শেষের পাতা
বরগুনায় ডেঙ্গু আতঙ্ক
আক্রান্ত দুই হাজার ছাড়িয়েছে, বাড়ছে মৃতের সংখ্যা
বরগুনা প্রতিনিধি
২০ জুন ২০২৫, শুক্রবার
বরগুনায় বুধবার রাতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ জনে। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ২৩২ জন। হাসপাতালের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, জেলায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ২ হাজার ৪৮ জন। আক্রান্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮১৬ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন।
সরজমিন হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, ২৫০ শয্যার এই হাসপাতালটিতে তিল ধারণের জায়গা নেই। শুধু ডেঙ্গু রোগীই ভর্তি ২৩২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৬৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন এবং মারা গেছেন একজন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় হাসপাতালে অতিরিক্ত ১২ জন চিকিৎসক ও ১০ জন নার্স পদায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও এখন পর্যন্ত যোগ দিয়েছেন মাত্র ৫ জন চিকিৎসক এবং ১ জন নার্স।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. আশিকুর রহমান বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত অনেক রোগীই ভর্তিযোগ্য নয়। একদিনের জ্বর হলেও অনেকেই আতঙ্কে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। অন্যান্য জেলার তুলনায় বরগুনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় আমাদের চাপ বেড়ে যাচ্ছে।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকাহ বলেন, রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। জ্বর হলেই আতঙ্কিত হয়ে মানুষ হাসপাতালে চলে আসছেন। তবে আমরা বারবার বলছি জ্বরের সঙ্গে যদি পাতলা পায়খানা, বমি বা মাথাব্যথা থাকে, তবেই হাসপাতালে ভর্তি হন। সাধারণ জ্বর নিয়ে ভর্তি হলে অন্যদের জন্য ঝুঁকি বাড়ে এবং শয্যা সংকট আরও প্রকট হয়।
একদিকে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স না থাকায় চিকিৎসাসেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিভাগের তরফ থেকে বারবার সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রয়োজন ছাড়া হাসপাতালে ভিড় না করার আহ্বান জানানো হলেও আতঙ্কে সাধারণ মানুষ নির্দেশনা মানতে নারাজ। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ীরা বাড়িয়েছেন মশার কয়েল ও মশা তাড়ানোর সরঞ্জামের দাম।
বরগুনা পৌর প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক যেগুলো আছে, যাদের বিরুদ্ধে মানহীন রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ বলেন, আমাদের কাছে যদি অভিযোগ আসে মানহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকের বিরুদ্ধে, তাহলে আমরা জেলা প্রশাসকের সাহায্যে বিচার বিভাগের সাহায্যে ওইগুলো বন্ধ করে দেবো।