শেষের পাতা
মামলা প্রত্যাহার না হলে হেফাজতে ইসলাম যা করার তাই করবে
স্টাফ রিপোর্টার
৪ মে ২০২৫, রবিবার
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হক বলেছেন, আগামী দুই মাসের মধ্যে হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে হেফাজতে ইসলাম যা করার দরকার তাই করবে। শনিবার নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলসহ চার দফা দাবিতে হেফাজত কর্তৃক আয়োজিত মহাসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির আমীর মাওলানা শাহ্ মুহিব্বুল্লাহ্ বাবুনগরী।
মামুনুল হক তার বক্তব্যে বলেন, দ্বিতীয় স্বাধীন বাংলায় দাঁড়িয়ে বলতে চাই রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছি, প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে তা রক্ষা করবো। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিতর্কিত নারীবিষয়ক কমিশন দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। এ অপরাধের বিচার দাবি করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, হেফাজতে ইসলাম নারীর ন্যায্য অধিকারকে সম্মান করে এবং তা আদায়ে ভবিষ্যতেও রাজপথে আন্দোলনে প্রস্তুত আছে। তিনি সংবিধানে আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস বহাল রাখার আহ্বান জানান এবং বহুত্ববাদ পরিত্যাগের দাবি তোলেন। হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের নেতৃবৃন্দ বহুবার ড. মোহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মামলাগুলো প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। কিন্তু মনে হচ্ছে সোজা আঙুলে ঘি উঠবে না। আগামী দুই মাসের মধ্যে মামলা প্রত্যাহার না হলে হেফাজতে ইসলাম ‘যা করার দরকার’ তাই করবে। ড. ইউনূসের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কয়েক মাস আগেও আদালত পাড়ায় ঘুরাঘুরি করেছেন, সে কথা কি আপনি ভুলে গেছেন।
ভূ-রাজনৈতিক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা দিল্লির গোলামির থেকে মুক্ত হয়েছি, এখন পশ্চিমা দাসত্ব মেনে নেবো না। মানবিক করিডরের নামে আমাদের স্বাধীন দেশের মাটি কেড়ে নেয়ার চেষ্টা হলে আমরা প্রতিরোধে গড়ে তুলবো। বাংলাদেশের প্রতি ইঞ্চি মাটি আমাদের জন্য পবিত্র জায়নামাজের মতো।
আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মামুনুল হক বলেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করতে হবে। শেখ হাসিনা যে পথে গেছে, তার অনুসারীরাও সেই পথে যাবে। আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হলে হেফাজত তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।
তিনি শাপলা চত্বরে নিহতদের বিষয়ে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি শাপলা চত্বরে যে সকল লাশ গুম করে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে তাদের পরিচয় প্রকাশ করুন। গুম হওয়া শহীদদের পরিচয় সরকারকে প্রকাশ করতে হবে। মে মাসের মধ্যেই হেফাজতের পক্ষ থেকে প্রত্যেক শহীদের পরিচয় জাতির সামনে তুলে ধরা হবে।
মহাসমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির ঢাকা মহানগরীর সভাপতি জুনায়েদ আল হাবিব, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজী, দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, আলোচিত ইসলামী বক্তা ও জৌনপুরের পীর মুফতি ড. এনায়েত উল্লাহ আব্বাসী, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি’র দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহসহ দেশের শীর্ষ আলেম ও ইসলামী নেতৃবৃন্দ।