ঢাকা, ৪ মে ২০২৫, রবিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৫ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

অনলাইন

সহযোগীদের খবর

তিন ইস্যু ঘিরেই সংকট

অনলাইন ডেস্ক

(৫ ঘন্টা আগে) ৪ মে ২০২৫, রবিবার, ৯:৪০ পূর্বাহ্ন

mzamin

যুগান্তর

দৈনিক যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম ‘তিন ইস্যু ঘিরেই সংকট’। প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচন, সংস্কার এবং গণহত্যা-ফ্যাসিবাদে জড়িতদের বিচার ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ-এ তিন ইস্যুতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দেখা দিয়েছে মতপার্থক্য। যার কারণে তৈরি হচ্ছে নানা সংকট। মতৈক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোও ধারাবাহিক বৈঠক করলেও কার্যত ফলাফল একরকম শূন্য। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকেও ঐকমত্যে পৌঁছাতে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে এখন পর্যন্ত মতপার্থক্য দূর হওয়ার কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বড় দলগুলো যখন একে অপরের বিপরীত অবস্থান নিচ্ছে, তখন ঐকমত্য হওয়া বেশ কঠিন। দলগুলো তাদের দলীয় রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে যেতে পারছে না। গণতন্ত্রের স্বার্থে কিছুটা ছাড় দিয়ে হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর একই মেরুতে আসতে হবে। ভিন্নমত বা মতপার্থক্য দূর না হলে সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে নানা সন্দেহ ঘুরপাক খাচ্ছে। অপরদিকে গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর নিজস্ব অবস্থান থাকবে-এটাই স্বাভাবিক। তবে এক্ষেত্রে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে আরও সক্রিয় করতে হবে। কেননা, বিচার প্রক্রিয়ার দৃশ্যমান গতি দেখতে চায় দেশের মানুষ।

তারা আরও বলেন, প্রত্যেক দলের একটা নিজস্ব মতামত রয়েছে। তাই ভিন্নমত থাকাটাই স্বাভাবিক। আবার একথাও সত্য যে, আওয়ামী লীগ টানা সাড়ে ১৫ বছরে যেভাবে দুঃশাসন চালিয়েছে, মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং সর্বোপরি চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে যেভাবে সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে তাতে দল হিসাবে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করার নৈতিক অধিকার হারিয়ে ফেলেছে। ফলে ক্ষমতার রাজনীতির কারণে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ অন্যান্য গণতান্ত্রিক দলগুলোর মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে মতবিরোধ থাকলেও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সবাই ঐক্যবদ্ধ। এছাড়া বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রত্যেকটি রাজনৈতিক শক্তির একে অপরের সঙ্গে একটা আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। সঙ্গত কারণে দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে দ্রুতই সব কিছুর সমাধান হবে বলেও আশাবাদী হতে চান রাজনৈতিক বিশ্লষকরা।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে বিএনপি ইতোমধ্যে তাদের অবস্থান দফায় দফায় স্পষ্ট করেছে। দলটি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনও চায় না দলটি। আবার জাতীয় নির্বাচনের বিদ্যমান পদ্ধতির পক্ষে বিএনপি। অপরদিকে জামায়াতে ইসলামী বলছে-জাতীয় নির্বাচনের উপযুক্ত সময় আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি, এপ্রিল পার হওয়াও উচিত নয়। তবে দলটি জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায়। আবার নির্বাচনে সংখ্যা বা আনুপাতিক (পিআর) প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির পক্ষে জামায়াত। অন্যদিকে বিচার ও বেশ কিছু মৌলিক বিষয়ে সংস্কারের আগে জাতীয় নির্বাচনের পক্ষে নয় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি আগে স্থানীয় সরকার ও গণপরিষদ নির্বাচন চায়। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের পক্ষেও এনসিপি।

সংস্কার ইস্যুতে বিএনপির অবস্থান হলো-জাতীয় নির্বাচনের আগে দ্রুত কিছু প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করা। একই অভিমত জামায়াতেরও। তবে এনসিপি চায় মৌলিক সংস্কার।

