়ী কেউই সন্তুষ্ট নন
কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
২৪ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার আলুর জন্য প্রসিদ্ধ জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলায় মৌসুমের শুরু থেকে লাগাতার দরপতনের পর গত এক সপ্তাহ ধরে আলুর দামে কিছুটা ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে এই মূল্যবৃদ্ধি এখনো কৃষক বা হিমাগার মালিকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, আলুর ঘরোয়া মজুত শেষ না হওয়া পর্যন্ত দাম স্থায়ীভাবে বাড়বে না।
গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিবস্তা (৬০ কেজি) আলুর দাম বেড়েছে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। কালাইয়ের বিভিন্ন আড়তে এখন আলু বিক্রি হচ্ছে ১,০২০ টাকায়, যেখানে এক সপ্তাহ আগেও ছিল ৮৫০ টাকা। প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা। তবে স্থানীয় আড়তদার, কৃষক ও হিমাগার মালিকদের মতে, এই মূল্যবৃদ্ধি খুবই সাময়িক এবং বাস্তব পরিস্থিতি অনুযায়ী তা তেমন কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে না। বর্তমানে বাজারে অন্যান্য শাকসবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় আলুর ওপর কিছুটা চাপ তৈরি হয়েছে। ঢাকার বাইপাইল বাজারের আড়তদার চাঁন মিয়া বলেন, কালাইয়ের আলুর মান খুব ভালো। ঢাকায় এই আলু প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৬-২৭ টাকা কেজিতে।
তবে পুনট হিমাগারের বিক্রেতা মিঠু ফকির জানান, কেজিতে ১-২ টাকা বৃদ্ধি কোনো বড় বিষয় নয়। এখনো কৃষকের ঘরে যে পরিমাণ আলু আছে, তা বাজারে বিক্রি না হলে দাম বাড়বে না। হিমাগারের আলু বিক্রিই হচ্ছে না। কালাই পৌর শহরের সড়াইল এলাকার এম ইসরাত হিমাগারে আলু বিক্রি করতে আসা কৃষক আলী আকবর বলেন, শুনেছিলাম দাম বেড়েছে, তাই এসেছি আলু বিক্রি করতে। কিন্তু পাইকারই নেই। পুনট হাটে আলু কিনতে আসা মোখলেছুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, তিনদিন আগে সাদা ডায়মন্ড আলু ১৪ টাকা কেজি দরে কিনেছিলাম। আজ ১৫ টাকা দিতে হচ্ছে। দাম যদি না বাড়ে, তাহলে খুচরা বাজারে কেন দাম বাড়ে! এটা ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ছাড়া আর কিছু নয়।
কালাই উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, এবার কালাইয়ে আলুর উৎপাদন ভালো হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে সরবরাহ বেশি থাকায় দাম কম ছিল। এখন অন্যান্য সবজির দাম বাড়ার কারণে আলুর চাহিদা বেড়েছে, ফলে দামও কিছুটা উঠেছে। তবে কৃষকের ঘরে ও হিমাগারে এখনো প্রচুর আলু মজুত রয়েছে। তাই আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি যেন বাজার বুঝে ধাপে ধাপে আলু বিক্রি করেন।