খেলা
‘যেহেতু জিততে পারিনি এই সেঞ্চুরির মূল্য নেই’
স্পোর্টস রিপোর্টার
২২ মার্চ ২০২৫, শনিবার
অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে জয় এনে দেয়ার অভিজ্ঞতা আছে নুরুল হাসান সোহানের। গতকালও এগোচ্ছিলেন সেদিকেই। টানা দুই বলে ছক্কায় পূর্ণ করেন সেঞ্চুরি, তবে করেননি কোনো উদ্যাপন। হয়তো দলকে ম্যাচ জিতিয়েই উদ্যাপন করতে চেয়েছিলেন! কিন্তু এবার আর সেটা হয়নি। সোহান দুর্দান্ত সেঞ্চুরি পেলেও মোহামেডানের বিপক্ষে জিততে পারেনি ধানমণ্ডি স্পোর্টস ক্লাব। আর ম্যাচ শেষে সোহান বলেন,‘জিততে পারিনি। এই সেঞ্চুরির মূল্য নেই।’ ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের (ডিপিএল) ম্যাচে গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মোহামেডানের দেয়া ২১৬ রানের টার্গেটে ১৯৩ রানে থামে ধানমণ্ডির ইনিংস। লড়াইটা মূলত হয় সোহান বনাম মোহামেডান। বলতে গেলে একার লড়াইয়ে জিইয়ে রাখেন ধানমন্ডির জয়ের আশা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারেননি তিনি। সাত ম্যাচে মোহামেডানের এটি পঞ্চম জয়। সমান ম্যাচে ধানমণ্ডির জয় তিনটি।
৯৩ বলে ১০ চার ও ৪ ছক্কায় ১০০ রান করা সোহানের হাতেই ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার। তবে ম্যাচের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ম্লান মুখে বলেন, ‘সবসময়ই বলি, আমার কাছে সবকিছুর ওপরে দল। জিতলে ভালো লাগত। যেহেতু দলকে জেতাতে পারিনি, এই সেঞ্চুরির কোনো মূল্য নেই আমার কাছে। এটা নিয়ে কথা বলারও কিছু নেই।’ রান তাড়ায় শুরুতে ঝড় তোলেন হাবিবুর পঞ্চম ওভারে ড্রেসিং রুমে ফেরার আগে ৩ চার ও ২ ছক্কায় মাত্র ১৬
বলে ৩১ রান করেন তিনি। চমক দিয়ে ওপেনিংয়ে আসা সানজামুল ও তিন নম্বরে নামা ফজলে মাহমুদ রাব্বিও পারেননি কিছু করতে। চার নম্বরে নেমে একপ্রান্ত ধরে রাখেন সোহান। তবে ইয়াসির আলি, মইন খান, জিয়াউর রহমানও হতাশ করলে ৭৯ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারায় তারা। এরপর মাসুম খান টুটুলের সঙ্গে ৩৮ রানের জুটি গড়েন সোহান। ১৮ রান করা মাসুম বিদায় নিলেও লড়াই জারি রাখেন তিনি। ৫৫ বলে ফিফটি করা সোহান সেঞ্চুরি পুর্ণ করেন ৯২ বলে। তার লিস্ট এ ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ও এবারের লিগে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি এটি। সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পরের বলেই আউট হয়ে যান তিনি।
এর আগে রানের জন্য ভুগতে হয় তামিম ইকবাল ও রনি তালুকদারকে। প্রথম ১০ ওভারে কেবল ৩১ রান জমা হয় স্কোরবোর্ডে। ৫৩ বল খেলে ২৬ রান করা তামিম আউট হন আগে। রনির ব্যাট থেকে আসে ৬৪ বলে ৩৯ রান। তিন নম্বরে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ৪৪ রান করতে খেলেন ৭৭ বল। এদিনও হতাশ করেন মুশফিকুর রহিম। স্লগ সুইপ খেলে আউট হওয়ার আগে করেন ৬ রান। ছয় নম্বরে নেমে ৫ চারে ৪৭ বলে ৫৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তাওহীদ হৃদয়। আর মেহেদী হাসান মিরাজ ২৪ বলে ২৬ ও আবু হায়দারের ১৩ বলে ১৮ রানের সৌজন্যে দুইশ পেরোয় মোহামেডান।
মুমিনুলের বোলিং চমক, শীর্ষস্থান ধরে রাখলো আবাহনী
তার কাজ মূলত ব্যাট হাতে, বোলিংয়ে আসেন মাঝেসাঝে! সেই মুমিনুল গতকাল বোলিং দিয়ে আবাহনীকে জেতালেন, হলেন ম্যাচসেরা। ব্যাট হাতেও অবশ্য ছোট্ট একটি কার্যকর ইনিংস খেলেছেন। বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে গতকাল উইকেট ভেজা থাকায় প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর শুরু হয় খেলা। এতে ৩৬ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে ২ উইকেটে হারায় আবাহনী। ২০০ রানের লক্ষ্য ৬ বল বাকি থাকতে ছুঁয়ে ফেলে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। সাত ম্যাচে ছয় জয় নিয়ে শীর্ষস্থান আরও পোক্ত করল আবাহনী। হার দিয়ে যাত্রা শুরুর পর টানা পাঁচ ম্যাচ জিতেছিল গাজী গ্রুপ। তাদের এটি দ্বিতীয় পরাজয়। ৬.১ ওভারে ৩৮ রানে ৪ উইকেট নেন মুমিনুল। স্বীকৃত ক্রিকেটে ৪৫৮ ম্যাচের ক্যারিয়ারে প্রথমবার পেলেন চার উইকেটের স্বাদ। রান তাড়ায় প্রথম দুই ওভারে দুই ওপেনারের উইকেট হারায় আবাহনী। এরপর তৃতীয় উইকেটে ১৩১ রানের জুটি গড়ে তোলেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মোহাম্মদ মিঠুন। একই ওভারে দুজনে বিদায়ে নেন। শান্ত ৬৩ বলে ৪৩ ও মিঠুন ৭৭ বলে ৭৬ রান করে ফেরেন। ২৫ বলে ২৪ রান করেন মুমিনুল।