এছাড়া গণহত্যা ও ফ্যাসিবাদে জড়িতদের বিচার ভোটের আগে দৃশ্যমান দেখতে চায় বিএনপি। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত যা বলা হয়েছে সেটি হলো-জনগণ নির্ধারণ করবে কোন দল থাকবে কি থাকবে না। জনগণকেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিতে হবে।

জামায়াতও চায় ভোটের আগে দৃশ্যমান বিচার। আর আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী সরকার বিবেচনা করবে বলে মনে করে দলটি।

এনসিপির জোরালো দাবি-ভোটের আগে সরকারকে গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতেই হবে। এছাড়া আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে দলটি শুক্রবার এক সমাবেশ থেকে তাদের অবস্থান অনেকটা স্পষ্ট করেছে। এনসিপির নেতারা তাদের বক্তৃতায় বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতেই হবে। জনগণ ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগকে লাল কার্ড দেখিয়ে দিয়েছে। মূলত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবিতে এনসিপি এ সমাবেশের আয়োজন করে।

সৃষ্ট সংকটের এ তিনটি ইস্যু নিয়ে জানতে চাইলে শনিবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যুগান্তরকে বলেন, ‘বিএনপির অবস্থান খুব পরিষ্কার। আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচন খুব দ্রুত চাই। সংস্কারও চাই। খুব স্পষ্ট করে বলেছি, যে সংস্কারগুলোর বিষয়ে সব দল ঐকমত্য হবে, আমরা সেগুলোর চার্টারে (সনদ) স্বাক্ষর করতে রাজি আছি। যার ওপর ভিত্তি করে নির্বাচনের দিকে চলে যেতে পারি। বাকি সংস্কারগুলো নিয়ে নির্বাচিত সরকার সংসদে কথা বলবে।’

গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপি গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার শাসনামলে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছে। যারা দেশের মানুষকে হত্যা করেছে, তাদের বিচার অবশ্যই হতে হবে। তবে আমরা এই কথা বলে আসছি যে, কোন পার্টি নিষিদ্ধ হবে, কোন পার্টি কাজ করবে, কোন পার্টি কাজ করবে না-সেসব বিষয়ে জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। জনগণের কাছ থেকে এ সিদ্ধান্ত আসতে হবে।’

জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান শনিবার দলের জেলা আমির সম্মেলনে এ বিষয়ে বলেন, জাতীয় নির্বাচনের জন্য আমরা দুটি সময়কে উপযুক্ত মনে করি। একটি ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে। তবে যদি এ সময়ের মধ্যে সংস্কারগুলো এবং বিচারের দৃশ্যমান প্রক্রিয়া জনমনে আস্থা সৃষ্টির পর্যায়ে না আসে, তাহলে সর্বোচ্চ এপ্রিল পার হওয়া উচিত হবে না। সংস্কার কার্যক্রম যেটা হাতে নেওয়া হয়েছে, তা যদি আক্ষরিকভাবেই গতিশীল করা হয় এবং অংশীজনরা সে রকম সহযোগিতা করেন, তাহলে সরকারের ঘোষিত সময়ের মধ্যে সংস্কার করে নির্বাচন করা সম্ভব বলে মনে করেন জামায়াতের আমির।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার সম্প্রতি যুগান্তরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এটা আমরা আগেই বলেছি, নিষিদ্ধ করার কাজ তো সরকারের। জনগণের প্রত্যাশা যেটা, সেটা সরকারকে বিবেচনায় নিতে হবে। দল নিষিদ্ধের কাজ তো সরকার করে, কোনো পার্টি তো নিষিদ্ধ করে না।’

শুক্রবার রাজধানীতে এক সমাবেশে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, অবিলম্বে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। নৌকা মার্কাকে বাংলাদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে হবে। বিচার চলা পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আইন করে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।

অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্রকাঠামো ও শাসনব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে মৌলিক সংস্কারের উদ্দেশ্যে ‘জুলাই সনদ’ কার্যকর করতে হবে। একই সঙ্গে জুলাই সনদে সুস্পষ্টভাবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কথাটি থাকতে হবে। আইনসভা (সংসদ) এবং গণপরিষদ নির্বাচন একসঙ্গে করার দাবিও তোলেন এনসিপির আহ্বায়ক।

