ভারত
বিদ্যালয়ে ফিরুক 'বেত' সংস্কৃতি, পর্যবেক্ষণ কেরালা হাইকোর্টের
মানবজমিন ডিজিটাল
(১ মাস আগে) ১৬ মার্চ ২০২৫, রবিবার, ৫:০৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৬ পূর্বাহ্ন

সমাজ যত আধুনিক হচ্ছে ততই উশৃঙ্খল হয়ে পড়ছে বিদ্যার্থীরা। শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রছাত্রীদের বেপরোয়া মনোভাব রুখতে এবার বিদ্যালয়ে ফিরুক বেতের লাঠি। এমনটাই পর্যবেক্ষণ ভারতের কেরালা হাইকোর্টের। তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের ভালো পড়াশোনা শেখানোর পাশাপাশি তাদের সবক শেখাতে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের হাতে ফের বেতের লাঠি ফিরিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন বলেই মনে করেন হাইকোর্টের বিচারপতি পিভি কুন্নিকৃষ্ণন।
বিচারপতি বলেন, ‘বর্তমানে বিদ্যার্থীদের মধ্যে বাড়ছে অপরাধ প্রবণতা। এমন একটা সময়ের মধ্যে দিয়ে আমরা সবাই যাচ্ছি যেখানে শিক্ষকদের যোগ্য সম্মান দেওয়া হচ্ছে না। বরং এখনকার দিনের ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষকের ওপর চড়াও হতে দুবার ভাবেন না। শুধু তাই নয়, আইনি জটিলতার ভয়ে শিক্ষকরাও বেত নিয়ে স্কুল যাওয়া থেকে বিমুখ হচ্ছেন’। কেরালা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, কিছু কিছু অবাধ্য-বেপরোয়া বিদ্যার্থীদের জন্য শিক্ষকরা নিজেদের কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করতে পারছেন না।
আদালত জানিয়েছে, শিক্ষকেরা চাইলে তাঁদের বেত নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারেন। ছাত্রদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা ভেবে নিয়ম করে শিক্ষকদের হাত থেকে বেতের লাঠি কেড়ে নেওয়া হয়েছে বহুদিন আগেই। যদিও অনেকেই মনে করেন, এর ফলে সুফলের থেকে কুফলই বেশি দেখা যাচ্ছে। আদালত মনে করে, ‘বেত হাতে থাকা মানেই শিক্ষকরা সেটা ব্যবহার করবেন, তেমন নয়। শুধু সঙ্গে থাকলেই অনেক সময় কাজ হতে পারে।’
বিচারপতি পিভি কুন্নিকৃষ্ণন রাজ্যের পুলিশ প্রধানকে এই বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করতে বলেছেন এবং যোগ করেছেন যে, যেভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিতরে অস্ত্র, মাদক ও অ্যালকোহল গ্রহণের সংবাদ সামনে আসছে সেখানে এই ধরনের কড়া নির্দেশনা প্রয়োজন। আদালত বলেছে যে এই ব্যবস্থা শুধুমাত্র শিক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য এবং ছাত্রদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য, যারা জাতির ভবিষ্যত। কোনও শিক্ষক যদি একজন ছাত্রকে উপদেশ দিতে যান বা খারাপ আচরণের জন্য ছোটখাটো শাস্তি দিয়ে থাকেন তাহলে তাকে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলা উচিত নয়।
সম্প্রতি কেরালার এক স্কুলের শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রকে বেত্রাঘাতের অভিযোগ উঠেছিল। যা নিয়ে ফৌজদারি মামলা দায়ের করেন ওই ছাত্রের অভিভাবকরা। মামলা গড়ায় হাইকোর্ট পর্যন্ত। বিচারপতি পিভি কুন্নিকৃষ্ণন ওই শিক্ষককে জামিন দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই ধরনের অভিযোগ উঠলে আগে পুলিশের অনুসন্ধান করে দেখা উচিত। আদালত বলেছে, শিক্ষকরা আমাদের সমাজের নায়ক। তারা আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের মন, হৃদয় এবং আত্মাকে গঠন করে। শিক্ষক সমাজের মনোবল খর্ব করার কোনো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত নয় কারণ তারা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মেরুদণ্ড।
সূত্র : দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
পাঠকের মতামত
কথা সত্য - মাইরের উপর ঔষুধ নাই