অনলাইন
আলী রীয়াজ
পারস্পারিক চুক্তিগুলো শোনা গেলে অবস্থানগত পরিবর্তন ঘটে
স্টাফ রিপোর্টার
(১ দিন আগে) ৩ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ১:০২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৯:৫২ অপরাহ্ন

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রিয়াজ বলেছেন, ‘যে সমস্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেসব বিষয় নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলাদা আলাদা আলোচনা হয়েছে। কিছু বিষয়ে সামান্য আলোচনার প্রয়োজন। সেসব বিষয় নিয়ে দেখা যায় পারস্পারিক চুক্তিগুলো শোনা গেলে অবস্থানগত পরিবর্তন ঘটে। এই পর্যায়ে আমরা যে কাঠামো অনুসরণ করব-সেটা হচ্ছে আমরা একেক দিন তিন চারটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এই তিনটা বা চারটা বিষয়ে এক জায়গায় আসা। সেটা যে সবসময় একমত হতে পারব তা নয়। ক্ষেত্রবিশেষে একমত হওয়া যাবে, ক্ষেত্রবিশেষে হয়তো হওয়া যাবে না।’
মঙ্গলবার সকালে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্বের প্রথম আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
এক অর্থে আলোচনার একটি উপসংহার টানতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সময়ের স্বল্পতায় জুলাই মাসে আমরা যে সনদ করতে চাচ্ছি, সেটার মধ্যে কোনটা থাকবে কোনটা থাকবে না, সেটার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেগুলো ঐকমত্য হবে না সেগুলো উল্লেখিত থাকবে, যেগুলো উল্লেখিত ছিলো আলোচনা হয়েছে, কিন্তু একমত হওয়া যায়নি। সেই বিষয়গুলোর দিক থেকেই আমরা যে বিষয়গুলো নির্ধারণ করেছি- সেগুলো হচ্ছে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, নিম্নকক্ষে নারী আসন, স্থায়ী কমিটি সমূহ, তত্ত্বাবধারক সরকারের মেয়াদ ও কার্যপরিধির একটি অংশ। এগুলো নিয়েই একটা একটা বিষয় ধরে আমরা আলোচনা করব।’
সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর প্রসঙ্গে আলী রীয়াজ বলেন, ‘কাঠামোগত দিক থেকে মূল প্রস্তাবটা কী ছিলো। সংবিধান সংস্কার কমিশন, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে একটা মূল প্রস্তাব তো ছিলো। সেগুলো আলোচনার মধ্যদিয়ে পরিবর্তিত হয়েছে। সেগুলোও আমরা অবহিত হবো যে, কী কী পরিবর্তনগুলো হয়েছে। কোন বিষয়গুলো দাঁড়িয়েছে, সেগুলোর ভিত্তিতেই আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারব। আমাদের মনে রাখতে হবে কোন জায়গায় আমরা নূন্যতম একমত হচ্ছি। একেবারে সব জায়গায় একমত হয়তো হব না। তবে যেসব বিষয়গুলোতে একমত হচ্ছে, সেটা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আলোচনার ভিত্তিতে অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে। সব বিষয়ে একমত হবে না। তবে কোন বিষয়গুলোতে সবাই ন্যূনতম একমত হতে পারি বা হচ্ছি। পরিবর্তনের জায়গাগুলোকে রাজনৈতিকদলগুলোকে নিয়েই এই বিষয়গুলো জুলাই সনদে। আমাদের লক্ষ্য সকলে মিলে একত্রে বসা। আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে চূড়ান্ত সনদের দিকে ধাবিত হওয়া। গ্রহণ করি আর না করি এক জায়গায় আসতে হবে।’
বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, সিপিবি, বাসদ, এলডিপি, খেলাফত মজলিস, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), নাগরিক ঐক্য, জাসদ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, গণসংহতি আন্দোলন, জেএসডি, গণঅধিকার পরিষদ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও গণফোরামের প্রতিনিধিরা উপস্থিত রয়েছেন।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজের নেতৃত্বে বৈঠকে কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত আছেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, মুয়ীদ চৌধুরী, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।
উল্লেখ্য, এর আগে প্রথম দফার সংলাপ গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। ওই পর্যায়ে ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় করে ঐকমত্য কমিশন।