মূলত সংবিধান সংস্কারের স্পর্শকাতর বিষয়গুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আপত্তি, ভিন্নমত বা মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির ভিন্নমত আছে কোনো কোনো ক্ষেত্রে। এ বিষয়ে বাম ও ইসলামী দলগুলোর মধ্যেও রয়েছে মতপার্থক্য।

এনসিপি বর্তমান সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান চাইছে। সেজন্য তারা গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি তুলেছে। এনসিপির এই দাবির সঙ্গে বিএনপি, জামায়াতসহ বেশিরভাগ দলই একমত নয়। এই ইস্যুতেই অন্যান্য দলের সঙ্গে এনসিপির মতপার্থক্য বেশি। এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা ও দলীয় প্রধানের পদে থাকতে পারবেন না বলে সংস্কার কমিশন প্রস্তাব করেছে, এ নিয়ে আপত্তি বিএনপির। দলটি জানিয়েছে, এটি রাজনৈতিক দলের নিজেদের সিদ্ধান্তের বিষয়। এ ব্যাপারে পরিবর্তন বা সংস্কারের কোনো প্রয়োজন নেই।

জামায়াত অবশ্য বলছে, সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী এক ব্যক্তি হতে পারেন। দলীয় প্রধান অন্য কেউ থাকতে পারেন। তবে বেশিরভাগ বামপন্থি ও অন্যান্য ইসলামি দল সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত।

এদিকে কোনো ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না-এই সংস্কার প্রস্তাবের বিষয়েও একমত নয় বিএনপি। দলটি বলছে, কোনো ব্যক্তি টানা তিনবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। এছাড়া সরকারের মেয়াদ ৪ বছর করার প্রস্তাবে সক্রিয় সব দলেরই আপত্তি রয়েছে। তারা ৫ বছর মেয়াদের কোনো পরিবর্তন চায় না। তবে ৪ বছরের পক্ষে এনসিপি।

সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা ও সংস্কারের পরিধি নিয়ে চলমান বিতর্কের পাশাপাশি দ্বিমত-ভিন্নমত দেখা দিয়েছে সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন এবং আগে স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচন করা না করা নিয়েও। শুরু থেকেই বিএনপি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ও আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিপক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। আর জামায়াতে ইসলামী পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ও আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানাচ্ছে।

এ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ যুগান্তরকে বলেন, যারা জনগণের প্রত্যক্ষ রায়কে ভয় পাচ্ছেন তারাই আনুপাতিক পদ্ধতির কথা বলছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি বিদ্যমান পদ্ধতিতেই নির্বাচন হতে হবে।

আনুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন ও আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় না বিএনপির মিত্র রাজনৈতিক দল-জোটগুলোও। ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এলডিপিসহ মিত্র দল-জোটগুলো বিএনপির অবস্থান বা প্রস্তাবের সঙ্গেই সহমত পোষণ করেছে। অন্যদিকে, এই দুটি ইস্যুতে চরমোনাই পিরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ কয়েকটি ইসলামি রাজনৈতিক দল এবং তরুণদের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অবস্থানের মিল রয়েছে জামায়াতের সঙ্গে। এই দলগুলোও আনুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন এবং সংসদের আগে স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচন দাবি করছে।

বিএনপির মিত্র জোট গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শীর্ষ নেতা নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না যুগান্তরকে বলেন, সংস্কারের সব বিষয়ে ঐকমত্য বা এক অবস্থানে দলগুলোকে আনা বেশ কঠিন। তবে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হলেই দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দেওয়া উচিত।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কারের ক্ষেত্রে যে ঐকমত্য তৈরি হবে, সেটা নিয়ে একটা জাতীয় সনদ তৈরি করতে হবে। সেখানে সব রাজনৈতিক দল পুরো জাতির সামনে অঙ্গীকার এবং স্বাক্ষর করবে। এই সংস্কারকে গণভোটের মাধ্যমে একটা ভিত্তি দেওয়া, যাতে পরবর্তী সরকার এসে এটিকে বাতিল করতে না পারে। এই মে মাসে কিংবা জুনের মধ্যেও ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় সনদ প্রণয়ন করতে পারে। তাহলে তো ডিসেম্বরে নির্বাচন হতে কোনো বাধা নেই। তিনি বলেন, সংস্কার বাস্তবায়নের পাশাপাশি নির্বাচনের সুস্পষ্ট একটি রোডম্যাপ দিতে হবে। বিএনপিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলই অভ্যন্তরীণ আলোচনায় একমত হয়েছে, তারা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এই গণ-অভ্যুত্থান ঘটিয়ে এ দেশের জনগণ ওই দলকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে রায় দিয়ে দিয়েছে। এখন আর আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে জনগণের নতুন করে রায় বা মতামতের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। আশা করি সরকারও ছাত্রলীগের মতো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম মনে করেন, দলগুলো তাদের দলীয় রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অবস্থান নিচ্ছে। সেটা নেওয়াটাই স্বাভাবিক। মৌলিক বা স্পর্শকাতর নয়, এমন বিষয়গুলোতে ঐকমত্য হওয়া উচিত। সে অনুযায়ী ঐকমত্য কমিশন হয়তো সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ‘চার্টার’ তৈরি করতে পারে। ‘চার্টার’ তৈরি হলেই জাতীয় নির্বাচনের দিকে যাওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি।

