ঢাকা, ১৫ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৬ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

অনলাইন

সহযোগীদের খবর

একের পর এক ঘটনা, ভোট নিয়ে নানা আলোচনা

অনলাইন ডেস্ক

(৯ ঘন্টা আগে) ১৫ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৯:১১ পূর্বাহ্ন

mzamin

প্রথম আলো

দৈনিক প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর ‘একের পর এক ঘটনা, ভোট নিয়ে নানা আলোচনা’। প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা জাতীয় রাজনীতিতে যেমন উত্তেজনা তৈরি করেছে, তেমনি নানা আলোচনার জন্মও দিয়েছে। এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আলোচনা ঢাকা পড়ে যাচ্ছে কি না, সেই প্রশ্নও সামনে এসেছে।

তবে দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা মনে করেন, কোনো ঘটনাই জাতীয় নির্বাচনের মতো জনদাবিকে আড়াল করতে পারবে না। জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের ধারণাও একই রকম।

বিএনপি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন দাবি করে নির্বাচনের পথনকশা চেয়ে আসছে। আর জামায়াত কিছু মৌলিক সংস্কার সম্পন্ন করে সম্ভব হলে ডিসেম্বরেই, তা না হলে আগামী বছরের শুরুর দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠান চায়।

কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহে সংঘটিত কিছু ঘটনা জাতীয় রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়িয়েছে। যার রেশ এখনো রয়ে গেছে। এর মধ্যে গত এপ্রিলের শেষ দিকে রাজনীতিতে প্রধান আলোচ্য বিষয়ে হয়ে ওঠে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারের রাখাইনে খাদ্যসহায়তা পাঠানোর জন্য ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবনা। সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা এ-সংক্রান্ত বক্তব্যের পর রাজনৈতিক দলগুলোতে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রাষ্ট্রব্যবস্থার নানামুখী সংস্কার প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা চলছে। এমন সময়ে ‘করিডর’ নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপের সৃষ্টি হয়। এই উত্তাপের মধ্যেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি হঠাৎ তীব্রভাবে সামনে আসে। গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাবে থাকা তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) অন্যতম নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। এতে জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামসহ কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক বিভিন্ন দলমতের অনুসারী নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা সমর্থন জোগান।

এ দাবিতে টানা তিন দিন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’ ঘিরে অবস্থান, অবরোধ ও গণজমায়েতের কর্মসূচির মধ্যে সরকার আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করার ঘোষণা দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নির্বিচার গুলি করে মানুষ হত্যার দায়ে শেখ হাসিনা, তাঁর সরকারের মন্ত্রী ও নেতাদের পাশাপাশি দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে, গত সপ্তাহের তিন দিনের এই আন্দোলন রাজনৈতিক মহলে নতুন ভাবনার উদ্রেক করেছে। আবার গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃস্থানীয় তরুণদের মধ্যে বিভক্তির আভাস পাওয়া যাচ্ছে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর ডাকে আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ইসলামপন্থী দল ও সংগঠনগুলো এক জায়গায় এসেছে। এটাকে রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তিরা আগামী নির্বাচন ও ভবিষ্যতের রাজনীতির জন্য তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা মনে করছেন।

তবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার মতো বিষয়গুলো সামনে আসায় নির্বাচনের বিষয়টি আলোচনার বাইরে চলে যাচ্ছে, এমনটা মনে করেন না এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব৷ তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি উল্টো অতি দ্রুত নির্বাচনকে বেশি ফোকাস করে বর্তমান জাতীয় স্বার্থ বা আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে শক্ত ভূমিকা রাখছে না৷ এনসিপির দিক থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও রাষ্ট্রপতির অপসারণের মতো দাবিগুলো নির্বাচন পেছানোর জন্য তোলা হয়নি৷ এগুলো তোলা হয়েছে জাতীয় স্বার্থে৷

এনসিপির ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র বলছে, গাজীপুরে হাসনাত আবদুল্লাহর ওপর হামলার কয়েক দিনের মাথায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে হাসনাত আন্দোলনের ডাক দেন। এতে এনসিপির নেতৃত্বে শুরুতে দ্বিধা ছিল। পরে সবাই একসঙ্গে রাস্তায় নেমে ভূমিকা রাখলেও কৃতিত্ব যায় হাসনাতের অনুকূলে। এতে ভেতরে-ভেতরে এনসিপির শীর্ষ নেতৃত্বে অস্বস্তি ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। যদিও এনসিপি শুরু থেকেই ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি করে আসছিল।

