অনলাইন
২০ বছর ধরে নিজের শরীরে সাপের বিষ ঢুকিয়েছেন, তার রক্তই এখন সর্পবিষের ‘সেরা’ প্রতিষেধক
মানবজমিন ডিজিটাল
(২ ঘন্টা আগে) ৪ মে ২০২৫, রবিবার, ১২:৪২ অপরাহ্ন

প্রায় ২০ বছর ধরে ইচ্ছাকৃতভাবে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে নিজের শরীরে সাপের বিষ ঢুকিয়েছেন তিনি । এবার সেই মার্কিন ব্যক্তির রক্ত থেকে বিজ্ঞানীরা একটি ‘অতুলনীয়’ অ্যান্টিভেনম তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। বিশ্বে প্রতি বছর বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত সাপের কামড়ে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। এই পরিসংখ্যান ভাবিয়ে তুলেছিল ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা টিম ফ্রিডকে। ২০০১ সালে তিনি স্থির করেন যে, বিভিন্ন সাপের বিষ ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে নিজের শরীরে প্রবেশ করাবেন। লক্ষ্য একটাই, বিশ্বে সমস্ত সাপে কাটা মানুষদের জন্য একটি উত্তম মাত্রার প্রতিষেধক তৈরি করা। সেই লক্ষ্যে তিনি সফল বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীদের একাংশ। কারণ বিভিন্ন বিষধর সাপের বিষ নিজের শরীরে নেওয়ার ফলে মার্কিন নাগরিক ফ্রিডের রক্তই ‘সেরা’ প্রতিষেধক হয়ে উঠেছে।
সিএনএন-এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ফ্রিডের রক্তে পাওয়া অ্যান্টিবডিগুলো এখন প্রাণী পরীক্ষায় বিভিন্ন প্রজাতির মারাত্মক বিষ থেকে রক্ষাকারী বলে প্রমাণিত হয়েছে। ইমিউনোলজিস্ট জ্যাকব গ্লানভিল ২০১৭ সালে মিডিয়া রিপোর্টের মাধ্যমে ফ্রিডের কথা প্রথম শুনেছিলেন এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে যুগান্তকারী কিছু করার সুযোগ রয়েছে। এই জুটি একসাথে কাজ শুরু করার সাথে সাথে, ফ্রিড ইমিউনোলজিস্ট গ্লানভিল এবং তার সহকর্মীদের ৪০ মিলিলিটার রক্তের নমুনা দান করেন। আট বছর পর, গ্লানভিলের সঙ্গে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাগেলোস কলেজ অফ ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসের চিকিৎসা বিজ্ঞানের অধ্যাপক রিচার্ড জে. স্টক এবং পিটার কোং ১৯ প্রজাতির বিষাক্ত সাপের কামড় থেকে রক্ষা করতে পারে এমন অ্যান্টিভেনমের বিশদ প্রকাশ করেছেন।
বর্তমানে, ঘোড়ার মতো প্রাণীদের মধ্যে সাপের বিষের অল্প পরিমাণে ইনজেকশন দিয়ে অ্যান্টিভেনম তৈরি করা হয়। তবে, বিষ এবং অ্যান্টিভেনমকে ঘনিষ্ঠভাবে মেলাতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, ভারতে সাপ থেকে তৈরি অ্যান্টিভেনম থাইল্যান্ডে একই প্রজাতির বিরুদ্ধে ততটা কার্যকর নাও হতে পারে। তবে ফ্রিডের রক্ত বিভিন্ন ধরনের সাপের বিষ থেকে মানুষজনকে রক্ষা করতে পারবে বলে আশবাদী বিজ্ঞানীরা। যদিও ফ্রিডের রক্ত ব্যবহার করে তৈরি অ্যান্টিভেনম ককটেলটি এখনও মানুষের উপর পরীক্ষা করা হয়নি। ফ্রিড ২০১৮ সালের পর নিজেকে সাপের বিষ দিয়ে ইনজেকশন দেওয়া ছেড়ে দেন। তিনি এখন গ্লানভিলের জৈবপ্রযুক্তি সংস্থা সেন্টিভ্যাক্সের গবেষণায় অবদান রাখছেন।
সূত্র : এনডিটিভি