প্রথম আলো

‘দুই মাসের মধ্যে সব মামলা প্রত্যাহার চাইল হেফাজত’-এটি দৈনিক প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর। খবরে বলা হয়, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে থাকা সব মামলা দুই মাসের মধ্যে প্রত্যাহার চেয়েছেন সংগঠনের নেতারা। একই সঙ্গে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করাসহ মোট ১২ দফা দাবি জানিয়েছে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক এই সংগঠন।

গতকাল শনিবার ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত মহাসমাবেশ থেকে এসব দাবি তোলা হয়। পাশাপাশি নারীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আগামী তিন মাসের মধ্যে বিভাগীয় সম্মেলন এবং ২৩ মে পূর্বঘোষিত চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সংগঠনটি।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গতকাল সকাল নয়টায় মহাসমাবেশ শুরু হলেও ভোর থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মী ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন।

মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা শাহ্ মুহিব্বুল্লাহ্ বাবুনগরী। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, কোরআন-সুন্নাহবিরোধী কোনো আইন মেনে নেওয়া হবে না। নারী সংস্কার কমিশন ভেঙে দিয়ে আলেমদের পরামর্শ নিয়ে পুনর্গঠন করতে হবে।

দেশ এখন নানান সংকটে রয়েছে উল্লেখ করে হেফাজতের আমির বলেন, ‘মানবিক করিডরের’ নামে সাম্রাজ্যবাদীরা এ দেশকে নতুন যুদ্ধক্ষেত্র বানাতে চায়। ষড়যন্ত্র ঠেকাতে ও অভ্যন্তরীণ সংকট মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।

কালের কণ্ঠ

‘জোরালো হচ্ছে দ্রুত ভোটের দাবি’-এটি দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গঠিত অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যকাল এরই মধ্যে ৯ মাস পূর্ণ হতে চলেছে। রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ কতটা এগোল এবং কবে নির্বাচন হচ্ছে, তা এখনো খুব স্পষ্ট নয়। সংস্কার ও নির্বাচনের টাইমফ্রেম নিয়ে জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কখনো নৈকট্য ও কখনো দূরত্বের দোলাচল চলমান। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে দলগুলোর দূরত্ব বাড়ছে বলেও অনেকের ধারণা।

প্রশ্ন উঠেছে, নির্বাচন কি সংস্কারের প্রতিপক্ষ? নির্বাচন চাওয়া কি অপরাধ? সময় যত পার হচ্ছে নির্বাচনের চাপ বৃদ্ধি এবং এসংক্রান্ত বিষয়ে দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কিছু মন্তব্য জনমনে নানা বিষয়ে অনিশ্চয়তা ও আশঙ্কা বাড়াচ্ছে। কেউ বলছেন, নির্বাচন ছাড়া ডিক্রি জারি করে সংস্কার হবে বালুতে গাঁথুনি। শক্ত ভিত্তির ওপর সংস্কার করতে হলে নির্বাচন অপরিহার্য। কারো মন্তব্য, নির্বাচনের জন্য ক্রমবর্ধমান চাপের কারণে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে টিকে থাকা সম্ভব নয়। কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার গত শুক্রবার বগুড়া প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এই মন্তব্য করেন।

