বাংলারজমিন
আউশের বাম্পার ফলন
মহাদেবপুরে ১৩ হাজার ১শ’ হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষ
এম. সাখাওয়াত হোসেন, মহাদেবপুর (নওগাঁ) থেকে
৭ আগস্ট ২০২২, রবিবার
উত্তর অঞ্চলের খাদ্য ভাণ্ডার খ্যাত নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় চলতি রোপা আউশ মৌসুমে ১৩ হাজার ১শ’ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের চাষ করা হয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমে ধানের উচ্চমূল্য পাওয়ায় আউশ ধান চাষে ঝুঁকেছে এ উপজেলার কৃষকরা। এ ধান চাষ করে কৃষকরা একই জমিতে বছরে তিনটি ফসল উৎপাদন করছে। কৃষি বিভাগের ব্যাপক তৎপরতা এবং কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে প্রণোদনার সার, বীজ প্রদান করায় কৃষিক্ষেত্রে এ পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ১৩ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের চাষ করা হয়েছে। আউশ ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে এ উপজেলা ২১শ’ জন কৃষককে ইতিমধ্যে আউশ প্রণোদনা হিসেবে প্রত্যেক কৃষককে ৫ কেজি ধান বীজ, ২০ কেজি ডিএপি, ১০ কেজি এমওপি সার প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া ৩৫ জন কৃষককে আউশ ধানের প্রদর্শনী দেয়া হয়েছে। ধানের বীজতলা থেকে ধানকাটা পর্যন্ত মাত্র ১শ’ থেকে ১১০ দিন সময় লাগে আউশ ধান চাষে। পানি সেচ দেয়ার তেমন একটা দরকার হয় না বলে আউশ ধান আবাদে উৎপাদন খরচ কম। সেই সঙ্গে কিটনাশক ও সার প্রয়োগ অন্যান্য ধান থেকে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ কম হয়। এ উপজেলায় উৎপাদিত ধান-চাল মহাদেবপুরের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলার খাদ্য চাহিদা পূরণে সহযোগিতা করে। সরজমিন এ উপজেলার সুজাইল, গোষাইপুর, হাসানপুর, চকরাজা, দাশড়া, সরস্বতীপুর, শ্যামপুর, খোর্দ্দনারায়ণপুর, বাগধানা, নলবলো, ধনজইল চৌমাশিয়া ও রাইগাঁসহ বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা গেছে আউশ ধানের শীষ বাতাসে দোল খাচ্ছে। উপজেলার সুজাইল গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম, নাটশাল গ্রমের জাহেদুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, ইরি ধানের দাম ভালো পাওয়ায় অধিক জমিতে আউশ ধান রোপণ করেছেন। এখন আউশ ধান চাষের শেষ মুহূর্তের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তারা। এবার বোরো ধানের ভালো দাম পেয়ে আউশ ধান উৎপাদনে কৃষকের উৎসাহ উদ্দীপনা আরও বেড়েছে। এ উপজেলার কৃষকরা চলতি আউশ মৌসুমে বিপুল পরিমাণ জমিতে আউশ ধান চাষ করেছেন। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় জানান, চলতি আউশ মৌসুমে শুধুমাত্র মহাদেবপুর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ১৩ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের চাষ করা হয়েছে। ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ উপজেলায় চাষ যোগ্য সকল জমিতে ফসল উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না দেখা দিলে আউশ ধানের বাম্পার ফলনের আশা প্রকাশ করছেন তিনি।