খেলা
মিরাজ-নাঈমকে না দেখে অবাক বাশার
ইশতিয়াক পারভেজ
৬ মে ২০২৫, মঙ্গলবার
দেশের টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল)। ২০ ওভারের ফরম্যাটের জন্য ক্রিকেটার বেছে নিতে এই টুর্নামেন্টের দিকেই নজর থাকে নির্বাচকদের। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই টি-টোয়েন্টি লীগ থেকেই জাতীয় দলে জায়গা করে নেন বেশির ভাগ ক্রিকেটার। বাংলাদেশে ঘটছে ব্যতিক্রম। সবশেষ বিপিএল ২০২৪-এর ম্যান অব দ্যা টুর্নামেন্ট মেহেদী হাসান মিরাজ। আসরের প্লে অফে খেলা দল খুলনা টাইগার্সের হয়ে ১৪ ম্যাচে ব্যাট হাতে ৩৫৫ রান ও ১৩ উইকেট শিকার তার। একই দলের হয়ে ১৪ ম্যাচে ব্যাট হাতে ৫১১ রান করে আসরের সর্বোচ্চ রানের মালিক নাঈম শেখ। কিন্তু সংযুক্ত আরব আমিরাত ও পাকিস্তান সফরে ৭ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য ঘোষিত দলে জায়গা হয়নি তাদের দু’জনের। এই দু’জনকে না থেকে বেশ অবাক হয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন। দৈনিক মানবজমিনকে তিনি বলেন, ‘নাঈম শেখ রান করেছে সব ফর্যামেটে। লাল আর সাদা দুই বলেই তার পারফরম্যান্স ভালো। সে জাতীয় দলের ওপেনিংয়ে জায়গা করে নিতে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী। সে নিজেকে প্রমাণ করেছে, জাতীয় দলে আসতে পারতো। নাঈম ছাড়াও মিরাজ টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা করে নেয়ার দাবিদার ছিলই। সবশেষ দু’জন তো বিপিএলে দারুণ পারফরম্যান্স করেছে। তাদের দলে রাখলে ভালো হতো। আশা করি তাদের পরে সুযোগ আসবে।’
আসন্ন আরব আমিরাত ও পাকিস্তান সফরকে সামনে রেখে ১৬ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বিসিবি। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ ছন্দে থাকা নাঈমকে দলে না রাখলেও আছেন পাঁচ ওপেনার। এর মধ্যে তানজিদ হাসান তামিম, লিটন কুমার দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, পারভেজ হোসেন ইমন ছাড়াও আছেন সৌম্য সরকার। নির্বাচকদের মতে অধিনায়ক লিটনকে তারা তিনে খেলাবেন। সেই ক্ষেত্রে ওপেন করবেন কোন দু’জন? তামিম অটো চয়েজ ওপেনিংয়ে। তার সঙ্গে সৌম্য কিংবা ইমন খেলবেন। ৭ ম্যাচে সবাইকেই সুযোগ দেয়ার কথা বলেছেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। কিন্ত প্রশ্ন হচ্ছে তামিম ছাড়াও বাকি যে দু’জনের ওপর ওপেনিং ভরসা রাখতে হবে তাদের মধ্যে সৌম্য এখনো নিজেকে ধারাবাহিক হিসেবে প্রমাণ করতে ব্যর্থ। ইমন নতুন তাই তাকে আরো সুযোগ দিতে হবে। তাই নাঈমকে একটা সুযোগ হয়তো দেয়া যেতে পারতো। ঘরোয়া ক্রিকেট দারুণ ছন্দে তিনি। সবশেষ বিপিএলে ছাড়াও ডিপিএলেও ছিলেন ব্যাট হাতে সফল। অবশ্য প্রধান নির্বাচক তাদের দলে না নেয়ার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘মিরাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ার জাতীয় দলের জন্য টেস্ট এবং ওয়ানডেতে বিশেষ করে। বিশ্ব র?্যাংকিংয়েও শীর্ষে আছে। (টি-টোয়েন্টিতে) এখানে ৫টা বোলার যারা থাকে তাদের ৪ ওভার বল করতেই হবে। এখানে শেখ মেহেদী (হাসান) একটু এগিয়ে আছে। আমি মনে করি মিরাজ আমাদের টি-টোয়েন্টি প্ল্যানিংয়ে একটু ব্যাকফুটে আছেন। তিনি যেকোনো পরিস্থিতিতে যেকোনো সময়ে মানিয়ে নেওয়ার জন্য চমৎকার প্লেয়ার। তাকেও আমরা খেলার মধ্যে রাখব।’
এছাড়াও নাঈমের দলে জায়গা না পাওয়া প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচক লিপু জানান, নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দল কিন্তু কম শক্তিশালী নয়। এখানে যদি সাদা বলে সুযোগ পায় তাহলে মেধার প্রকাশ ঘটানো যায় টি-টোয়েন্টির চাইতে বেশি। লাল বলেও সে ভালো করেছে। একই ব্যাপার অঙ্কনের ক্ষেত্রেও। তাদের ম্যাচুরিটি কীভাবে গ্রো করা যায়, আন্তর্জাতিকে যাওয়ার আগে নিজেদের শাণিত করার সুযোগ। সামনে আরও ম্যাচ আছে, সুযোগ আসবে ইনশাআল্লাহ।’
অন্যদিকে প্রশ্ন উঠেছে লিটন দাসকে নিয়েও। ২০২৬ এর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত তাকে অধিনায়ক করা হয়েছে। কিন্তু ৯৫ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা উইকেট রক্ষক ব্যাটারের পারফরম্যান্স নিয়ে আছে কঠিন প্রশ্ন। মাত্র ২৪.৪৪ গড়ে রান করেছেন ৯৩ ইনিংসে খেলে। নেই কোন সেঞ্চুরি তবে ১১ ফিফটি হাঁকিয়েছেন। কিন্তু সেটিও ধারাবাহিকভাবে নয়। ব্যাট হাতে দলের জন্য কখনোরই নিজেকে অপরিহার্য প্রমাণ করতে পারেননি তিনি। তবে এই ফরম্যান্সহীনতা লিটনের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে না বলেই মনে করেন হাবিবুল বাশার। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না লিটনের জন্য নেতৃত্ব ও পারফরম্যান্স চ্যালেঞ্জ হবে। সে দীর্ঘ দিন ধরে খেলছে, এখন লম্বা সময়ের জন্য ভালো একটি দল পেয়েছে। আশা করি নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে ভালো কিছুই করতে পারবে। তার ওপর আস্থা রাখা যায়।’