রাজনৈতিক দলগুলো যা বলছে : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি সব সময় জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, নির্বাচিত জাতীয় সংসদ ও নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছে। অথচ কিছুদিন ধরে অত্যন্ত সুকৌশলে এমন একটি আবহ তৈরির অপচেষ্টা চলছে, যেখানে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি করাটাই যেন অপরাধ। নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে এসব অবজ্ঞাসূচক বক্তব্য পলাতক স্বৈরাচারকে আনন্দ দেয়।

সমকাল

দৈনিক সমকারের প্রধান শিরোনাম ‘আরও পাঁচ হাজার নতুন রোহিঙ্গা কক্সবাজারে’। প্রতিবেদনে বলা হয়, কক্সবাজারে আরও ৫ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। এ নিয়ে নতুন রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার। ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ১ মে পর্যন্ত তারা বাংলাদেশে ঢুকেছে। এদের ‘নতুন রোহিঙ্গা’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এর আগে থেকে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাস করছে আরও ১২ লাখ রোহিঙ্গা। সরকারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সমকালকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গতকাল শনিবার রাতে মিজানুর রহমান সমকালকে বলেন, নতুনভাবে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা ১ লাখ ১৮ হাজারে দাঁড়িয়েছে। তারা কক্সবাজারে বিভিন্ন ক্যাম্পে আছে। কেউ আবার বিদ্যালয়সহ রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন স্থাপনায় আশ্রয় নিয়েছে।

নতুন রোহিঙ্গাদের আবাসস্থলের ব্যবস্থা করতে সম্প্রতি জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইচসিআর) বাংলাদেশকে চিঠি দিয়েছে। তবে গতকাল পর্যন্ত বাংলাদেশ চিঠির জবাব দেয়নি বলে জানান মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, নতুন আসা রোহিঙ্গাদের আবাসস্থলের ব্যবস্থার অনুরোধ জানিয়ে ইউএনএইচসিআরের চিঠির জবাব আমরা এখনও দিইনি। তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে নতুনভাবে ঘর তৈরি করে দেওয়ার মতো অবস্থায় আমরা নেই। আমরা প্রত্যাবাসনে জোর দিচ্ছি।

ইত্তেফাক

‘দাবি না মানলে দেশ অচলের হুঁশিয়ারি হেফাজতের’-এটি দৈনিক ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়,সংগঠনের নেতাকর্মীদের নামে মামলা প্রত্যাহার, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বিলুপ্ত করা,সংবিধানে প্রস্তাবিত বহুত্ববাদ বাতিল,শাপলা চত্বরে গণহত্যার বিচারসহ ৪ দাবীতে গতকাল শনিবার রাজধানী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম। এই সমাবেশ থেকে সব দাবি না মানলে দেশ অচলের হুঁশিয়ারি দিয়ে নেতারা বলেছেন, কোরআন-সুন্নাহর বিরুদ্ধে যায় এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত নিবেন না। নিলে অন্তর্বতীকালীন সরকারের পরিনতি হবে ভয়াবহ। হেফাজত ড.মুহাম্মদ ইউনূস সরকারকে সহযোগিতা করছে। তবে  হেফাজত মাঠে নামলে কোন উপদেষ্টা থাকতে পারবে না। নারীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে তিন মাসের মধ্যে বিভাগীয় সম্মেলন এবং আগামী ২৩ মে বাদ জুমা চার দফা আদায়ে সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল করবে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠনটি।

মহাসমাবেশ ঘিরে গতকাল ভোর থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হতে থাকেন। সমাবেশে অংশ নিতে আসা নেতাকর্মীদের ভিড়ে ভোর থেকে শাহবাগ ও আশপাশের এলাকা লোকারন্য হয়ে ওঠে। সকাল নয়টা থেকে সমাবেশ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। মহাসমাবেশে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দেন সংগঠনটির মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান। এর আগে ১২ দফা ঘোষণাপত্র পাঠ করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা মাহফুজুল হক।

সমাবেশের সভাপতি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ করেন এই মহাসমাবেশ। সমাবেশ ঘিরে মত্সভবন, শাহবাগ মোড়সহ বিভিন্ন জায়গায় বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ছিল। কাকরাইল মোড়ে প্রস্তুত ছিল পুলিশের এপিসি ও জলকামানের গাড়ি।