অবশ্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এর জন্য তো (আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে) অবরোধ করার দরকার নেই। বিএনপি লিখিতভাবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে। আমরা মনে করি, বিচারের মাধ্যমে এর সমাধান হবে।’

এ দিকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার পর উদ্‌যাপনের মধ্যেই সামনে আসে শাহবাগের গণজমায়েতের কর্মসূচিতে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের কর্মী-সমর্থকদের বিতর্কিত স্লোগান এবং জাতীয় সংগীত গাইতে বাধা দেওয়ার ঘটনা। এর রেশ ধরে সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম একাত্তরের গণহত্যার সহযোগীদের ক্ষমতা চাইতে হবে বলে নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট দেন। যিনি ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা ছিলেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতের বিতর্কিত ভূমিকার ইঙ্গিত করে মাহফুজ আলম ওই পোস্ট দেন বলে মনে করা হয়। কারণ, তাঁর ওই পোস্টের পর এনসিপি এবং জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের একটি অংশ পাল্টাপাল্টি প্রচারণা শুরু করে, যা এখনো চলছে।

যুগান্তর

‘প্রতিবাদে উত্তাল ঢাবি’-এটা দৈনিক যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, গভীর রাতে ছুরিকাঘাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যায় শোক, ক্ষোভ আর প্রতিবাদে বুধবার দিনভর উত্তাল ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়সহ জেলা-উপজেলায় বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। সাম্য হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে মঙ্গলবার রাতেই শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। তারা বিভিন্ন ছাত্রাবাস থেকে মিছিল নিয়ে রাজপথে নেমে আসেন।

সাধারণ শিক্ষার্থী, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাত এবং বুধবার দিনভর বিক্ষোভ করেন। তারা সকালে ঘেরাও করেন ভিসির বাসভবন। ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান ও প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবি করেন। এ হত্যার ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একই সঙ্গে একদিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে। আজ বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস পালন করবে।

এদিকে বুধবার রাত ১০টার দিকে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ধুকুরিয়াবেড়া ইউনিয়নের সড়াতৈল গ্রামে মা ও দাদির কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন সাম্য। এরআগে তার জানাজায় অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-সহপাঠী, দলীয় নেতাকর্মী ও আত্মীয়স্বজনসহ হাজারো মানুষ। এ সময় অনেকে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের কাছে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী এসএম শাহরিয়ার আলম সাম্য (২৫)।

কালের কণ্ঠ

দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম ‘প্রতিবাদে উত্তাল শিক্ষাঙ্গন’। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য (২৫) খুন হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে ও আসামিদের দ্রুত বিচারের দাবিতে গতকাল বুধবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ছাত্রদল। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার জন্য উপাচার্য ও প্রক্টরকে দায়ী করে তাঁদের পদত্যাগ দাবি করা হয়।

গত মঙ্গলবার রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্ত মঞ্চের সামনে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে খুন হন সাম্য। এ ঘটনায় এরই মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার কারে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

তাঁরা হলেন মাদারীপুর সদরের এরশাদ হাওলাদারের ছেলে মো. তামিম হাওলাদার (৩০), কালাম সরদারের ছেলে পলাশ সরদার (৩০) এবং ডাসার থানার যতিন্দ্রনাথ মল্লিকের ছেলে সম্রাট মল্লিক (২৮)। তিনজনকে আদালতে হাজির করা হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তৌফিক হাসান তাঁদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। ঢাকার মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট মো. জামসেদ আলমের আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

সাম্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খানকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কমিটিকে অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জরুরি সভায় কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সমকাল

‘ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক মেরুকরণ দৃশ্যপটে’-এটা দৈনিক সমকালের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের সক্রিয় সব সংগঠন ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছে। তবে এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক বিভক্তি তৈরি হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারায় উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে ছাত্রদল। একই দাবি বামপন্থি সংগঠন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও ছাত্র ইউনিয়নের। আজ বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ছাত্রদল।

ইসলামী ছাত্রশিবির এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বিডিএসসি) প্রকাশ্যে পদত্যাগের পক্ষে-বিপক্ষে কিছু না বললেও সংগঠন দুটির নেতারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি কেন-সে প্রশ্ন তুলেছেন। শেখ হাসিনার পতন ঘটানো জুলাই অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারাও একই অবস্থান নিয়েছেন।

ক্যাম্পাস সূত্রের খবর, উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানকে 'জামায়াতপন্থি' বলে মনে করে ছাত্রদল ও বাম সংগঠনগুলো। সংগঠনগুলো 'সংস্কারের আগে' ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন চায় না। তবে উপাচার্যকে সমর্থন করা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রশিবির ও বিডিএসসি প্রশাসনে পরিবর্তন চায় না। তাদের ভাষ্য, উপাচার্য বদল হলে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেবে।

