শেষের পাতা
কাতার আমীরের এয়ার এম্বুলেন্সেই ফিরছেন খালেদা
স্টাফ রিপোর্টার
৪ মে ২০২৫, রবিবার
কাতারের আমীরের দেয়া বিশেষ এয়ার এম্বুলেন্সেই দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সোমবার বিশেষ এই বিমানে তিনি ঢাকা ফিরবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার সন্ধ্যায় গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান। এর আগে সিলেট বিএনপি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশ বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটে সিলেট হয়ে ঢাকা ফিরবেন খালেদা জিয়া। তাকে স্বাগত জানাতে নেতাকর্মীরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানানো হয়।
লন্ডনে অবস্থানরত খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে রাতে তিনি মানবজমিনকে বলেন, কাতারের আমীরের দেয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করেই তিনি ঢাকা ফিরবেন। অ্যাম্বুলেন্সের জন্য হিথ্রো বিমানবন্দরে শ্লটের আবেদন করা হয়েছে। সেটা পাওয়ার পরই ফ্লাইটের সময় জানা যাবে।
ওদিকে গতকাল চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানানোর প্রস্তুতি নিয়ে ঢাকা মহানগরসহ অঙ্গ-সংগঠনগুলোর এক যৌথ সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আশা করছি. ৫ তারিখে বিএনপি চেয়ারপারসন একটি বিশেষ বিমানে, সম্ভবত আমরা যেটা আশা করতেছিলাম, যে বিমানে (কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) তিনি গিয়েছেন- অর্থাৎ কাতারের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, সেই অ্যাম্বুলেন্সের ফ্লাইটেই তিনি আমাদের মাঝে আবার ফিরে আসবেন। সময়টা আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। কারণ সময় নির্ভর করবে বিভিন্ন বিষয়ের উপর। যখনই আমরা নিশ্চিত হবে তখনই গণমাধ্যমের মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌঁছে দেবো।
বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, অত্যন্ত শৃঙ্খলার সঙ্গে রাস্তার দু’ধারে কোন যানজট সৃষ্টি না করে তারা তাদের নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন। আমরা যেটা বলেছি, একহাতে জাতীয় পতাকা এবং আরেক হাতে দলীয় পতাকা নিয়ে আমরা তাকে অভ্যর্থনা জানাবো। এটাই হচ্ছে আমাদের সিদ্ধান্ত।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, নেত্রী ফিরে আসবেন। স্বাভাবিকভাবে আমাদের মধ্যে আবেগ আছে। দেশপ্রেমিক মানুষ আজকে অত্যন্ত উৎসাহিত ও উজ্জীবিত। যে তাদের প্রিয় নেত্রী দেশে ফিরে আসবেন। তাকে অভ্যর্থনা জানানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। শুধু বিএনপি নয়, সারাদেশের মানুষ তাকে সেই অভ্যর্থনা জানাতে প্রস্তুত হয়ে আছে। কিছুক্ষণ আগে আমাদের দলের যৌথসভা করেছি। দুই সিটি, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি এবং অঙ্গ-সংগঠনের নেতৃবৃন্দদের নিয়ে। যাতে আমরা অত্যন্ত শৃঙ্খলার মধ্যে দিয়ে জনগণ যেনো তাকে অভ্যর্থনা জানাতে পারেন, সেই ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করছি। শুক্রবারও প্রশাসন এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গেও বসেছিলাম। আলোচনা করেছি। তিনি (তারেক রহমান) পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আল্লাহ’র অশেষ রহমতে চার মাস লন্ডনে একটি হাসপাতালে দেশনেত্রী চিকিৎসা নিয়েছেন। সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি বাসায় (বিএনপির ভারপ্রাপ্তন চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায়) গিয়ে চিকিৎসা আবার নিয়মিত করেছেন। প্রতিদিন তার অবস্থার উন্নতি হয়েছে। একদিকে ভালো পরিবেশ, বিশেষ করে পারিবারিক পরিবে এবং একইসঙ্গে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে ও উন্নত চিকিৎসার মধ্যে দিয়ে আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি আগের চেয়ে অনেক সুস্থবোধ করছেন। সেই কারণে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তিনি এখন দেশে ফিরে আসবেন।
বিমান বন্দরের টারমাকে বিএনিপ মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত থেকে চেয়ারপারসনকে অভ্যর্থনা জানাবেন। বিমান বন্দর থেকে গাড়িতে করে ৮-নং গেইট দিয়ে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর গুলশানের উদ্দেশ্যে রওনা হবে। বিমান বন্দর মোড় থেকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ পর্যন্ত সড়কের দুইপাশে নেতা-কর্মীরা দাঁড়িয়ে তাদের নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানাবেন।
প্রায় চার মাস লন্ডনে চিকিৎসাধীন থাকার পর রোববার সন্ধ্যায় হিথরো বিমান বন্দর ছাড়ছেন খালেদা জিয়া। বিমান বন্দরে মাকে বিদায় জানাবেন ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। লন্ডন ক্লিনিকে টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তার ছেলে তারেক রহমানের বাসায় লন্ডনের ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
পাঠকের মতামত
শুভকামনা রইল দেশ নেত্রীর জন্য
বেগম জিয়া সহিচালামতে দেশে আসার জন্য আল্লাহ্র সাহায্য কামনা করছি।