অনলাইন
পারকিনসন্সের চিকিৎসায় 'ব্রেনসেন্স' প্রযুক্তি ব্যবহার করে যুগান্তকারী সাড়া
মানবজমিন ডিজিটাল
(৩ সপ্তাহ আগে) ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১২:১৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:১৪ অপরাহ্ন

আকবর হোসেন
পারকিনসন্স রোগের চিকিৎসায় ব্রেন ইমপ্লান্টের পদ্ধতিকে ডিপ ব্রেন স্টিমুলেশন (DBS) বলা হয়। এটি একটি নিউরোসার্জিক্যাল পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অংশে ইলেক্ট্রোড ইমপ্লান্ট করা হয়। এই ইলেক্ট্রোডের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক সংকেত পাঠানো হয়, যা মস্তিষ্কের কার্যকলাপ পরিবর্তন করে।
পারকিনসন্সে আক্রান্ত যুক্তরাজ্যের উত্তর-পূর্বের লোকেরা ব্রেন ইমপ্লান্টের চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিশ্বের মধ্যে প্রথম। সান্ডারল্যান্ডের কেভিন হিলের মতো রোগী, যিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত এইচজিভি ড্রাইভার ২০১৭ সাল থেকে পারকিনসন্সে আক্রান্ত। ইতিমধ্যেই তার মস্তিষ্কে ইমপ্লান্ট এবং বুকে একটি ছোট কম্পিউটারের মাধ্যমে পরিচালিত ‘গভীর মস্তিষ্কের উদ্দীপনা’ প্রযুক্তি থেকে উপকৃত হয়েছেন। ব্রেনসেন্স নামে পরিচিত এই প্রযুক্তিটি রোগীর লক্ষণগুলো পরিচালনা করতে বৈদ্যুতিক বার্তা প্রেরণ করে।
ব্রেনসেন্স প্রযুক্তিটি কেভিনের ইমপ্লান্টের উপর ভিত্তি করে কাজ করবে । রোগীকে তাদের প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের সাথে সাথে সামঞ্জস্য করার জন্য আর হাসপাতালে ফিরে যেতে হবে না।
ক্রনিকেল লাইভ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, কেভিন জানাচ্ছেন- ইমপ্লান্টের আগে আমি শরীরে কম্পন অনুভব করতাম। যা আমার ঘুমকে প্রভাবিত করেছিল এবং আমার কাঁধ, হাত ও পায়ে ভয়ানক ব্যথা হতো। এটি আমাকে মানসিকভাবেও প্রভাবিত করেছিল। আমি সত্যিই আত্মসচেতন হয়ে উঠেছিলাম এবং অন্য লোকদের সঙ্গে দেখা করতে চাইতাম না।
কেভিনের কথায়, ‘ আমি যে ওষুধ খাচ্ছিলাম তা কাজ করছিল না এবং আমাকে আমার চাকরিও ছেড়ে দিতে হয়েছিল। যখন আমাকে ডিপ ব্রেন স্টিমুলেশন রেফার করা হয়েছিল, তখন আমাকে বলা হয় এটি প্রভাব ফেলতে কিছুটা সময় নিতে পারে। কিন্তু ব্রেনসেন্স প্রযুক্তিটি আমার শরীরে দুর্দান্ত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল। এটি আমার জীবনকে বদলে দিয়েছে এবং আমার কাঁপুনি, ব্যথা ও বেদনাকে সম্পূর্ণরূপে সারিয়ে দিয়েছে। আমি আমার জয়েন্টগুলোতে আরও নমনীয়তা দেখতে পেয়েছি এবং আমার ঘুমের সমস্যা অনেকটা কমেছে । আমি আবার জীবনকে উপভোগ করছি, স্নুকার খেলছি এবং বাইকে উঠছি।‘
কনসালট্যান্ট নিউরোসার্জন আকবর হোসেনের প্রযুক্তির প্রতি অনুরাগ নিউক্যাসল হাসপাতালকে এই অসাধ্য সাধন করতে সাহায্য করেছে। তিনি বলেন, ‘পারকিনসন্স রোগের প্রতিটি ব্যক্তির অভিজ্ঞতা তাদের কাছে আলাদা এবং অনন্য। রোগের অগ্রগতির সাথে সাথে লক্ষণগুলো পরিবর্তিত হয়, তবে সেগুলো একদিনের মধ্যেও পরিবর্তিত হতে পারে। নিউক্যাসল ছিল যুক্তরাজ্যের প্রথম হাসপাতাল যেখানে ব্রেনসেন্স প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে । এই সিস্টেমটি ব্যবহার করে আমরা রোগীদের উন্নত জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারি ।‘
ডাক্তার আকবর হোসেন জানাচ্ছেন যে, ব্রেনসেন্স প্রযুক্তির স্বয়ংক্রিয়তা ‘আশ্চর্যজনক’ ছিল। ডিভাইস দ্বারা মস্তিষ্কে প্রদত্ত বৈদ্যুতিক আবেগগুলো রোগীদের বুকে থাকা ডিভাইস থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত এবং সমন্বয় করা যায়। ব্যক্তির মধ্যে উৎপন্ন জৈবিক সংকেত ইমপ্লান্ট দ্বারা প্রদত্ত চিকিত্সা পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে কার্যকারিতা দেখিয়েছে । এই পরিবর্তনগুলো মিনিট বা ঘণ্টার মধ্যে ঘটতে পারে। যার অর্থ নতুন এই চিকিত্সা পদ্ধতি প্রতিটি ব্যক্তির সঠিক প্রয়োজনের জন্য সত্যিই প্রতিক্রিয়াশীল। আমি সত্যিই উত্তেজিত এবং গর্বিত যে, আমরা আমাদের রোগীদের এই পরিষেবা অফার করতে পেরেছি।'
ব্রেনসেন্স প্রযুক্তিটি তৈরি করেছে স্বাস্থ্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মেডট্রনিক। সেখানকার ভাইস-প্রেসিডেন্ট আমাজা রেইটমেয়ার বলেছেন যে, ‘নতুন প্রযুক্তির অর্থ পারকিনসন্সের রোগীদের তাদের শারীরিক সমস্যা নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না।' যুক্তরাজ্যে প্রায় ১ লাখ ৫৩ হাজার মানুষ মানুষ পারকিনসন্স রোগে আক্রান্ত।
উল্লেখ্য যে, নিউরোসার্জন আকবর হোসেনের বাড়ি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে। তিনি বিলেত প্রবাসী মাহতাব মিয়ার জামাতা। ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. নাজিবাহর স্বামী।
পাঠকের মতামত
বাংলাদেশে কিভাবে এই ধরনের চিকিৎসা করা সম্ভব? আমার দুজন নিকট আত্মীয় আছেন যারা খুবই সমস্যায় ভুগছেন.। ০১৭২৩৯৩৩৩৭৫
My wife has been suffering from cervical dystonia for 3 years. I tried medicine and Botox injections. It did not work well. Currently, she is undergoing treatment with medicine. Will Dr. Akbar Saheb come to Bangladesh? If he ever comes to Bangladesh, I want to get my wife treated by him. My contact number is 8801717347402, Uttara, Dhaka-1230.