খেলা
ক্রীড়া সংগঠক এসোসিয়েশনের আত্মপ্রকাশ
স্পোর্টস রিপোর্টার
৪ মে ২০২৫, রবিবার
দক্ষ সংগঠক তুলে আনতে এবং দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে রাজনীতি মুক্ত রাখতে আত্মপ্রকাশ ঘটলো নতুন একটি সংগঠনের। যার নাম ‘বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক এসোসিয়েশন’। গতকাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অডিটোরিয়ামে ৪৪ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এখানে যেমন আছেন দীর্ঘদিন বঞ্চিত ও ত্যাগী ক্রীড়া সংগঠকরা, তেমনি সুযোগ পেয়েছেন পতিত সরকারের সঙ্গে আঁতাত করা ব্যক্তিরাও।
দীর্ঘদিন ধরে বরিশাল বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন আসাদুজ্জমান খশরু। আওয়ামী ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের সঙ্গেও তার সখ্যতা ছিল বেশ। তিনিও আছেন নতুন আত্মপ্রকাশ ঘটা এই এসোসিয়েশনে। শুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনের মহাসচিব ইফতেখাবুল হামিদ অপুর বিশ্বস্ত শুটার শারমিন আক্তার রত্নাকে রাখা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তবে এর বাইরে ত্যাগী ও নির্যাতিতদের স্থান মিলেছে এখানে। এই সংগঠনের আত্মপ্রকাশকে সাফল্যমণ্ডিত করতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক তারকা ফুটবলার ও বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ (বীর-বিক্রম)। জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র আহ্বায়ক ও বিএনপি’র ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল হকের সভাপতিত্ব এবং সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়া সংগঠক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, ক্রীড়া সংগঠক ও বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ব্রাদার্স ইউনিয়নের আহ্বায়ক ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেজর (অব.) হাফিজ বলেন, ‘আমি আশা করবো, এই সংগঠন দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে অনেক দূর নিয়ে যাবে। খেলাধুলার শ্রীবৃদ্ধি ঘটাবে।’ দেশের ফুটবল ক্লাবগুলোর নাম পরিবারের নামে করা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘বিদেশের প্রত্যেকটি ফুটবল দলের নাম ওই শহরের নামে। যেমন লিভারপুল, বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদের নাম হয়েছে ওই শহরের নামে। অথচ আমাদের দেশে ক্লাবের নাম হয়েছে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেলের নামে। দেশের খেলাধুলা তাহলে কীভাবে এগুবে।’ বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ক্রীড়া সংগঠক আবদুস সালাম বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটের উজ্জ্বল নক্ষত্র তামিম ইকবাল। কিন্তু শুধুমাত্র দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণেই জাতীয় দল থেকে তাকে বাদ দেয়া হয়েছিল। যদিও বিএনপি কখনোই দলীয়করণ করেনি। আমিও ক্রিকেট বোর্ডের কাউন্সিলর ছিলাম। ওই সময় দলীয়করণ করা হয়নি। যার প্রমাণ গাজী গোলাম দস্তগীরও (বীরপ্রতীক) নির্বাচিত হয়ে এসেছিলেন। ফুটবলের কাজী সালাউদ্দিনকে আমরাই নিয়ে আসছিলাম। কিন্তু সে বিদায় নেয়ার পর আজ পর্যন্ত ফুটবলে ফ্যাসিস্টমুক্ত করতে পারেনি।’ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেন, ‘সম্প্রতি জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কমিটি নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। বাদ পড়েছেন
ত্যাগী ও দক্ষ সংগঠকরা। তাই ক্রীড়া সংগঠক এসোসিয়েশনের কর্মকর্তাদের আহ্বান জানাচ্ছি যে, প্রত্যেকটি জেলা ও বিভাগে যে কমিটি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সবাই জেলা প্রশাসকের কাছে যাবেন, যাদেরকে দিয়ে কাজ হবে তাদেরকে নিয়ে কমিটি পাঠাবেন। ক্রীড়াঙ্গনের যেসব জায়গায় দুর্নীতি হয়েছে যারা করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করুন। তাদের বিচার হবে। দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত বাফুফের সাবেক সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনেরও বিচার হবে।’ ব্রাদার্স ইউনিয়নের আহ্বায়ক ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রীড়াকে আপনারা এগিয়ে নিয়ে যাবেন। দেশের যুব সমাজকে মাদকের রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত করবেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের দলগুলোকে ভালো ফল বয়ে আনতে সহায়তা করবেন- এটাই আপনাদের কাছে আমার চাওয়া। বিএনপিকে বাদ দিয়ে মন্ত্রণালয়ে বসে প্রতিনিধি নির্ধারণ করলে তা বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেবে না। দক্ষ সংগঠকদের যেভাবে বাদ দেয়া হয়েছিল, নিপীড়ন করা হয়েছিল তাতে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে প্রভাব পড়েছে। তাই ক্রীড়াঙ্গনকে দলীয়করণ করা হবে না। রাজনীতির প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে হবে। সর্বসম্মত ক্রীড়াঙ্গন নিশ্চিত করতে হবে।’ পরে ক্রীড়া সংগঠক এসোসিয়েশনের ৪৪ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মহিউদ্দিন বুলবুল। মো. শরীফুল আলমকে আহ্বায়ক করে ঘোষণা করা এই কমিটি।