মঙ্গলবার মধ্যরাতে সাম্যকে হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে জড়ো হন তাঁর বন্ধুবান্ধব, সহপাঠী ও ছাত্রদলের নেতাকর্মী। ছাত্রল নেতাকর্মীর একটি দল সেখান থেকে মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করে। উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ বের হয়ে এলে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, 'তোরা আমাকে মেরে ফেল।' পরে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতারা উপাচার্যকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কালী মন্দির এলাকায় যান, যেখানে খুন হয়েছেন সাম্য। পরে ঢামেকে যান উপাচার্য।

এ সময় ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবসহ আরেকটি দল মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে যান। রাত ৩টার দিকের এ মিছিল থেকে উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ এবং প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদের পদত্যাগের দাবি তোলা হয়।

ইত্তেফাক

‘দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে ছাড়ে সম্মত আইএমএফ’-এটি দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের জন্য দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে ছাড়ে সম্মতি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে আইএমএফ ‘স্টাফ লেভেল এগ্রিমেন্ট’-এর কথা জানিয়েছে। এর আগে এপ্রিলে ঋণ পর্যালোচনায় বাংলাদেশে সফরে এলেও ঋণ প্রদানে কোনো চুক্তিতে পৌঁছায়নি আইএমএফ। এবার সেই চুক্তির কথা জানাল সংস্থাটি। বোর্ড সভায় উপস্থাপনের পর এই অর্থ ছাড় করা হবে। এদিকে অর্থমন্ত্রণালয় গতকাল আশা প্রকাশ করেছে, জুনের মধ্যে দুই কিস্তির ১৩০ কোটি ডলার বাংলাদেশ পাবে।

আইএমএফ তার বিবৃতিতে জানিয়েছে, ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে ঋণের আকার বৃদ্ধি করতে সম্মত হয়েছে সংস্থাটি। আগের প্রতিশ্রুত ঋণের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হবে ৭৬ কোটি ২০ লাখ ডলার। এর ফলে আইএমএফের ঋণের আকার দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। এবার দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ে বাংলাদেশ পাবে ১৩০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ এসডিআর (স্পেশাল ড্রইং রাইটস)। উল্লেখ্য, ঋণের কিস্তি ছাড়ে শর্ত পূরণ না হওয়ায় এতদিন কিস্তির অর্থ আটকে রাখা হয়। গতকাল বুধবার ডলারের বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

তার আগের দিন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ নামে নতুন দুটি বিভাগ গঠনের ঘোষণা আসে। এছাড়া ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ জারি করা হয়। মূলত এই তিন সিদ্ধান্তে আটকে থাকে আইএমএফের ঋণের কিস্তি।  তবে ঋণের কিস্তি ছাড়ের কথা জানালেও আইএমএফ আরো সংস্কারের তাগিদ দিয়েছে। বিশেষ করে রাজস্ব আদায় বাড়াতে কর ছাড় কমিয়ে আনার তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি। অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে আনতেও গুরুত্ব দিয়েছে। ডলারের দর বাজারভিত্তিক করায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলে প্রত্যাশা করা হয়েছে।

বণিক বার্তা

দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম ‘ডলারের বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক’। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে ডলারের বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে আন্তঃব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রাবাজারেই নির্ধারিত হবে ডলারের দর। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তির শর্ত পূরণের অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া ইস্যুতে গত কয়েক মাস ধরেই আইএমএফের সঙ্গে দরকষাকষি করে আসছিল সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দাতা সংস্থাটির শর্তেই নিজেকে সমর্পণ করেছে বাংলাদেশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে গতকাল দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। একই সঙ্গে আগামী মাস তথা জুনের মধ্যেই আইএমএফের ঋণের দুই কিস্তিসহ ৩৫০ কোটি ডলার ঋণ পাওয়ার কথা জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।

গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আইএমএফের ঋণ চুক্তির শর্ত ছিল ডলারের বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া। সংস্থাটির পক্ষ থেকে এর আগে এ বিষয়ে তাগাদা দেয়া হলেও আমরা বলেছি, আমাদের অর্থনৈতিক পরিবেশ ও সামগ্রিক স্থিতিশীলতা পর্যাপ্ত হয়নি। বিনিময় হার বাজারের ওপর পুরোপুরি ছেড়ে দিতে আমরা প্রস্তুত নই। কিন্তু এখন মনে করছি, আমাদের অবস্থা আগের চেয়ে অনেক স্থিতিশীল হয়েছে। বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দিতে আমরা প্রস্তুত।’

