ঢাকা, ১ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৪ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

বাংলারজমিন

জয়পাড়া খাল পরিষ্কারের দায়িত্ব নিলো জামায়াত

স্টাফ রিপোর্টার, দোহার থেকে
২২ জুন ২০২৫, রবিবার
mzamin

মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস ও অবাধ পানি প্রবাহ সমুন্নত রাখতে দোহার উপজেলার জয়পাড়া খালের কচুরিপানা পরিষ্কারের দায়িত্ব নিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির। এ কর্মসূচি সফল করতে উপজেলাবাসীকেও অংশগ্রহণের আহ্বান জানান তারা। শনিবার সকালে খালের দুরবস্থা পরিদর্শন করেন দুই সংগঠনের ৩০ সদস্যবিশিষ্ট একটি প্রতিনিধিদলের উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর মাওলানা দলিলুর রহমান, পৌরসভা আমীর মো. শাখাওয়াত ও ইসলামী ছাত্র শিবিরেরে উপজেলা সেক্রেটারি হাফেজ ওমর ফারুক এ ঘোষণা দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর মাওলানা দলিলুর রহমান, পৌরসভা আমীর মো. শাখাওয়াত এবং ছাত্রশিবিরের থানার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। জামায়াতের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এলাকাবাসীও যোগদান করেন। এ সময় এলাকাবাসী খালটি পরিষ্কার করার জন্য জোর দাবি জানান। 
পরিদর্শন শেষে সংগঠনটির পৌর আমীর বলেন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। আমাদের সবার কিছু নাগরিক দায়িত্ব রয়েছে। স্ব স্ব  এলাকাবাসীর নাগরিক দায়িত্ব তার এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা। সেই আলোকে বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির খালের কচুরিপানা অপসারণ করবে। আমাদের এ কর্মসূচি চলাকালে এলাকার সবাইকে যুক্ত হওয়ার জন্য আহবান করেছি।

সরজমিন ঘটনাস্থল দেখা যায়, জয়পাড়া বাজারের কসাইপট্টিতে অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এ বিষয়ে দোহার উপজেলা জামাত ইসলাম দোহার উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এদিকে প্রতি বছর মৈনট ঘাট এলাকার পদ্মার পানি প্রচণ্ডবেগে জয়পাড়া খাল হয়ে নবাবগঞ্জের ইছামতি নদীতে প্রবাহিত হয়। কিন্তু এ বছর পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করেছে জয়পাড়া বাজার সংলগ্ন খালের কচুরিপানার স্তূপ। শুধু পানি প্রবাহেই বাধা সৃষ্টি করছে না, মশা প্রজননের নিরাপদ স্থান হচ্ছে এই কচুরিপানা। সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাসা বাড়িতে মশার কামরে অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে এলাকাবাসী এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক মশা বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড. কবিরুল বাশর বলেন, মশা উৎপাদনের নিরাপদ প্রজনন ক্ষেত্র হচ্ছে কচুরিপানা। এখানে জন্ম নেয়া মশার কামড়ে গোদ রোগ হওয়ার সম্ভনা থাকে। শরীরের পা অস্বাভাবিক ফুলে যায়। এ থেকে রেহাই পেতে হলে দ্রুত কচুরিপানা অপসারণ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি। তিনি আরও বলেন. বুধবার আমরা জয়পাড়া খালটি পরিদর্শন করেছি। অল্প একটু জায়গা জুড়ে আটকে আছে কচুরিপানা। কিন্তু এগুলো অপসারণে উপজেলা প্রশাসনের কোনো উদ্যোগই নেই। এলাকাবাসী কিংবা কোনো রাজনৈতিক দলেরও কোনো ভূমিকা নেই। তবে জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরীর বাকলিয়ায় বির্জা খাল পরিচ্ছন্ন করার জন্য জামায়াতের এ উদ্যোগ নিয়ে এলাকাজুড়ে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, ঢাকার নবাবগঞ্জ ও দোহারে অবস্থিত ইছামতি নদী। একসময় এই নদীই ছিল এই অঞ্চলের মানুষের জন্য আশীর্বাদ। যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌযান। ঢাকার সদরঘাট থেকে নবাবগঞ্জ উপজেলার বান্দুরা ও হাসনাবাদ পর্যন্ত চলতো বড় বড় স্টিমার ও লঞ্চ। জয়পাড়া খাল দিয়েও চলতো বিভিন্ন নৌযান। কিন্তু পানি না থাকায় এখন চলে না  তেমন কোনো নৌযান। ২০০০ সালের দিকে ইছামতি নদীর উৎপত্তিস্থল কাশিয়াখালীতে দেয়া হয় অপরিকল্পিত একটি বাঁধ। মূল অংশে স্লুইস গেট না দেয়ায় ইছামতি নদী এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। এরসঙ্গে যুক্ত হয়েছে কচুরিপানার অপরিসীম দুর্ভোগ। প্রতিবছর দুই উপজেলাবাসীকে নানা দুর্ভোগ ভোগ করতে হচ্ছে। সংস্কারের অভাবে পদ্মা নদীর সঙ্গে সংযোগ জয়পাড়া খালও এখন মৃতপ্রায়। এখন বর্ষা মৌসুমেও আগের মতো পদ্মার পানি জয়পাড়া খাল দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে না। শুধু তা-ই নয়, কচুরিপানার কারণে ইছামতিতে বর্ষা মৌসুমেও নৌযান চলাচল করতে পারে না। সবচেয়ে বড় সমস্যা দেখা দেয় যখন কচুরিপানা পচে পানি নষ্ট হয়ে যায় তখন মাছগুলোও মারা যায়। পচা কচুরিপানার দুর্গন্ধে একদিকে বসবাস যেমন মুশকিল হয়ে যায়, তেমনি এই পানি পরণত হয় মশার প্রজনন ক্ষেত্রে।

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status