বণিক বার্তা

দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম ‘পরামর্শক কমিটির সুপারিশ আমলে না নিয়েই এনবিআর পৃথকের খসড়া অধ্যাদেশ’। খবরে বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) সংস্কারের অংশ হিসেবে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে পৃথক করার উদ্যোগ নেয় সরকার। তার জন্য গঠিত পরামর্শক কমিটি বেশকিছু সুপারিশও করে। কিন্তু সেগুলো আমলে না নিয়েই তৈরি খসড়া অধ্যাদেশ উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন পায়।

খসড়াটি অনলাইনে প্রকাশ হলে তা দেখে আয়কর ও শুল্ক ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। এ বিষয়ে কাস্টমস অ্যাসোসিয়েশন গত সপ্তাহে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে তাদের ক্ষোভ ও বাতিলের দাবি জানিয়েছে। ট্যাকসেশন অ্যাসোসিয়েশন গতকাল বিশেষ সাধারণ সভা করেছে। তারাও অনুমোদিত খসড়া অধ্যাদেশ বাতিল চান।

এনবিআর সংস্কারে গঠিত পরামর্শক কমিটির সুপারিশে বলা হয়, রাজস্ব নীতি প্রণয়ন ও নীতি বাস্তবায়ন করে রাজস্ব আহরণের কার্যক্রমকে পৃথক করা হবে। নীতি প্রণয়নের কাজটি রাজস্ব কমিশন নামে একটি স্বাধীন সংস্থার ওপর ন্যস্ত থাকবে। সংস্থাটিকে দেয়া হবে বিভাগ মর্যাদা। আর নীতি বাস্তবায়ন ও রাজস্ব আদায়ের কাজটি এখনকার মতোই পুনর্গঠিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড করবে। সেই সঙ্গে বর্তমান কাঠামো পুনর্গঠন করে আয়কর শাখা এবং শুল্ক ও ভ্যাট শাখার সমন্বয়ে বোর্ডকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি স্বতন্ত্র বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে।

আয়কর বিভাগ এবং শুল্ক ও ভ্যাট বিভাগে কর্মরত সদস্য থেকেই নিয়োগ করা হবে বোর্ড চেয়ারম্যান, যারা পাবেন সচিব বা সিনিয়র সচিব পদমর্যাদা। চেয়ারম্যান সরাসরি অর্থমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট করবেন। কর্মরত কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনও বোর্ড করবে।

দেশ রূপান্তর

দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রধান শিরোনাম ‘বিমানের সক্ষমতা নিয়ে জাইকার প্রশ্ন-সন্দেহ!’। খবরে বলা হয়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কাজ একবার দ্রুতগতি তো আরেকবার কচ্ছপগতি। এরপরও টার্মিনাল ঘিরে স্বপ্ন বুনছে কর্তৃপক্ষ। নানা সমস্যা মাথায় নিয়েও চলছে দ্রুততম সময়ে উদ্বোধনের চেষ্টা। চলতি অক্টোবর বা নভেম্বর মাসেই যাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। ইতিমধ্যে সরকারের হাইকমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগও করা হয়েছে।

এদিকে টার্মিনালের আলোচিত গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং নিয়ে নাটক হয়েছে বেশ। এর দায়িত্ব বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পাবে নাকি জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকা পাবে তা নিয়ে হয়েছে প্রতিযোগিতাও। এতে বিমান জয়ী হলেও বিমানের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সন্দেহ পোষণ করেছে জাইকা। ইতিমধ্যে জাইকা বেবিচককে বিষয়টি অবহিত করে বলেছে, বিমান আন্তর্জাতিক মানের সেবা দিতে পারবে না। যদি দিতে পারে তাহলে সব ধরনের সহায়তা করবে জাইকা।

তবে জাইকার সন্দেহ উড়িয়ে দিয়ে বিমান কর্তৃপক্ষ বলছে, বিমানের সক্ষমতা আছে। আরও বাড়াতে সব চেষ্টা চলছে। জনবল বাড়ানোর পাশাপাশি চলতি বছরের মধ্যেই প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনা হবে। ইতিমধ্যে যন্ত্রপাতি ক্রয় ও কিছু লোকবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আগামী দুবছরের জন্য বিমান গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের কাজ করবে।

