ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

চানখাঁরপুল হত্যাকাণ্ড

৮ পুলিশের বিরুদ্ধে ২৫শে মে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন

স্টাফ রিপোর্টার
২৩ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার
mzamin

জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের সময় গত ৫ই আগস্ট রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় গুলি করে ৬ জনকে হত্যার ঘটনায় সংঘটিত গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের জন্য ৪ সপ্তাহ সময় দেয়া হয়েছে। আগামী ২৫শে মে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের তারিখ ধার্য করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গতকাল এই মামলায় তদন্ত সংস্থার জমা দেয়া তদন্ত প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই শেষে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ হিসেবে দাখিল করতে আরও ৪ সপ্তাহ সময় চান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এরপর ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের ট্র্যাইব্যুনাল সময় আবেদন মঞ্জুর করে। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

শুনানি শেষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, চাঁনখারপুলের ঘটনার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে রোববার চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে জমা দিয়েছে তদন্ত সংস্থা। এখন এই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের জন্য ৪ সপ্তাহ সময় প্রয়োজন। কারণ ওই এলাকার আশেপাশে লোকাল আওয়ামী লীগ, যুবলীগের নেতৃবৃন্দ ছিল। যারা এই গণহত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল, তাদের ব্যাপারেও তদন্ত হচ্ছে। আমরা যদি তদন্তে তাদের সম্পৃক্ততা পাই তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও চার্জশিট দাখিল করা হবে।

তাজুল ইসলাম আরও বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তদন্ত সংস্থা তাদের সম্পৃক্ততা পাচ্ছে। বিশেষ করে বিভিন্ন ভিডিও এভিডেন্সের মাধ্যমে এগুলো পাওয়া যাচ্ছে। পরে এগুলো একত্রে করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। তবে আওয়ামী লীগের এসব নেতৃবৃন্দের ব্যাপারে আলাদাভাবে চার্জশিট দাখিল করা হবে। যেহেতু এই ৬ জনকে হত্যার ঘটনায় কোনো সিভিলিয়ানের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় নাই সুতরাং এই প্রতিবেদনে তাদের নাম আসে নাই। কিন্তু আমরা সিভিলিয়ানের সম্পৃক্ততা পেলে এডিশনাল চার্জশিট কিংবা আলাদাভাবে চার্জশিট দাখিল করতে পারবো।

সোমবার তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় চাঁনখারপুল এলাকায় গুলি করে ৬ জনকে হত্যার ঘটনায় সংঘটিত গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় প্রথম কোনো মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে তা জমা দিলো ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এই মামলায় ৮ জনকে আসামি করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। তারা সবাই পুলিশের সাবেক সদস্য।

ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ মামলার তদন্ত শেষ করতে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সময় লেগেছে ৬ মাস ১৩ দিন। প্রতিবেদনটি ৯০ পৃষ্ঠার। তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে ৭৯ সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিবেদনের সঙ্গে ঘটনার তথ্যপ্রমাণ হিসেবে ১৯টি ভিডিও, ২টি অডিও রেকর্ড, সংবাদপত্রের ১১টি প্রতিবেদন ও ৬ জনের মৃত্যুসনদ দাখিল করা হয়েছে। এ ছাড়া জুলাই গণহত্যা নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান দলের প্রতিবেদনও মূল তদন্ত প্রতিবেদনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এই মামলার ৮ জন আসামি হলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহ্‌ আলম মো. আখতারুল ইসলাম, রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল, শাহবাগ থানার সাবেক পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও মো. নাসিরুল ইসলাম। এই ৮ জন আসামির মধ্যে শেষের ৪ জন এখন কারাগারে আছেন, বাকিরা পলাতক। কারাগারে থাকা ৪ জন আসামিকে গতকাল ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। পলাতক আসামি সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ অন্য আসামিরা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, গণ-অভ্যুত্থানের সময় উল্লিখিত আসামিরা চাঁনখারপুল এলাকায় নিরস্ত্র ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেন। এতে শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদি হাসান জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন।
 

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status