বাংলারজমিন
সাপাহারে মালটা চাষে অপার সম্ভাবনা
মনিরুল ইসলাম, সাপাহার (নওগাঁ) থেকে
৭ আগস্ট ২০২২, রবিবার
ঠাঁ ঠাঁ বরেন্দ্র অঞ্চল খ্যাত নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া অন্যান্য এলাকার চেয়ে অনেকটাই অনুকূল। যার ফলে প্রায় সব ধরণের ফসল উৎপাদন হয় এই উপজেলায়। এই অঞ্চলে কৃষিখাতে নতুন সম্ভাবনা এনেছে লেবুজাতীয় ফল মালটা। এই এলাকার মাটি ও আবহাওয়া ভালো থাকার কারণে মালটা চাষের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। যার ফলে প্রান্তিক কৃষকেরা অনেকটাই ঝুঁকছেন মালটা চাষে। এই অঞ্চলে অন্যান্য ফসলের ন্যায় মাল্টা চাষ একটি অনুকূলতা এনেছে। তবে বাণিজ্যিক ভাবে মালটা ক্রয়-বিক্রয়ের সুবিধা না থাকায় এই ফল চাষে অনেকটা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ছেন কৃষকেরা। মালটা উৎপাদনের পর নিজ দায়িত্বে ভ্যানে বা কোনো নির্দিষ্ট জায়গায় বসে মালটা বিক্রি করতে হয় বলে জানান চাষিরা
গত বছরে পরীক্ষামূলক ভাবে মালটা চাষ করে অনেকটাই লাভবান হয়েছিলেন মালটা চাষিরা। যার ফলে এই বছরে মালটা চাষ অনেকটা বেড়েছে। আমের পাশাপাশি মালটা ফলও একটি অংশ দখল করেছে।
মালটাচাষি মাহফিজুর রহমান বলেন, “আমি পরীক্ষামূলকভাবে ৩শ’টি মালটা গাছ লাগিয়েছিলাম। বর্তমানে প্রতিটি গাছ প্রাপ্ত বয়স্ক হয়েছে। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। আমার বাগানে দুই জাতের মালটা চাষ করছি। বারি-১ ও বারি-৩ জাতের মাল্টা আমার বাগানে রয়েছে। তবে ফলনের দিক থেকে বারি-১ জাতের মালটা অনেকটা অনুকূল। এই অঞ্চলের মাটি কড়া প্রকৃতির হওয়ায় মালটা বেশ মিষ্টি হয়। কিন্তু বিক্রয়ের সময় একটু কষ্ট হয়।” তিনি দাবি করেন, “বাণিজ্যিকভাবে মালটা চাষ করার পর বিক্রয়ের সুবিধা না পেলে চাষিরা আগ্রহ হারাবে। এজন্য স্থানীয় ফলব্যবসায়ীরা যদি মালটা পাইকারি ক্রয় করতেন তাহলে আমাদের মতো প্রান্তিক চাষিদের জন্য অনেক সুবিধা হতো।”
অনেক মালটাচাষি বলছেন, আমের মৌসুমে যেমন বাইরে থেকে ব্যাপারীগণ আসেন ঠিক তেমনি ভাবে যদি মালটা ক্রয়ের জন্য বাইরে থেকে ব্যাপারীরা আসতেন সেক্ষেত্রে আমরা আরও বেশি লাভবান হতে পারতাম। এদিকে ফল আড়তদার ফরিদুল ইসলাম বলেন, বর্তমান বাজারে আম শেষের পথে প্রায়। আম শেষ হলে মালটা, বরই, পেয়ারাসহ সব ধরনের ফল পাইকারি কেনার ইচ্ছা আছে। যাতে করে কৃষকেরা সহজেই তাদের উৎপাদিত ফল বিক্রয় করতে পারেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত বছরে এই উপজেলায় লেবুজাতীয় ফলের চাষ হয়েছে ৯৭ হেক্টর জমিতে। তার মধ্যে মালটা চাষ হয়েছে ৮০ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০/১২ মেট্রিক টন। চলতি বছরে প্রায় ১শ’ হেক্টর জমি ছাড়িয়ে গেছে মালটা চাষে। এছাড়াও মালটাচাষিদের উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে সার্বিকভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলেনÑ কৃষি কর্মকর্তা শাপলা খাতুন।
এই উপজেলায় যদি বাণিজ্যিকভাবে মালটা বাজারজাতকরণের সুবিধা আরও বিস্তৃত করা হয় তাহলে এই অঞ্চলে আমের পাশাপাশি মালটা চাষ ব্যাপকভাবে বাড়বে বলে ধারণা করছেন এলাকার মালটাচাষিরা।
মন্তব্য করুন
বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন
বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]