অনলাইন
আস্থাভোটে হেরে মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ
মানবজমিন ডেস্ক
(১ দিন আগে) ৩ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ১২:০১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৬:১৩ অপরাহ্ন

পার্লামেন্টে আস্থাভোটে হেরে পদত্যাগ করেছেন মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী লুভসাননামস্রাইন অয়ুন-এরডেনে। ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ও নাগরিকদের বিক্ষোভের মুখে পার্লামেন্টে তার বিরুদ্ধে আস্থাভোট আহ্বান করা হয়। ২০২১ সালে দায়িত্ব নেয়া অয়ুন-এরডেনে সোমবার গোপন ব্যালটে মাত্র ৪৪টি ভোট পান। সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে তার প্রয়োজন ছিল ৬৪ ভোট। ১২৬ আসনের পার্লামেন্টে ৮২ জন সংসদ সদস্য ভোটে অংশ নেন। এর মধ্যে ৩৮ জন তার বিরুদ্ধে ভোট দেন। আস্থা ভোটের আগে দুই সপ্তাহ ধরে শত শত বিক্ষোভকারী, যার বেশির ভাগই তরুণ, তারা রাজধানী উলানবাটোরের রাস্তায় নেমে আসেন। বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু ছিল প্রধানমন্ত্রীর ছেলের বিলাসবহুল জন্মদিন ও বাগদানের অনুষ্ঠান। প্রধানমন্ত্রীর ছেলের এই অনুষ্ঠানাদির বিষয় সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
নাগরিকরা প্রশ্ন তুলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের এসব অস্বাভাবিক ব্যয়বহুল জীবনের উৎস কী! বক্তব্যে অয়ুন-এরডেনে বলেন- মহামারি, যুদ্ধ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংকটের মধ্যে আমার দেশের সেবা করার সুযোগ ছিল সম্মানের। তিনি সকল অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন- আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগগুলো একটি সুপরিকল্পিত অপপ্রচার। তবে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি পর্যবেক্ষক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের মতে, অয়ুন-এরডেনে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশে দুর্নীতি পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ২০২৩ সালে মঙ্গোলিয়া দুর্নীতির দিক থেকে ১৮০টি দেশের মধ্যে ১১৪তম স্থানে অবস্থান করে।
উল্লেখ্য, এটি মঙ্গোলিয়ায় দুর্নীতির জন্য শীর্ষ পর্যায়ের দ্বিতীয় বড় ঘটনা। এর আগে ২০১২-২০১৫ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী সুকবাতার বাটবোল্ডের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে চুরি করা খনিজ সম্পদের অর্থে নিউ ইয়র্কে অ্যাপার্টমেন্ট কেনার অভিযোগ আনা হয়। তিনিও সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে মঙ্গোলিয়া একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত হয়েছে। তবে দুর্নীতি রয়ে গেছে একটি স্থায়ী সমস্যা হিসেবে। রাশিয়া ও চীনের মাঝখানে অবস্থিত এই দেশটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে তৃতীয় প্রতিবেশী নীতি অনুসরণ করে আসছে।
ওদিকে পদত্যাগের পর অয়ুন-এরডেনে আগামী ৩০ দিনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। এ সময়ের মধ্যে একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে তার কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নেবেন। এ ঘটনায় মঙ্গোলিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং আগামী দিনে কী ধরনের নেতৃত্ব আসে, তা দেশটির ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।