অনলাইন
জুলাই হত্যাকাণ্ডে পলাতকদের ফিরিয়ে আনা হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল
স্টাফ রিপোর্টার
(৮ মাস আগে) ১২ অক্টোবর ২০২৪, শনিবার, ৬:৪৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:৩১ অপরাহ্ন

জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত যারা পালিয়ে গেছে তাদের ফিরিয়ে আনতে আদালতের মাধ্যমে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো: আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, তারা ফিরে এসে বিচারের মুখোমুখি না হলে নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শনিবার রাজধানীর এফডিসিতে জুলাই হত্যাকাণ্ডের দায় নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার লক্ষ্যে একটি নির্দিষ্ট সিভিলিয়ান গোষ্ঠীর মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে যে হত্যা ঘটানো হয়েছে তা মানবতা বিরোধী অপরাধ আইন ১৯৭৩ এর মাধ্যমে বিচার করা হবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ট্রাইবুনাল পুনর্গঠন করা হবে এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিতে বিচার প্রক্রিয়ার ট্রায়াল টেলিভিশনে দেখানোর ব্যাপারে আইনগত দিক পর্যালোচনা করা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই জুলাই হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্তদের মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার শুরু হবে। যারা বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করেছিল তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে দেশে কার্যত এক ব্যক্তির শাসন কায়েম হয়েছিল। জাতীয় সংসদেও একক কর্তৃত্ববাদে পরিচালিত হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংক্রান্ত রায় পরিবর্তনের মাধ্যমে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক অপরাধ করেছে। যে অপরাধের সুবিধা নিয়েছে আওয়ামী লীগ। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, যা নিয়ে তদন্ত চলছে। জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত যারা পালিয়ে গেছে তাদের ফিরিয়ে আনতে আদালতের মাধ্যমে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। তারা ফিরে এসে বিচারের মুখোমুখি না হলে নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
অ্যাডভোকেট মো: আসাদুজ্জামান বলেন, শেখ হাসিনা এত মিথ্যা বলেছেন, এমনভাবে বলেছেন, এমন কৌশল করে বলেছেন, তিনি নিজেই বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন যে, তিনি যা বলেন সেটাই সত্য, সেটাই বেদবাক্য। শেখ হাসিনা মিথ্যা বলতে বলতে মিথ্যাকে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছে। তার মিথ্যাচার গোয়েবলসকেও হার মানিয়েছে। গোয়েবলস বেঁচে থাকলে তিনি হয়তো শেখ হাসিনার ছাত্র হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করতেন।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জুলাই-আগস্টের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নিরস্ত্র ছাত্র জনতার উপর গুলি চালিয়ে নজিরবিহীন হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশে ইতিহাসে বড় কালো দাগ হয়ে থাকবে। পাঠ্যপুস্তকে রচিত হবে জুলাই বিপ্লবের এসব শহীদদের শোক গাঁথা। ফ্যাসিবাদের মুখপাত্র হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগসহ তাদের জোটভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে এ হত্যাকাণ্ডের জন্য প্রধানত দায়ী। তবে নির্বাচন কমিশন, র্যাব, পুলিশ, বিজিবিসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন বাহিনীর জনবিরোধী অবস্থানের কারণে জুলাই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপকতা বেড়েছে। তাই জুলাই হত্যাকাণ্ডের দায় শেখ হাসিনাসহ দলীয় স্বৈরতন্ত্রের পাশাপাশি প্রশাসনিক স্বৈরতন্ত্র সমানভাবে দায়ী। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার প্রশাসনের বেশিরভাগ ব্যক্তিরাই এ হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে পারে না। জুলাই হত্যাকাণ্ডে দায়ীদের উপযুক্ত বিচারের লক্ষ্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান ১০ দফা সুপারিশও করেন।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে “জুলাই হত্যাকাণ্ডে দলীয় স্বৈরতন্ত্র অপেক্ষা প্রশাসনিক স্বৈরতন্ত্রই বেশি দায়ী” শীর্ষক ছায়া সংসদে ঢাকা কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে ইষ্টার্ন ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন ড. এস এম মোর্শেদ, ড. এ কে এম মাজহারুল ইসলাম, সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মিশন, সাংবাদিক মো. সাইদুল ইসলাম ও কবি জাহানারা পারভিন। প্রতিযোগিতা শেষে চ্যাম্পিয়ন দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।