আজকের পত্রিকা

‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অস্থিরতা’-এটি দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, সরকারপ্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বৈদেশিক সম্পর্কের নানা দিক সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে ঝামেলা তৈরি হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর দপ্তর মনে করছে, অন্তর্বর্তী সরকারের ধরন এবং সরকারপ্রধানের কাজের যে বৈচিত্র্য ও গতি, তার সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাল-লয় ঠিক রেখে চলতে পারছে না। এ ক্ষেত্রে সর্বশেষ উদাহরণ, প্রধান উপদেষ্টার জাপান সফর সামনে রেখে টোকিওতে আজ অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পরামর্শমূলক সভা (এফওসি) নিয়ে একের পর এক সিদ্ধান্তে বদল।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজের গতি প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় কদিন পরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বদলানোর আওয়াজ ওঠে। মুহাম্মদ ইউনূস অবশ্য বৈদেশিক সম্পর্কের নানা দিক দেখভাল করতে উচ্চপর্যায়ে নতুন নতুন মুখ যুক্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের কৌশল নিয়েছেন। এর মধ্যেও কিছু ঝামেলা তৈরি হওয়ায় অবশেষে সরকার পররাষ্ট্রসচিব বদলানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

পররাষ্ট্রসচিব বদলানো হচ্ছে কি না—প্রশ্নটি গত বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকা থেকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলমকে করা হলে তিনি নিরুত্তর থাকেন। সেদিনই একই প্রশ্ন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের অন্য এক কর্মকর্তাকে করা হলে তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্রসচিব বদলানোর কথা অনেক দিন থেকেই হচ্ছে।’

দেশ রূপান্তর

দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রধান শিরোনাম ‘চট্টগ্রাম বন্দরকে নিতে হবে বিশ্বমানে’। প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দরকে আন্তর্জাতিকমানের বন্দরে উন্নীত করতে অন্তর্বর্তী সরকার বিশ্বের খ্যাতিসম্পন্ন বন্দর ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃৎপিন্ড। কিন্তু যদি হৃৎপিন্ড দুর্বল হয়, কোনো ডাক্তারই তা আর ভালো করতে পারে না। তাই একে বিশ্বমানের করতে হবে।’

গতকাল বুধবার দিনব্যাপী চট্টগ্রাম সফরের প্রথম কর্মসূচি হিসেবে নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালে বন্দরের সক্ষমতা সম্পর্কে তার কাছে ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন ড. ইউনূস।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য একটি বড় সুযোগ। যদি সরকারের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত হয়, তাহলে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি বদলাতে হলে চট্টগ্রাম বন্দরই আমাদের আশা। এটি ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। বন্দর ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত বৈশ্বিক পর্যায়ের শীর্ষ সংস্থাগুলোকে আগেও ডাকা হয়েছিল, কিন্তু কার্যকর কোনো অগ্রগতি হয়নি।’

বাংলাদেশ প্রতিদিন

দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতার খবর ‘জাতীয় ঐকমত্য কতদূর’। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবগুলোর কতটার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে তা আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই চূড়ান্ত করা হবে। ২০ মে’র মধ্যে দলগুলোর সঙ্গে প্রাথমিক সংলাপ শেষ করতে চায় কমিশন। এরপর তিন থেকে চার দিনের মধ্যে চূড়ান্ত করবে মতামত। এরপর রাজনৈতিক দলগুলোকে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনার জন্য ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হবে। ওই চিঠিতে বিষয়ভিত্তিক আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে। এসব বিষয় নিয়ে একটি রিসার্চ টিম কাজ করছে। তবে ঐকমত্য কমিশন কবে নাগাদ চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারবে তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

এরই মধ্যে দলগুলোর পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাজের অগ্রগতি নিয়ে নানান ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে। পাশাপাশি কোনো কোনো দল থেকে বিভিন্ন ধরনের সুপারিশ ও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিএনপিসহ কয়েকটি দল সংস্কার প্রক্রিয়াকে চলমান হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। তারা জানিয়েছে, নির্বাচিত সরকারের হাতে সংস্কার কার্যক্রম তুলে দেওয়া উচিত।

আবার কোনো কোনো দল নির্বাচনের আগেই কিছু মৌলিক সংস্কারের বাস্তবায়ন দেখতে চায়। এরই অংশ হিসেবে বেশ কিছু সংস্কার অধ্যাদেশের মাধ্যমে করার সুপারিশ ও প্রস্তাব দিয়েছে দলগুলো। আবার সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করার কোনো সুযোগ নেই বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে কয়েকটি দল। তাদের দাবি, সংস্কার প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার।

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status