শেষের পাতা
আইইডিসিআর’র জরিপ
ডেঙ্গুর সঙ্গে প্রায় সমানভাবে চিকুনগুনিয়ায়ও আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ
স্টাফ রিপোর্টার
১৯ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবাররাজধানীতে মৌসুম শুরুর আগেই বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রভাব। এবার ডেঙ্গুর সঙ্গে প্রায় সমানভাবে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এডিস মশায় আক্রান্তদের মধ্যে ৪৫ শতাংশ চিকুনগুনিয়ায় ভুগছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক জরিপে দেখা যায়, রাজধানী ঢাকার দুই সিটির ১৩টি ওয়ার্ডে ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার লার্ভার ঘনত্বের পরিমাণ নির্দিষ্ট মানদণ্ডের থেকেও বেশি। বহুতল ভবনে এডিস মশার লার্ভা বেশি পাওয়া গেছে। রাজধানীর ৫৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ বহুতল ভবনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার আওতাধীন জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির অধীন গত ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাসে চালানো প্রাক-বর্ষা জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল আইইডিসিআরের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত মৌসুম-পূর্ব এডিস সার্ভে-২০২৫ এর ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। ডেঙ্গু রোগের বাহকের কীটতাত্ত্বিক জরিপের এই ফলাফল তুলে ধরেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)-এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন।
এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব পরিমাপের সূচক ‘ব্রুটো ইনডেক্স’ নামে পরিচিত। দুই সিটির ৯৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩টিতে ব্রুটো ইনডেক্স ২০-এর লার্ভার ঘনত্ব বেশি। এর অর্থ হচ্ছে, এসব এলাকার ১০০টির মধ্যে ২০টির বেশি পাত্রে মশা বা লার্ভা পাওয়া গেছে। এই এলাকাগুলো ডেঙ্গুর বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ঝুঁকিতে থাকা ওয়ার্ডগুলো হলো- ১২, ২, ৮, ৩৪, ১৩, ২২ নং ওয়ার্ড। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডগুলো হলো-৩১, ৪১, ৩, ৪৬, ৪৭, ৪, ২৩ নং ওয়ার্ড। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে ১২ নং ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে এডিস মশার ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এরপরের অবস্থানে রয়েছে ২, ৮ এবং ৩৪ নং ওয়ার্ড। এগুলোতে ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে ২৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এ ছাড়াও ১৩ এবং ২২ নং ওয়ার্ডে ২০ শতাংশ ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩১ এবং ৪১ নং ওয়ার্ডে ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে সবচেয়ে বেশি, ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এ ছাড়া ৩, ৪৬ এবং ৪৭ নং ওয়ার্ডে ২৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং ৪ ও ২৩ নং ওয়ার্ডে ২০ শতাংশ ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে। রাজধানী ঢাকার ৫৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ বহুতল ভবনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। গত বছর মে মাসে প্রকাশিত জরিপে এই হার ছিল ৪২ শতাংশ। এক বছরে বহুতল ভবনে এডিস মশার লার্ভা বেড়েছে ১৬ শতাংশ।
আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন বলেন, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ১৩টি ওয়ার্ড সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩১ ও ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে মশার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি মিলেছে যা ডেঙ্গু রোগের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে মশার ঘনত্ব পাওয়া গেছে।
ঝিনাইদহ, মাগুরায় এডিস মশার ঘনত্ব বেশি তুলে ধরে ডা. তাহমিনা শিরীন বলেন, ঢাকার বাইরে ঝিনাইদহ, মাগুরা, পটুয়াখালী ও পিরোজপুরে এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতি বেশি।
পাঠকের মতামত
ইদানিং চতুর্দিকে ডেঙ্গু জ্বরের (অধিক জ্বর, মাথাব্যথা, শরীরের বিভিন্ন অংশে যেমন হাড় ও জয়েন্টে ব্যথা ,গ্লান্ড ফুলে যাওয়া, বমি বা নাওসিয়া, রাস বা ফোসকা পরা ইত্যাদি) প্রকোপ বাড়ছে, হোমিওপ্যাথিতে এর চিকিৎসা আছে। লক্ষণ ভেদে বিভিন্ন ওষুধ ব্যবহার করা হয় তবে ইউপাটোরিয়াম পারফুলিয়েটাম (EUPATORIUM PERFOLIATUM)ওষুধটি বেশিরভাগ ডেঙ্গু জ্বরের রোগীর ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে থাকে (রেজিস্টার্ড হোমিওডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ গ্রহণ করা জরুরী)।