ডেইলি স্টার

দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান শিরোনাম ‘Parties split over 'pluralism', nat'l constitutional council’ অর্থাৎ ‘বহুত্ববাদ’, জাতীয় সাংবিধানিক পরিষদ নিয়ে দলগুলো বিভক্ত'।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় কয়েকটি বিষয়ে ঐকমত্য পেয়েছে। যেমন, যেমন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন ও দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ-এসব বিষয়ে। তবে কিছু সংবেদনশীল বিষয়ে এখনও মতবিরোধ রয়ে গেছে।

দলগুলোর মধ্যে বিভাজন রয়েছে সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘বহুত্ববাদী’ শব্দ এবং প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা পদ আলাদা করার প্রস্তাব নিয়ে।

বিএনপি ও জামায়াত চাইছে ‘আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা’ ফিরে আসুক, এনসিপি বলছে ইংরেজি ‘প্লুরালিজম’ শব্দের বদলে পরিষ্কার বাংলা ব্যবহার হোক।

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নিয়ে বিএনপি চায় দুইবার টানা, তবে বিরতি দিয়ে তৃতীয়বার সুযোগ থাকুক। জামায়াত ও এনসিপি চাইছে সর্বোচ্চ দুইবার। এনসিপি চায় মেয়াদ হোক চার বছর, অন্যদিকে বিএনপি ও জামায়াত চায় পাঁচ বছর। প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা যেন আলাদা ব্যক্তি হন—এটি বিএনপি প্রত্যাখ্যান করেছে, জামায়াত সিদ্ধান্ত নেয়নি, এনসিপি সমর্থন করেছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন

দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রধান শিরোনাম ‘আপাতত হার্ডলাইন নয়’। খবরে বলা হয়, দ্রুত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারকে অনবরত চাপে রাখতে চায় দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি। সহযোগিতাও অব্যাহত রাখা হবে সরকারের প্রতি। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন চায় বিএনপি। বিএনপি নেতারা মনে করছেন, নির্বাচন নিয়ে সরকার ততটা আন্তরিক নয়। তারা নির্বাচনকে তুলনামূলক কম গুরুত্ব দিচ্ছে।

এ নিয়ে সরকারের সঙ্গে দেনদরবার ছাড়াও যুগপৎ আন্দোলনের শরিক ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা অব্যাহত রেখেছে দলটি। সরকারের ওপর চাপ তৈরির অংশ হিসেবে তাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে। এরপর সংবাদ সম্মেলন করে আবারও অবস্থান ব্যাখ্যার পাশাপাশি প্রয়োজনে যুগপৎ কর্মসূচি দেবে তারা।

জানা গেছে, ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর জনগণের মাধ্যমে চাপ বাড়াতে চায় বিএনপি। এজন্য বছরব্যাপী নানান কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে জনসম্পৃক্তিমূলক কর্মসূচি পালনের কৌশল নিয়েছে দলটি। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি হবে, অন্যদিকে তেমনি দলীয় নেতা-কর্মীরাও চাঙা ও শক্তিশালী হবে। দলও আরও সুসংহত ও সুসংগঠিত হবে। জনগণের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের যোগাযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি নির্বাচনি প্রস্তুতির কাজও অনেকটা এগিয়ে যাবে।

এ লক্ষ্যে সারা দেশে কেন্দ্র থেকে শুরু করে বিভাগ, মহানগর, জেলা-উপজেলা পর্যায়ে দল ও অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে সভা-সমাবেশের মতো জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে চায় বিএনপি। তার মধ্যে চলতি মাসে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল দেশব্যাপী ৮টি সমাবেশ করবে। পাশাপাশি ফ্যাসিস্টবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দল, সমমনা জোট ও দলগুলোকে নিয়েও পালন করা হবে নানা কর্মসূচি। সব কর্মসূচিই হবে নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক। সরকারের বিরুদ্ধে কোনো রকমের হার্ডলাইনে যাবে না তারেক রহমানের দল। দ্রুত নির্বাচনের তাগিদ এবং জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখতেই এই কর্মসূচি।

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

‘দ্য উইক’ ম্যাগাজিনে তারেক রহমানকে নিয়ে কাভার স্টোরি/ ‘নিয়তির সন্তান’

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status